অনলাইনে অনুসন্ধানের যত টুল

English
বিবিসির সাংবাদিক পল মায়ার্স, অনলাইনে অনুসন্ধানের জন্য বিখ্যাত। তাঁর অনলাইন গবেষণা টুল এবং অনুসন্ধানের কৌশল শিরোনামের লেখাটি দীর্ঘ দিন ধরেই জিআইজেএন পাঠকদের কাছে জনপ্রিয়। মায়ার্সের ওয়েবসাইট, রিসার্চ ক্লিনিক বিভিন্ন গবেষণা লিংক ও পাঠ্য বিষয়বস্তুতে সমৃদ্ধ।

“অনলাইন অনুসন্ধান এবং  গুরুত্বপূর্ণ ডেটাবেইজ” নামে আমাদের একটি ভিডিও আছে। দেখতে চাইলে  ঘুরে আসুন জিআইজেএনের ইউটিউব চ্যানেল থেকে।মায়ার্সের লেখা আরো কিছু নির্দেশিকা পাবেন জিআইজেএনের ওয়েবসাইটে। যেমন:

টুইটার ব্যবহার করে ব্রেকিং স্টোরির দৃশ্য থেকে মানুষ খুঁজে বের করুন
আপনার ব্রাউজার কাস্টমাইজ করুন: অনলাইন গবেষণায় অ্যাড-অনস্ ব্যবহার
ব্রাউজার অ্যাড-অনস্ (দ্বিতীয় খন্ড): যথাসময়ে পেছনে ফিরে দেখা

ওপেন সোর্স ইন্টেলিজেন্স ফ্রেমওয়ার্ক, হচ্ছে খুবই বিস্তারিত ও ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল অনুসন্ধানী টুলের তালিকা। এছাড়া জিআইজিএনের অ্যালাস্টেয়ার ওটারের কলাম অনুসন্ধানী টুলবক্স থেকে জানতে পারবেন নিচের বিষয়গুলো সম্পর্কে:

নাম ও ওয়েবসাইট ট্র্যাকিং, ভিডিও যাচাই এবং ক্লাস্টারিং সার্চ ইঞ্জিন
অন্তর্জালে জাল পেতে মানুষ খোঁজার পদ্ধতি
ব্যক্তি ও কোম্পানির খোঁজে
গোপন ডকুমেন্ট শেয়ার, টুইটারে তথ্য অনুসন্ধান এবং ওয়েবসাইটে নজরদারি
স্প্রেডশিট ছাড়িয়ে ওয়েবের গভীরে অনুসন্ধান

ইন্টেল টেকনিক মূলত মাইকেল বাজেলের সৃষ্টি। তিনি এক সময় মার্কিন সরকারের সাইবার অপরাধ তদন্তকারী হিসেবে কাজ করতেন। এখন লেখালেখি করেন। ইন্টেল টেকনিক মূলত ওয়েবে দ্রুত অনুসন্ধানের জন্য কাজে আসে, এমন কয়েক ডজন টুলের সংগ্রহ। এখানকার বেশিরভাগ টুল দিয়ে আপনি একই সাথে অনেক জায়গায় অনুসন্ধান চালাতে পারবেন। “টুলসের” নিচে বাম দিকের কলামে রিসোর্সগুলো সুসজ্জিত দেখতে পাবেন। (১৭ই অক্টোবর, ২০১৮ তারিখে প্রকাশিত এই ব্লগ পোস্টে নতুন কিছু ফিচার নিয়ে বিশ্লেষণ রয়েছে।) তার এই লেখায় জানতে পারবেন, অনলাইনে গাড়ির মালিক অনুসন্ধান করবেন কীভাবে। তাদের একটি নিউজ লেটার আছে এবং তিনি এই বিষয়ে প্রশিক্ষণও দিয়ে থাকেন।

কে, কোথায়, কখন সম্পর্কে অনুসন্ধান করার অনলাইন পদ্ধতি – এটি লিখেছেন অনলাইন অনুসন্ধান বিশেষজ্ঞ হেঙ্ক ফন এস। জিআইজেএন পাঠকদের জন্য ভেরিফিকেশন হ্যান্ডবুকের এই অংশ তুলে ধরা হয়েছে।

