বাংলা নিউজলেটার

গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম নেটওয়ার্ক (জিআইজেএন) প্রতি মাসে বাংলায় নিউজলেটার প্রকাশ করছে। বাংলাভাষী সংবাদকর্মী ও শিক্ষার্থীদের কাছে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার নতুন ধ্যান-ধারণা, কলাকৌশল এবং নানা রকম সুযোগের খবরাখবর পৌঁছে দেবে এই বুলেটিন।

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা কী, সেরা হ্যান্ডবুক কোনগুলো, অনলাইন টুলের ব্যবহার, জাহাজ বা বিমান ট্র্যাকিং, স্যাটেলাইট ছবির সূত্র, ফ্যাক্টচেকিংয়ের পদ্ধতি—বাংলায় এমন অসাধারণ সব অনুসন্ধানী রিসোর্সের সন্ধান পেতে ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট। প্রতিদিন আপডেট থাকতে ফলো করুন ফেসবুক ও টুইটারে। আর আমাদের বুলেটিন নিয়মিত আপনার ইমেইলে পেতে অবশ্যই সাবস্ক্রাইব করুন জিআইজেএন বাংলা নিউজলেটার! নিচেই রয়েছে আমাদের বাংলা বুলেটিনের সব সংস্করণ:

সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২৩: অ্যালগরিদমের প্রভাব ও ডিজিটাল হুমকি অনুসন্ধান

আগস্ট ০১, ২০২৩: খনি-দূষণ, গেমিফিকেশন ও বাজফিড নিউজের উত্থান-পতন

জুলাই ০৪, ২০২৩: বিদেশে সম্পত্তি, বর্জ্যের গন্তব্য ও ক্রিপ্টোকারেন্সির খোঁজ

জুন ১২, ২০২৩: ডিজিটাল অবকাঠামো অনুসন্ধান ও স্যাটেলাইট ছবির ফরেনসিক ব্যবহার

মে ০২, ২০২৩: অপতথ্য অনুসন্ধান ও শিশুশ্রম উন্মোচন

এপ্রিল ০৪, ২০২৩: অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ভবিষ্যৎ ও অন্যান্য

মার্চ ০৭, ২০২৩: বানোয়াট প্রমাণ, মিথ্যার নৈতিকতা ও সেরা পডকাস্ট

ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২৩: অস্ত্রপাচার, স্লটারগেট ও সেরা ডেটা সাংবাদিকতা

জানুয়ারি ১০, ২০২৩: ২০২২ ফিরে দেখা ও জিআইজেসির আদ্যোপান্ত

ডিসেম্বর ০৬, ২০২২: ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, ডিজিটাল ফরেনসিক ও বিনোদ যোশি

নভেম্বর ০৭, ২০২২: সেরা তথ্যচিত্র, গবেষণায় চুরি ও মানসিক চাপ

অক্টোবর ১০, ২০২২: সেরা তথ্যচিত্র, প্রিয় টুল ও সুইডেন সম্মেলন

সেপ্টেম্বর ০৬, ২০২২: কলমে বিপ্লব, ছদ্মবেশ সাংবাদিকতা ও মার্কিন প্রভাব অনুসন্ধান

আগস্ট ০২, ২০২২: ভালো লেখা, গুগল বশ ও সামরিক ভুল

জুলাই ০৬, ২০২২: অলিগার্কদের ঘোড়া, মুরল্যান্ড আগুন ও অবৈধ খনি 

জুন ০৭, ২০২২: ক্রিপ্টোকারেন্সি, ডিজিটাল ফরেনসিক ও সোর্স সুরক্ষা

মে ০৫, ২০২২: মাদক পাচার অনুসন্ধান, সেলফি প্রচারণা ও অস্কারের সেরা

এপ্রিল ০৫, ২০২২: অনুসন্ধানী বই, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধ অনুসন্ধান

মার্চ ০৮, ২০২২: মিথেনের উৎস, অলিম্পিক ও মুদ্রাপাচার অনুসন্ধান

ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২২: বার্বি, মাফিয়া রাষ্ট্র ও সেরা অনুসন্ধান

জানুয়ারি ১০, ২০২২: গত বছরের সেরা ও মুরাতভের বার্তা

ডিসেম্বর ০৭, ২০২১: জিআইজেসি কড়চা, সস্তায় ভিডিও ইউনিট ও নতুন গাইড

অক্টোবর ০৫, ২০২১: মামলার ঝুঁকি, ভুয়া ছবি ও বৈষম্য অনুসন্ধান

সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২১: মিডিয়া দখল, পেগাসাস ও এক ডজন টুল 

আগস্ট ০৩, ২০২১: ফেলোশিপ, মোজো মাইক ও মানব পাচার অনুসন্ধান

জুলাই ০৬, ২০২১: অপরাধীদের অর্থ পাচার, ভূগোলের ডিপফেইক ও পরামর্শ সেবা

জুন ০১, ২০২১: অনলাইনে হয়রানি, বাড়িতে তল্লাশি ও গোয়েন্দা নজরদারি

মে ০৪, ২০২১: ডেটার কালোবাজার, ডিজিটাল রূপান্তর ও পাঠক বাড়ানোর উপায়

এপ্রিল ০৬, ২০২১: ডিজিটাল সম্মেলন, নতুন সদস্য ও সহজে মোজো

মার্চ ০২, ২০২১: গোপন প্রাসাদ, ফোনে নজরদারি ও ভিজ্যুয়াল থিংকিং

ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২১: ইউএস ক্যাপিটলের দাঙ্গা এবং ওপেন সোর্স অনুসন্ধান

জানুয়ারি ১২, ২০২১: ফিরে দেখা ২০২০: সেরা স্টোরি, টুল ও রিসোর্স

ডিসেম্বর ১০, ২০২০: সাংবাদিকতার অধঃপতন, কর্তৃত্ববাদী শাসন ও অনুসন্ধানী কমিকস

নভেম্বর ৩, ২০২০: পালমে হত্যা রহস্য ও গুম হওয়াদের পদচিহ্ন

অক্টোবর ৬, ২০২০: মার্কিন নির্বাচন, অন্য বিশ্বের অভিবাসী ও ডিজিটাল হুইসেলব্লোয়িং

সেপ্টেম্বর ১, ২০২০: আগস্টের সেরা, ছবিতে কোভিড ও বিশ্বব্যাংকের নথি

আগস্ট ১২, ২০২০: অখ্যাতের পুলিৎজার ও ছবির ব্যবচ্ছেদ

জুলাই ৭, ২০২০: বিশ্ব সম্মেলন, মুক্ত সাংবাদিকতা ও কোভিডের কেনাকাটা

জুন ২, ২০২০: করোনায় টিকে থাকা ও ঘরে বসে অনুসন্ধান

মে ৫, ২০২০: অনন্য অনুসন্ধানী ও কয়েকটি করোনা পাঠ্য

এপ্রিল ৪, ২০২০: করোনাভাইরাসের সময়ে সাংবাদিকতা

মার্চ ৪, ২০২০: শাসকের বিলাস, ইয়েমেন যুদ্ধ ও দারুণ শুরু

ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২০: বসের সঙ্গে মানিয়ে চলা, ভাষার বিড়ম্বনা ও গুপ্তকবর

জানুয়ারি ৮, ২০২০: সেরা অনুসন্ধান, প্রিয় টুল ও সাংবাদিকতার নির্ভয়া

ডিসেম্বর ৪, ২০১৯: নাগরিক সাংবাদিক, টিকে থাকার কৌশল ও নির্বাসনে অনুসন্ধান

নভেম্বর ৫, ২০১৯: দেজোর্মোর পাঠশালা, খনি নিয়ে খোঁজ ও ভুয়া তথ্যের নেটওয়ার্ক

অক্টোবর ১০, ২০১৯: সত্যের লড়াই, রেকর্ড গড়া সম্মেলন ও সোনার হরিণ 

সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৯:  অভূতপূর্ব সাড়া, ছদ্মবেশ সাংবাদিকতা, ফলো দ্য মানি

আগস্ট ১, ২০১৯: বাংলা নিউজলেটারের যাত্রা, শাইনিং লাইট, মোবাইল স্টোরিটেলিং

ডিজিটাল নিরাপত্তা: সাংবাদিকদের যা যা জানা দরকার

English

ডিজিটাল স্পেসে সাংবাদিকদের জন্য হুমকি ক্রমেই বাড়ছে। একারণে অনলাইনে যোগাযোগ এবং তথ্য রক্ষায় তাদের বিশেষভাবে সতর্ক হওয়া দরকার।

কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, বিপদের গভীরতা জেনেও সাংবাদিকরা কোনো ধরনের মৌলিক সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না।

“ছোট একটি পদক্ষেপ আনতে পারে বিরাট পরিবর্তন” শ্লোগানে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য একটি ডিজিটাল নিরাপত্তা গাইড প্রকাশ করেছে ররি পেক ফাউন্ডেশন। এই নির্দেশিকা তৈরির সময় বিষয়-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সাহায্য করেছে জিআইজেএন।

পিডিএন পালসের একটি সাক্ষাৎকারে ফ্রিডম অব দ্য প্রেস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ট্রিভোর টিম বলেন, “কেউ কখনো বলতে পারবেন না, তিনি শতভাগ নিরাপদ। কিন্তু কিছু মৌলিক পদ্ধতি অনুসরণ করে. যে কেউ ইন্টারনেটের ৯০ থেকে ৯৫  শতাংশ ব্যবহারকারীর তুলনায় নিজেকে আরো নিরাপদে রাখতে পারেন। এই নিরাপত্তা অনেক দিন পর্যন্ত কার্যকর থাকে ।”

কানাডা ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সিটিজেন ল্যাবের ডিজিটাল নিরাপত্তা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ রবার্ট গুয়েরার সংক্ষিপ্ত সুপারিশ দিয়ে শুরু করছি। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, বেশির ভাগ সাংবাদিক ইন্টারনেট নিরাপত্তার জন্য ন্যূনতম সতর্কতামূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করেন না।