ডিপ ওয়েবে অনুসন্ধান, জিয়ানিনা সেগনিনির তৈরি একটি প্রেজেন্টেশন। এটি তিনি তুলে ধরেন জিআইজেসি১৭-তে। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেটা জার্নালিজম কর্মসূচীর এই পরিচালক, এখানে অ্যাডভান্সড গুগল সার্চের নানা উপায় তুলে ধরেছেন। মাদক পাচারের উদাহরণ ব্যবহার করে তিনি দেখিয়েছেন গুগল কীভাবে ডিপ ওয়েবে অনুসন্ধানের জন্য সেতু হিসেবে কাজ করে। কনটেইনার, জাহাজ, এবং কাস্টমস ট্র্যাকিংয়ের পাশাপাশি এখানে উঠে এসেছে ফেসবুক সার্চ এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়।

দরকারি টুল, লিংক এবং রিসোর্স শিরোনামের এই তালিকা তৈরি করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাউদার্ন টিপ মিডিয়ার সাংবাদিক ও প্রশিক্ষক রেমন্ড জোসেফ। এটি মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ভেরিফিকেশন, ডোমেইন, আইপি তথ্য ও  আন্তর্জাতিক ফোনবুকসহ ছয়টি বিষয়ে গবেষণার ওপর একটি তথ্য ভান্ডার। আর জিআইজেসি১৭-তে উপস্থাপন করা এই প্রেজেন্টেশনে জোসেফ ব্যাখ্যা করেন, “আপনি কীভাবে ডিজিটাল গোয়েন্দা হবেন”।

এএমএল রাইটসোর্স, একটি বেসরকারী মার্কিন প্রতিষ্ঠান। তারা “শুধু অর্থ পাচার প্রতিরোধ, ব্যাংক গোপনীয়তা আইন এবং আর্থিক অপরাধ সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে কাজ করে।” প্রতিষ্ঠানটি তৈরি করেছে রিসোর্স শিটের এই সংকলন।

ইনভেস্টিগেট উইথ ডকুমেন্ট ক্লাউড, লিখেছেন ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টার্স অ্যান্ড এডিটর্স (আইআরই) এর নির্বাহী পরিচালক ডগ হ্যাডিক্স। এই নির্দেশিকায় পাবেন সাংবাদিকদের শেয়ার করা ১.৬ মিলিয়ন সরকারি নথির ব্যবহার ও বিশ্লেষণ করার পদ্ধতি এবং নিজের নথি হাইলাইট, অন্যান্যদের সাথে সমন্বয়, ডকুমেন্ট ওয়ার্কফ্লো ব্যবস্থাপনা ও নিজের কাজ অনলাইনে শেয়ার করার কৌশল।

মালাকি ব্রাউনির টুলকিট, মূলত ব্যবসা-বাণিজ্য কেন্দ্রিক অনুসন্ধানের জন্য দরকারি টুলের একটি তালিকা। এই তালিকায় ৮০টিরও বেশি ওপেন সোর্স অনুসন্ধানী টুলের লিংক পাবেন। নিউ ইয়র্ক টাইমসের এই প্রযোজক জিআইজেসি১৭’-তে তার সেশনের শেষ দিকে যখন এই স্লাইডটি দেখালেন, তখন প্রায় সব দর্শকই সেটি ব্যবহারের জন্য তাঁর কাছে অনুরোধ পাঠান।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনুসন্ধান নামের প্রেজেন্টেশনটি জিআইজেসি১৭-তে উপস্থাপন করেন মাইকেল সালজউইডেল। “নট হ্যাকিং, নট ইলিগ্যাল” এই বাক্য দিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন। তিনি ‘সোস্যাল উইভার’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রশিক্ষক।

সাবেক কর্মীদের কীভাবে খুঁজবেন শিরোনামের লেখাটি জেমস মিনজের। তিনি মিনজ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা, প্রেসিডেন্ট  এবং একজন অভিজ্ঞ প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর। তিনি মনে করেন, “অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের তৈরির জন্য সাবেকদের সাথে যোগাযোগের এই ১০টি পরামর্শ বেশ কার্যকর।”

অনুসন্ধানী গবেষণার যত লিংক, সংকলন করেছেন মারগট উইলিয়াম। দ্য ইন্টারসেপ্টের সাবেক এই গবেষণা সম্পাদক “কার্যকর গুগল অনুসন্ধান” থেকে শুরু করে “রিসার্চ গুরু” সাইটের তালিকা পর্যন্ত – বিশদ পরামর্শ তুলে ধরেছেন এখানে।

বেলিংক্যাটের অনলাইন অনুসন্ধানী টুলকিট, মূলত মানচিত্র, ভৌগলিক অনুসন্ধান, ছবি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, পরিবহন, ডেটা ভিজ্যুয়ালাইজেশন, বিশেষজ্ঞ এবং আরো অনেক কিছুর বিশদ এক তথ্যসম্ভার।