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এনজিও কর্মী এবং সাংবাদিকদের “নিরাপদ যোগাযোগ এবং তথ্য ‍সুরক্ষার” উপর প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন গুয়েরা। তাঁর মতে, অনুসন্ধানী সাংবাদিক হিসাবে পরিচিতি পেলে, অনেকেই ডিজিটাল টুল ব্যবহার করে আপনার ব্যক্তিগত এবং অনুসন্ধানী রিপোর্টের তথ্য চুরির চেষ্টা করবে। তিনি বলেন, “প্রথমে ঝুঁকি সম্পর্কে জানুন, তারপর কায়দা-কানুনগুলো শিখুন।  এমন কিছু সহজ পদ্ধতি আছে, যা চাইলেই যে কেউ অনুসরণ করতে পারেন।”

গুয়েরার সুপারিশ:

ই-মেইল

যেসব দেশে সাংবাদিকদের ওপর নজরদারি হয়, সেখানে গেলে স্থানীয় ইমেইল সেবার উপর নির্ভর করবেন না।
নিজ বাড়িতে নিরাপদ ইমেইল সার্ভিস ব্যবহার করুন। যেমন, ব্রাউজারের অ্যাড্রেস বারে “https” লেখা দেখলে ধরে নিতে পারেন ইমেইল সার্ভিসটি সুরক্ষিত। জিমেইল গতানুগতিক ভাবেই নিরাপদ। আর ইয়াহু ও ফেসবুকের সেটিংস্ বদলে নেয়া যায়। কেন সেটিংস বদলানো প্রয়োজন?

Planespotting flight tracking resources map of southern England

প্লেনস্পটিং: বিশ্বজুড়ে উড়োজাহাজ ট্র্যাকিংয়ের হালনাগাদ গাইড

English

বিশ্বজুড়ে প্লেনস্পটিং ও ফ্লাইট ট্র্যাকিংয়ের নির্দেশিকাটি জিআইজেএন প্রথম প্রকাশ করে ২০১৯ সালে। কিন্তু ইউক্রেনে ২০২২ সালের আগ্রাসনের পর থেকে অনেক রুশ অলিগার্ক তাদের সম্পদ নিয়ে দেশ ছাড়তে শুরু করে এবং টুইটারে রিয়েল টাইমে প্লেন ট্র্যাকিং থেকে বটগুলোকে বিরত রাখতে ইলন মাস্ককেও উদ্যোগ নিতে দেখা যায়। সাম্প্রতিক এই পরিবর্তনগুলোকে তুলে ধরতে আমরা আমাদের রিপোর্টিং নির্দেশিকাটি হালনাগাদ করেছি। এটি হালনাগাদের কাজে ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও ডিক্টেটর অ্যালার্টের পরিচালক ইমানুয়েল ফ্রয়েডেনথালের বিশেষজ্ঞ অবদানের জন্য জিআইজেএন কৃতজ্ঞ।

বিমান ট্র্যাকিং একটি অমূল্য অনুসন্ধানী হাতিয়ার।

অনুসন্ধানী সাংবাদিকেরা দুর্নীতি উন্মোচন, যুদ্ধের গতিবিধি অনুসরণ, রাজনীতিবিদ ও আমলাদের ট্র্যাক করা এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের মাত্রা বোঝাতে বিমানের তথ্য ব্যবহার করেছেন।

সব বিমানের একটি স্বতন্ত্র শনাক্তকরণ নম্বর থাকে। বিমানের গতিপথ অনুসরণ এবং সেগুলোর মালিকদের শনাক্ত করতে এই নম্বর ব্যবহার করা যায়। সবসময় না হলেও, কখনও কখনও তো বটেই।

বাণিজ্যিক ও অলাভজনক সংস্থাগুলোর কাছ থেকে ফ্লাইটের তথ্য পাওয়া যায়। সংস্থাগুলো অনেক ফ্লাইটের ডেটা জড়ো করে এবং তা সহজে পাওয়ার উপায় করে দেয়। ফলে নির্দিষ্ট বিমানের গতিবিধি অনুসরণ, নির্দিষ্ট স্থানে নজর রাখা, ধরন চিহ্নিত করা এবং আরো অনেক কিছুই সম্ভব হয়।

অনেক শৌখিন পর্যবেক্ষণকারী বিমান ট্র্যাকিংয়ের প্রতি আকর্ষণ বোধ করেন… এই উৎসাহী কমিউনিটি সাংবাদিকদের জন্য সম্ভাব্য রিসোর্স।বিমানে থাকা অবস্থান শনাক্তকরণ ব্যবস্থার কারণে প্লেনস্পটিং সম্ভব হয়। এর একটি প্রাথমিক প্রযুক্তি এডিএস-বি, ইংরেজিতে যার অর্থ হলো অটোমেটিক ডিপেন্ডেন্ট সার্ভেইল্যান্স-ব্রডকাস্ট। এডিএস-বি সংকেত সবার জন্য উন্মুক্ত এবং শৌখিন পর্যবেক্ষকেরাও এই সস্তা এডিএস-বি ট্র্যাকিং স্টেশনগুলো (১০ থেকে ২০০ মার্কিন ডলার) ব্যবহার করতে পারেন।