ব্যুরো লোকাল কোলাবরেটিভ ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম টুল, একটি ক্রাউড-সোর্সড স্প্রেডশিট। এখানে ৮০টিরও বেশি তালিকা রয়েছে। এর কয়েকটি পৃষ্ঠপোষকতা করেছে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম।

রিপোর্টারদের জন্য টুল নামের সাইটটি তৈরি করেছেন সামাস্থা সান। খুঁজে পাওয়া দুষ্কর এমন ই-মেইল অনুসন্ধান বা এই জাতীয় নতুন নতুন কৌশল নিয়ে গ্রাহকদের নিয়মিত ই-মেইল পাঠান তারা।

এসপিজে জার্নালিস্টস্ টুলবক্স: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেশাদার সাংবাদিকদের সংগঠন সোসাইটি অব প্রফেশনাল জার্নালিস্টসের হয়ে এটি উপস্থাপন করেছেন মাইক রাইলি। এটি দরকারি অনলাইন টুলের একটি সংকলন।

ডেভিড ট্রাইলিং, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শোরেনস্টেইন সেন্টার-এর জার্নালিস্টস্ রিসোর্সের নিজস্ব লেখক। অনলাইনে গবেষণাপত্র খোঁজার উপায় নিয়ে তিনি লিখেছেন একাডেমিক গবেষণা কীভাবে খুঁজবেন।

ওয়ার্ল্ড ১৯২.কম-এ আছে আন্তর্জাতিক টেলিফোন ডাইরেক্টরির একটি তালিকা।

ভিপিএন এবং গোপনীয়তা বিষয়ে একাডেমিক গবেষণার জন্য ডিপ ওয়েব সার্চ ইঞ্জিনের ব্যবহার, নামের প্রবন্ধটি লিখেছেন ক্রিস স্টোবিং। এটি প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক কোম্পানী কম্পেয়ারিটেক। এর লক্ষ্য, ভিপিএনের মত প্রযুক্তি ব্যবহারের সময় গ্রাহকদের যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করা।

ভিপিএন এবং গোপনীয়তা বিষয়ে পল বিশপের প্রবন্ধ ধাপে ধাপে নিরাপদে ডার্ক নেট এবং ডিপ ওয়েবে প্রবেশের নির্দেশিকা। এটিও প্রকাশ করেছে কম্পেয়ারিটেক।

মার্কিন প্রতিষ্ঠান ওপেন এডুকেশন ডেটাবেজের তৈরি সংকলন, গুগল ছাড়াই গবেষণা: ৫৬টি নির্ভরযোগ্য, অদৃশ্য এবং বিস্তৃত রিসোর্স। এখানে পাবেন সব ধরণের অনলাইন শিক্ষণ ডিরেক্টরির বিবরণ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক আন্তর্জাতিক এনজিও দ্য ইঞ্জিন রুম তৈরি করেছে ইন্ট্রোডাকশন টু ওয়েব রিসোর্সেস। এর একটি অংশে বলা আছে, হারিয়ে যাওয়া থেকে তথ্যকে রক্ষার জন্য কীভাবে, কোথায় কপি করে রাখবেন।

অসাম পাবলিক ডেটাসেট হলো নানা ধরণের সরকারি তথ্যের বিষয়ভিত্তিক সংকলন।

রিসোর্সেস ফ্রম স্টার্টমি.কম একটি রিসোর্স সংকলন । বিনামূল্যের এই লাইব্রেরির পাঁচটি পেইজে আছে শত শত লিংক:

অ্যাডঅন: https://start.me/p/nRQNRb/addons

ডেটাবেইজ: https://start.me/p/QRENnO/databases

সার্চ ইঞ্জিন: https://start.me/p/b56G5Q/search-engines

টুল: https://start.me/p/wMdQMQ/tools

টিউটোরিয়াল: https://start.me/p/aLBELX/tutorials

ডেটা বেইজেস্ নামের ওয়েবপেইজে নানা ধরনের  লিঙ্ক পাবেন। যেমন, চুরি হয়ে যাওয়া সম্পত্তি, আবহাওয়া, হ্যাকিং, মিডিয়া, যানবাহন চলাচল, বিশ্লেষণ, ডোমেইন নিবন্ধন, ভবন, প্রাণী, ড্রোন, অর্থ সংক্রান্ত এবং আরো অনেক কিছু।