অনেক ওয়েবসাইটে ফ্লাইটের গতিপথ পোস্ট করা হয়, ফলে প্রাথমিক পর্যায়ের ট্র্যাকিং বেশ সহজ হয়। তবে কম্পিউটারের সাহায্যে র’ (অপ্রক্রিয়াজাত) ডেটা বিশ্লেষণ করে আরও অনেক সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম তথ্য পাওয়া সম্ভব, যা চলাচলের প্রবণতা জানতে এবং অ্যালার্ট তৈরিতে সহায়তা করে।

অনেকগুলো জটিলতার কারণে প্লেন-ট্র্যাকিং বাধাগ্রস্ত হতে পারে। বিমানচালক ট্র্যাকিং সংকেত বন্ধ রাখতে পারেন। জাতীয় আইনানুসারে, কোনো কোনো বিমানের জন্য কিছু এলাকায় ফ্লাইটের স্থানাঙ্ক জানানোর বাধ্যবাধকতা থাকে না। সামরিক বিমান ট্র্যাক করা বেশ কঠিন (তবে অসম্ভব নয়)। যুক্তরাষ্ট্রে কিছু বিধি বিধানের কারণে ব্যক্তিগত জেটগুলোর জন্য বেনামী ফ্লাইট পরিচালনা সহজ হয়৷ আর এডিএস-বি এর বিস্তার সীমিত, কারণ বিশ্বের অনেক প্রান্তে রিসিভিং স্টেশনের স্বল্পতা আছে।

অনেক শৌখিন পর্যবেক্ষণকারী বিমান ট্র্যাকিংয়ের প্রতি আকর্ষণ বোধ করেন (যারা “প্লেনস্পটার” বা “এভিয়েশন গিক” নামে পরিচিত)। এই উৎসাহী কমিউনিটি সাংবাদিকদের জন্য সম্ভাব্য রিসোর্স। অনেক প্লেনস্পটার অস্বাভাবিক বিমানের ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে বিমানবন্দরের কাছে অবস্থান করেন। এমনকি এয়ারপোর্ট স্পটিং নামে একটি ওয়েবসাইট আছে যেখানে বিশ্বব্যাপী বিমানবন্দরে কোথায় দাঁড়াতে হবে, এমন তথ্যও থাকে।

অন্য স্পটাররা তাদের কম্পিউটারে আস্থা রাখেন। সেলিব্রিটি, ব্যবসায়িক নির্বাহী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের গতিবিধির ওপর নজর রাখতে মানুষ পছন্দ করে। অনেক স্পটার যুদ্ধাঞ্চলে চলাচলরত ফ্লাইটের ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখে।

বিলিয়নেয়ার ইলন মাস্ককে বিরক্ত করার কারণে একজন প্লেনস্পটারের কর্মকাণ্ড সংবাদের শিরোনাম হয়েছে।

ইউনিভার্সিটি অব সেন্ট্রাল ফ্লোরিডার দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জ্যাক সুইনি এমন একটি টুইটার বট তৈরি করেছিলেন যা মাস্কের প্রধান জেটের (এন৬২৮টিএস) গতিবিধি পোস্ট করতে পারে। টুইটারের নতুন মালিক হিসেবে মাস্কের প্রথম পদক্ষেপগুলোর একটি ছিল সুইনি এবং রিয়েল-টাইম ফ্লাইট ট্র্যাকিং ডেটা সরবরাহে জড়িত অন্যান্য স্পটারদের ফিড বন্ধ করা। 

এরপর সুইনি একটি সাবরেডিট অ্যাকাউন্ট (r/ElonJetTracker) চালু করেন এবং টুইটারে (@elonjetnextday) নতুনরূপে ফিরে আসেন। রিয়েল-টাইম অবস্থানের তথ্য সম্বলিত পোস্টে নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে টুইটারের নতুন নিয়ম মেনে চলতে গিয়ে তাঁর টুইটার ফিডে তথ্য দিতে এখন ২৪-ঘন্টা দেরি হয়।

ফেব্রুয়ারির শুরুতে টুইটার তাদের অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রাম ইন্টারফেস (এপিআই) ব্যবহারের জন্য চার্জ ধার্যের ঘোষণা দিয়ে আরেকটি বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছে। অনেক প্লেনস্পটার লাভের জন্য নয়, বরং বিনোদনের খোরাক হিসেবে তথ্য পোস্ট করেন। টুইটারের ঘোষণার পর ধারণা করা হচ্ছিল, খরচের কারণে তাদের কর্মকাণ্ড কমে যাবে বা থেমে যাবে।

ফ্লাইট তথ্যের প্রাথমিক উৎস
রিয়েল-টাইম ফ্লাইটের তথ্য হাতের নাগালেই পাওয়া যায়, যার বেশিরভাগই মেলে বিনা খরচে।

ট্র্যাকিং সাইটগুলোর বৈশিষ্ট্যে ভিন্নতা থাকে। যেমন, ঐতিহাসিক ডেটার জন্য অনেক সময় সাবস্ক্রিপশন এবং/অথবা ফিস দিতে হয়। তবে, প্রাথমিক তথ্যের জন্য খরচ অনেক কম (প্রতি মাসে ৫ থেকে ১০ মার্কিন ডলার) আর মূল্যবান তথ্যের জন্য খরচ কিছুটা বেশি হতে পারে।

এই ওয়েবসাইটগুলো অনেকটাই বিশ্বজুড়ে অ্যান্টেনা বসানো শৌখিন পর্যবেক্ষকদের ওপর নির্ভর করে। নিজেদের অ্যান্টেনা থেকে প্রাপ্ত তথ্য যারা ওয়েবসাইটগুলোকে “সরবরাহ” করে, তারা বেশ ব্যয়বহুল সাবস্ক্রিপশন বিনামূল্যে ব্যবহারের সুযোগ পান।

সকলের জ্ঞাতার্থে দ্রষ্টব্য: কিছু ট্র্যাকিং সাইট সাংবাদিকদের সুযোগ দেয় এবং বিনামূল্যে নির্দেশনা দিয়ে থাকে। দরকার হলে দ্বিধা ছাড়াই তাদের জিজ্ঞেস করুন। এছাড়াও সম্ভাব্য ব্যবহারের জন্য কিছু সাইট চ্যাট বোর্ড ও নির্দেশনামূলক ব্লগ জুড়ে দিয়েছে।

প্লেন ট্র্যাকিংয়ের প্রধান সাইটগুলো হলো:

এডিএস-বি এক্সচেঞ্জ – এই সাইটটি অন্যান্য ফ্লাইট-ট্র্যাকিং সেবাগুলোর তুলনায় বেশি ফ্লাইট সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করে। এটিকে পছন্দের কারণ হলো, মার্কিন বিধিবিধানের আওতায় বেনামী ফ্লাইট পরিচালনার অনুরোধ জানানো মার্কিন বিমানের তথ্য এই সাইট ফিল্টার করে না৷ ( এ সম্পর্কিত আরও তথ্য নিচে দেওয়া হয়েছে) এখানে বিনামূল্যে যেকোনো বিমানের পুরনো ফ্লাইট-তথ্য খোঁজা যায়। ট্র্যাকিং ম্যাপে চোখ রাখুন, তারপর যে কোনো প্লেনে ক্লিক করুন বা সার্চ  করুন। বাম প্যানেলে, “হিস্ট্রি” দেখুন। অপ্রিক্রিয়াজাত ডেটার জন্য সাধারণত খরচ হয়। মানচিত্র সম্পর্কিত সহায়তা পেতে  এখানে দেখুন। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে এডিএস-বি এক্সচেঞ্জকে জেটনেটের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। এতে কিছু ব্যবহারকারী উদ্বিগ্ন হলেও জেটনেট ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।

এই তিনটি সাইট সাংবাদিকদের কাজের জন্য বেশি উপযোগী।ইকারাস ফ্লাইটস – অলাভজনক সংস্থা সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড ডিফেন্স স্টাডিজের (সিফরঅ্যাডস) তৈরি করা এই ফ্লাইট-ট্র্যাকিং টুল এডিএস-বি এক্সচেঞ্জ ডেটা ব্যবহার করে। এর কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। যেমন: ব্যবহারকারীরা নির্দিষ্ট এলাকা পর্যবেক্ষণ করতে পারে, আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ বিমানের গতিবিধি ট্র্যাক করতে পারে এবং উড়োজাহাজের মালিকানা সম্পর্কিত ডেটা জানতে চাইতে পারে। ইকারাস ফ্লাইটস সবাই ব্যবহার করতে পারে, তবে বিনামূল্যে সেবা পেতে এটি ব্যবহারে আগ্রহী অনুসন্ধানকারীদের অবশ্যই সিফরঅ্যাডস-এর সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

ওপেন স্কাই নেটওয়ার্ক হচ্ছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক একটি অলাভজনক সংস্থা। তারা দাবি করে, বিশ্বে বিমান চলাচলের সবচেয়ে বড় সার্ভেইল্যান্স ডেটার ভান্ডারটি তাদের দখলে। “আমরা প্রতিটি বিমান থেকে পাওয়া প্রতিটি বার্তাই সংরক্ষণ করি,” জিআইজেএনকে জানান তাদের একজন স্বেচ্ছাসেবী। তাদের এয়ারক্রাফট ডেটাবেজ-এ গিয়ে  উড়োজাহাজের লেজে থাকা নম্বরটি দিয়ে অনুসন্ধান করলে নিবন্ধন তথ্য, ফ্লাইট ইতিহাস এমনকি সেটি আকাশে নাকি মাটিতে, তা-ও জানিয়ে দিবে। এক্সপ্লোরার ফিচারে গেলে, যেসব উড়োজাহাজ আকাশে আছে শুধু সেগুলোই দেখাবে। যত উড়োজাহাজ ট্র্যাক করা হয়েছে তার সবগুলোর ৩০ দিনের ইতিহাসও দেয়া আছে। জরুরী সতর্কবার্তার তালিকা নিয়ে রয়েছে আরেকটি ফিচার।