মেরি এলেন বেটসের বেটস ইনফো টিপস হলো, নতুন নতুন ধ্যান-ধারণা সম্পর্কে জানার দারুন একটি উৎস। যেমন, সময় দিয়ে গুগল নিউজ সার্চ সীমিত করা এবং ফেসবুক গ্রাফ সার্চের মাধ্যমে ব্যক্তিকে খুঁজে বের করা। লেখিকা হলেন বেটস ইনফরমেশন সার্ভিসেসের প্রতিষ্ঠাতা এবং দীর্ঘ দিনের ‘ইনফো গীক্’।

রিসার্চ বাজের গোয়িং ওল্ড স্কুল টু সল্ভ এ গুগল সার্চ প্রবলেম লেখাটি গুগল অনুসন্ধানের ফলাফল থেকে কিছু সাইট বাদ দেয়ার একটি পদ্ধতি বর্ণনা করে।

মেক ইউজ অফ নিয়মিত ভালো ভালো পরামর্শ দিয়ে থাকে, যেমন-চারটি বেনামী ওয়েব ব্রাউজার যা আপনার পরিচয় গোপন রাখবে।

সার্চ ইঞ্জিন জার্নাল প্রকাশ করেছে, ৬টি অনন্য কী-ওয়ার্ড রিসার্চ টুল, যা আপনার জানা প্রয়োজন।

এই টুলটি আপনার চারপাশের ক্যামেরাগুলোকে দেখিয়ে দেয় – এই লেখায় জানতে পারবেন আশপাশের অনিরাপদ সার্ভিল্যান্স ক্যামেরাগুলো কীভাবে খুঁজে বের করবেন।

জিডিপিআর পরবর্তী ডোমেইন নাম গবেষণা: এখানে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় সাধারণ ডেটা সুরক্ষা আইনের কারণে ডোমেইন নাম নিবন্ধন নিয়ে অনুসন্ধান কেন কঠিন হয়ে উঠেছে। এ ধরণের গবেষণায় এখন বিভিন্ন টুল এবং কৌশলের ব্যবহার অপরিহার্য হয়ে উঠেছে বলে মনে করে ওসিন্ট কিউরিয়াস ।

নিখোঁজের খোঁজে: গুম, অপহরণ ও হারানো মানুষ নিয়ে অনুসন্ধানের গাইড

English

এই বিশ্বে প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ নিখোঁজ হয়ে যান। ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অন মিসিং পিপল বলছে, এসব ঘটনার বেশির ভাগের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র; বিশেষ করে মাদক পাচারকারীরা।  এ ছাড়া বন্য প্রাণী চোরাচালান, মানব পাচার, প্রাকৃতিক সম্পদ চুরি—এমন আরও অনেক অপরাধী চক্র মানুষের এভাবে হারিয়ে যাওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে।

এমন অপরাধ ঠেকাতে সাংবাদিকদের বড় ভূমিকা আছে; বিশেষ করে যেসব জায়গায় রাষ্ট্র ও আইনের শাসন ভেঙে পড়েছে। সেটি হতে পারে লেখালেখির মাধ্যমে নিরুৎসাহিত করে, অথবা ঘটনার গভীর অনুসন্ধানের মাধ্যমে।সবচেয়ে ডাকসাইটে অপরাধী গোষ্ঠীগুলোর কর্মকাণ্ড, সাধারণত হয় বিশ্বজোড়া। তারা খুবই সুসংগঠিত, আর তাদের কারবারও বেশ নিয়মতান্ত্রিক। তাদের চোখে পড়বে আমাদের চারপাশে, নিত্যদিনের জীবনে; কখনো কখনো তারা ঢুকে পড়ে সিস্টেমের একেবারে গভীরে; তাদের দেখা যায় গুরুত্বপূর্ণ সব সামাজিক সংগঠনে।

যখন সব জায়গায় দুর্নীতি প্রবলভাবে জেঁকে বসে, তখন সংঘবদ্ধ গোষ্ঠীর কারণে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া এসব মানুষ নিয়ে কোনো অনুসন্ধান হয় না। জাতীয় বা আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষকে তারা প্রায়ই চুপ করিয়ে রাখে অর্থের বিনিময়ে। আবার কখনো অপরাধী গোষ্ঠীর ক্ষমতা ও ব্যাপ্তি এতই বড় হয়ে ওঠে যে, কোথাও অপরাধের কোনো তথ্যই পাওয়া যায় না। যেসব গুমের সঙ্গে কোনোভাবে রাষ্ট্র জড়িত;  যেখানে একজন মানুষকে কেউ তুলে নিয়ে গেছে, গোপনে আটকে রেখেছে অথবা মেরে ফেলেছে এবং লাশটাকে লুকিয়ে ফেলেছে—তাদের বেলায়ও একই কথা প্রযোজ্য।