ওপেনস্কাই মূলত একাডেমিক ও অলাভজনক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জন্য তৈরি। তবে সুনির্দিষ্ট অনুরোধ জানালে তারা সাংবাদিকদেরও সহযোগিতা করে। ভিজ্যুয়ালাইজেশন এবং “পরিচিতি বাড়ানোর মাধ্যমে আমাদের লাভবান করে,” এমন বিষয়ে তারা গণমাধ্যমের সঙ্গে কাজ করেছে।

জেটনেট এডিএস-বি এক্সচেঞ্জ কেনার পর থেকে দুটি নতুন সাইটের আবির্ভাব হয়েছে। অন্তত ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম দিক পর্যন্ত দুটোই বেশ কম ফিডার ও কম কভারেজ এবং আনফিল্টার্ড বলে মনে হয়েছে।

সেগুলো হলো:

দ্য এয়ারট্রাফিক ডট কম – জ্যাক সুইনি “এবং গ্রাউন্ড কন্ট্রোল ডিসকর্ড সার্ভারের সদস্যদের” চালু করা একটি সাইট, যেটি “সবসময় খোলা ও আনফিল্টার্ড থাকার” কথা।

এডিএসবি ডট ফাই – “একটি কমিউনিটি-পরিচালিত ফ্লাইট ট্র্যাকার, যেখানে বিশ্বজুড়ে ৫০০ টিরও বেশি সক্রিয় ফিডার” আছে। এই ট্র্যাকারে “বিশ্বব্যাপী এয়ার ট্রাফিক ডেটায় উন্মুক্ত ও আনফিল্টার্ড অ্যাক্সেস” নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।
অন্যান্য ট্র্যাকিং সোর্স
অল্প কয়েকটি ট্র্যাকিং সেবা রিয়েল-টাইম ট্র্যাকিং ম্যাপ এবং বিমানের সাম্প্রতিক ভ্রমণগুলো বিনামূল্যে দেখাসহ আরও বেশকিছু সুবিধা দেয়।

তবে, এই ফ্লাইট-ট্র্যাকিং সেবাগুলো মালিকের অনুরোধক্রমে যে কোনো বিমানের তথ্য সরিয়ে নেয়৷ তবুও, সেগুলোর কভারেজ বিশ্বের কিছু অঞ্চলে (যেমন আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকা) এডিএস-বি এক্সচেঞ্জের চেয়ে অনেক ভালো।

বিমান ছাড়ার সময়ের নোটিফিকেশন ও ঐতিহাসিক ফ্লাইট সম্পর্কিত ডেটা ব্যবহারের সুবিধা সহ বেশ কিছু সুবিধা অর্থের বিনিময়ে দেওয়া হয়ে থাকে।

ফ্লাইট অ্যাওয়ার
ফ্লাইট রাডার টুয়েন্টি ফোর
প্লেন ফাইন্ডার
এয়ারন্যাভ রাডার বক্স

আরও কয়েকটি ট্র্যাকিং সেবাদাতা সাইট: এয়ার ফ্লিটস্,অ্যাভ ডেল্ফি, ফ্লাইট স্ট্যাটস্, ফ্লাইট বোর্ড, ফ্লাইট ভিউ, ফ্রিডার, প্লেন ম্যাপার, প্লেনপ্লটার, এবং স্কাইস্ক্যান ওয়ার্ল্ড।

বাণিজ্যিক বিমান ভ্রমণকারীদের জন্যেও কিছু সাইট রয়েছে।

এছাড়াও বিশেষায়িত কয়েকটি সাইট আছে। এগুলো হলো:

ডিক্টেটর অ্যালার্ট – এই প্রকল্প বিশ্বব্যাপী একনায়কতান্ত্রিক সরকারের বিমানগুলো সনাক্ত করে এবং বেশ কয়েকটি টুইটার বট চালায়, যেগুলো বাসেল-মুলহাউস-ফ্রেইবার্গের ইউরো এয়ারপোর্ট বা প্যারিস, লন্ডন, জেনেভায় বিমান অবতরণের সময় অবহিত করে।
বেলিংক্যাট – “কাজাখস্তানের সাম্প্রতিক ও পরিবর্তিত পরিস্থিতি আরও ভালভাবে বুঝতে দেশের বিমানবন্দরগুলোতে অবতরণ করা ও সেখান থেকে ছেড়ে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ফ্লাইটগুলোকে ট্র্যাক করার একটি ওপেন সোর্স ডেটাবেস।”
লস এঞ্জেলেস, বাল্টিমোর, পোর্টল্যান্ড, মিনিয়াপোলিস ও লন্ডন সহ বিশ্বের বিভিন্ন শহরের উপর দিয়ে যখন কোনো বিমান উড়ে যায়, তখন অ্যাডভাইজরি সার্কুলার বট সেটি পোস্ট করে।

সামাজিক মাধ্যমও প্লেনস্পটারদের খুঁজে পাওয়া তথ্যে ভেসে যায়। টুইটার হ্যাশট্যাগগুলো দেখুন: #এভিয়েশন, #অ্যাভগিক, #প্লেনস্পটিং, #ফ্লাইট এবং #মিলঅ্যাভগিক।

বেশি টুইটকারী অনেকের মধ্যে কয়েকজন হলো: এভারগ্রিন ইন্টেল @vcdgf555, Gerjon @Gerjon, Aircraft Spots @AircraftSpots, SkyScanWorld @scan_sky, এবং Avi Scharf @avischarf।

এছাড়াও জাহাজ ও উড়োজাহাজ নিয়ে বেলিংক্যাটের ডিসকর্ড চ্যানেল দেখুন।
ট্র্যাকিংয়ের প্রাথমিক ধারণা
সব উড়োজাহাজের লেজের দিকে একটি শনাক্তকরণ চিহ্ন বা “টেইল নম্বর” থাকে (বা থাকা উচিত)।ট্র্যাকিং ওয়েবসাইটগুলো বিমান শনাক্তের জন্য উপযোগী তথ্য তুলে ধরে।

“হেক্স কোড” নামে একটি শনাক্তকারণ চিহ্ন আছে (তবে অনেক সময় এস-মোড বা আইকাও বলা হয়)। ছয় বা সাত অক্ষর ও সংখ্যার এই সিরিজটি সরকারের জন্য বরাদ্দকৃত আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা ((ICAO) এর ২৪-বিটের সাংকেতিক ঠিকানা থেকে নেওয়া হয়, যা থেকে কোডে থাকা বিমান নিবন্ধনের দেশ সম্পর্কে জানা যায়। বিমান বিক্রি না হওয়া পর্যন্ত সাধারণত হেক্স নম্বর বদলায় না। নীতিগতভাবে, এটি বিমানের স্বতন্ত্র শনাক্তকরণ চিহ্ন, আর ট্র্যাকিং অ্যান্টেনাগুলো এই তথ্যই সংগ্রহ করে।

দ্বিতীয়ত, সব উড়োজাহাজের লেজের দিকে একটি শনাক্তকরণ চিহ্ন বা “টেইল নম্বর” থাকে (বা থাকা উচিত)। দেখার সুবিধার্থে এটি কমপক্ষে ১২ ফুট উচ্চতায় স্পষ্ট করে লেখা হয়। এই সংখ্যাগুলো হলো সংক্ষিপ্ত আলফানিউমেরিক স্ট্রিং, যা বিমান নিবন্ধনের দেশ নির্দেশ করতে অক্ষর দিয়ে শুরু হয়, (যুক্তরাষ্ট্রের জন্য N, জার্মানির জন্য D, ইত্যাদি)। উইকিপিডিয়ায় বিমান নিবন্ধন উপসর্গের (প্রিফিক্স) একটি সমৃদ্ধ তালিকা রয়েছে। এরপর থাকে কয়েকটি সংখ্যা এবং/অথবা নির্দিষ্ট বিমানের জন্য নির্দিষ্ট অক্ষর। (সামরিক বিমানগুলো বিভিন্ন শনাক্তকরণ ব্যবস্থা ব্যবহার করে।)

এছাড়াও “কল সাইনের” ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। বিমান চালক সেই ফ্লাইটে ঢুকানোর যে সিদ্ধান্তই নিক না কেন, কমবেশি তাই হলো কল সাইন। বাণিজ্যিক ফ্লাইটে এর ফ্লাইট নম্বর হবে অনেকটা এমন – ডেল্টা এয়ারলাইন্সের হনলুলু থেকে মিনিয়াপোলিস পর্যন্ত  ফ্লাইট৩০৭ এর জন্য ফ্লাইট নম্বর হবে DAL307.

গুজব ছড়ানোর ৬টি কৌশল এবং সেগুলো যাচাইয়ের সহজ পদ্ধতি

English

মিথ্যা বা বিকৃত (ম্যানিপুলেটেড) ছবি উন্মোচন করা কঠিন কিছু নয়। এজন্য কিছু টুলের ব্যবহার এবং কৌশল জানা থাকতে হয়।

জিআইজেএন এর এই টিউটোরিয়ালে গুজব বা ভুয়া খবর ছড়ানোর ছয়টি পদ্ধতি বিশ্লেষণ করা হবে এবং ধাপে ধাপে সেগুলোর সত্যতা যাচাইয়ের নির্দেশনা দেওয়া হবে:

১. ছবিতে কারসাজি — গুগল রিভার্স সার্চ এর মত টুল ব্যবহার করে সহজে ছবি যাচাই।
২.

সাক্ষাৎকার গ্রহণের কৌশল

English

আন্তর্জাতিক প্রেস ইনস্টিটিউট থেকে প্রকাশিত ’রিপোর্টার্স গাইড টু দ্যা মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলস: কাভারিং ডেভেলপমেন্ট কমিটমেন্টস ফর ২০১৫ এন্ড বিয়োন্ড’ ধারাবাহিকের ১৪তম পর্ব থেকে এটি নিয়েছে জিআইজেএন।

সাংবাদিক হিসেবে আমাদের তথ্য সংগ্রহ করতে হয়; বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যকে আরও সমৃদ্ধ করতে হয়; এবং ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ পেতে সেই তথ্যের স্পষ্ট ব্যাখ্যাও দিতে হয়। আর এই কাজের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো ইন্টারভিউ বা সাক্ষাৎকার। মূলত “কে, কি, কোথায়, কিভাবে, কখন এবং কেন”- সাংবাদিকতার এই মৌলিক প্রশ্নগুলোর উপর ভিত্তি করে তথ্যকে আরও সম্প্রসারিত করার জন্য, আমরা সাক্ষাৎকার ব্যবহার করি। স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, রাজনীতি কিংবা সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি)- তা সে যে বিটই কাভার করি না কেন, সাক্ষাৎকারের ভূমিকা অনস্বীকার্য।  শুধু বিশেষজ্ঞ নয়, ক্ষতিগ্রস্তদের কন্ঠস্বর তুলে ধরার অন্যতম পন্থাও এই সাক্ষাৎকার; বিশেষ করে দারিদ্র্য নিরসন, দুর্নীতি, লিঙ্গ সমতা, পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যের মত বিষয়ে সংবাদ সংগ্রহের ক্ষেত্রে। যাদের কথা কেউ শোনেনি, সেইসব দরিদ্র ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কথা, বৃহত্তর গোষ্ঠীর সামনে আসে সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, অনেক সাংবাদিক মনে করেন, সাক্ষাৎকার কেবলমাত্র প্রশ্ন জিজ্ঞাসা এবং জবাব নেয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ। এই গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা অর্জনে আমরা খুব একটা মনোযোগ দেই না। কিন্তু ভালো সাংবাদিক হতে হলে, সাক্ষাৎকার গ্রহণের দক্ষতাকে শিল্পের পর্যায়ে নিতে হবে। আর তা তৈরি হয় অনুশীলন এবং নিচের সুনির্দিষ্ট কিছু পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে:
১। প্রস্তুতি, প্রস্তুতি, প্রস্তুতি
সাক্ষাৎকার থেকে পাওয়া তথ্যের গুণগত মান অনেকটাই নির্ভর করে, আমরা কতটা প্রস্তুতি নিচ্ছি তার উপর। যে বিষয়টি কাভার করছেন, তার প্রেক্ষাপট এবং অন্ততঃপক্ষে সাক্ষাৎকারদাতা সম্পর্কে মৌলিক তথ্য জানা থাকা জরুরী। আর এখানেই আসে, আপনার স্টেশন বা পত্রিকার পুরোনো ফাইল, ইন্টারনেট এবং লাইব্রেরি ব্যবহারের বিষয়টি।

হাতের কাছে একটি প্রশ্নের তালিকা তৈরি রাখুন, অথবা অন্তত কিছু বুলেট পয়েন্ট, যা আপনি জিজ্ঞেস করতে চান। কিন্তু নিজেকে শুধু সেই তালিকায় আটকে রাখবেন না। তাহলে আপনি সাক্ষাৎকার গ্রহনের পরবর্তী নিয়মটি ভঙ্গ করবেন।
২। শুনুন, শুনুন এবং শুনুন
সাক্ষাৎকার গ্রহনের সময় সক্রিয় ও মনোযোগী শ্রোতা হয়ে উঠুন। শুধু প্রশ্ন তালিকার দিকে তাকিয়ে থাকলে, হয়ত এমন কোন বক্তব্য আপনার কান এড়িয়ে যাবে, যে বিষয়ে আপনি ফলো-আপ প্রশ্ন করতে চেয়েছিলেন, অথচ সাক্ষাৎকারদাতা এরইমধ্যে তা বলে ফেলেছেন।

বিশেষ করে যখন সাধারণ মানুষের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন, তখন তাদের দিকে পুরোপুরি মনোযোগ দিন। প্রায়ই তারা নিজেদের কষ্টের কথা বলেন- তাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন, ভদ্রতা, সহানুভূতি ও সক্রিয়তার সাথে তাদের কথা শুনুন।
৩। নিজেকে প্রশ্ন করুন: সাক্ষাৎকার থেকে কী বের করে আনতে চাই? আপনি কি একটি তাৎক্ষণিক মন্তব্য বা সাউন্ড-বাইট পেতে সাক্ষাৎকারটি নিচ্ছেন?