এই অপরাধের ধরন অনেক রকম হতে পারে: একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, একসঙ্গে অনেক মানুষের গুম হয়ে যাওয়া, অথবা নির্দিষ্ট সময়ে পরস্পর সংযুক্ত একাধিক ঘটনা। অনেকে আবার নিখোঁজ হন নিজের ইচ্ছাতেও।

এমন অপরাধ ঠেকাতে সাংবাদিকদের বড় ভূমিকা আছে; বিশেষ করে যেখানে রাষ্ট্র ও আইনের শাসন ভেঙে পড়েছে। সেটি হতে পারে লেখালেখির মাধ্যমে নিরুৎসাহিত করে, অথবা ঘটনার গভীর অনুসন্ধানের মাধ্যমে। কিন্তু নিখোঁজ ব্যক্তিদের নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে একজন সাংবাদিক নিজেও এ ধরনের অপরাধের শিকার হতে পারেন। তাঁরা কোনোভাবেই ঝুঁকির বাইরে নন।

এসব কারণে সংঘবদ্ধ অপরাধ ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের নিয়ে অনুসন্ধান করার কাজটি হয়ে ওঠে জটিল ও সূক্ষ্ম। এই বিষয় নিয়ে কাজ করতে গেলে একজন সাংবাদিককে সব সময় সতর্ক থাকতে হয় এবং চিন্তা করে এগোতে হয়। বিশ্বের অনেক দেশেই হারিয়ে যাওয়া মানুষ নিয়ে বড় বড় অনুসন্ধান হয়েছে। আমরা এই গাইডে তুলে ধরেছি তেমন কিছু উদাহরণ, গবেষণাসূত্র, প্রাসঙ্গিক সংগঠনের পরিচিতি এবং মাঠপর্যায়ে রিপোর্টিংয়ের পরামর্শ।

গাইডটি প্রকাশিত হয়েছে জিআইজেএন ও রেজিলিয়েন্স ফান্ড আয়োজিত “ডিগিং ইনটু ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স” ওয়েবিনার সিরিজের অংশ হিসেবে। এই সিরিজের বিষয় ছিল সংঘবদ্ধ অপরাধ ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের নিয়ে অনুসন্ধান। এটি দেখতে পাবেন ইংরেজি ও স্প্যানিশ ভাষায়। ফরাসি ভাষায় আয়োজিত ওয়েবিনারে উঠে এসেছে নির্দিষ্ট কিছু ঘটনার কথা। এবং বিভিন্ন ভাষায় প্রচারিত হয়েছে: কীভাবে খুঁজবেন নিখোঁজদের।

সূচিপত্র

কেস স্টাডি
দরকারি গাইড ও সংগঠন
রিপোর্টিং টিপস

ঘটনাস্থল সম্পর্কে জানুন
নিরাপদ থাকা ও রাখা
তথ্য দেবে কারা
সূত্র খুঁজবেন কী করে
সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ
যখন কাজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে
মানসিকভাবে বিপর্যস্তদের নিয়ে কাজ
নিজের যত্ন

কেস স্টাডি
নিখোঁজ হয়ে যাওয়া মানুষদের নিয়ে সাম্প্রতিক কিছু অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বাছাই করা হয়েছে এখানে।

সার্চিং উইথ দ্য মাদারস অব মেক্সিকো’স ডিজঅ্যাপিয়ার্ড (২০২০)। এই প্রতিবেদনে, মেক্সিকোতে গুম বা নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছে দ্য নিউ ইয়র্কা, যারা এখনো হারানো স্বজনকে খুঁজে পেতে মরিয়া।
মিসিং ইন ফ্রান্স: দ্য প্লাইট অব ভিয়েতনামিজ চিলড্রেন হু আর ট্রাফিকড ইনটু ইউরোপ (২০২০)। ভিয়েতনামের শিশুরা কীভাবে নিখোঁজ হচ্ছে, তা নিয়ে এই অনুসন্ধান করেছেন সাংবাদিকেরা। এতে দেখা গেছে, ফ্রান্সের একটি বিমানবন্দর থেকে তুলে নিয়ে এই শিশুদের ইউরোপের অন্য দেশে পাচার করা হয়েছে।
রুয়ান্ডায় গণহত্যা, ফ্রান্সে আত্মগোপন ও পিছে লেগে থাকা এক সাংবাদিক (২০২০)। এই লেখায় জিআইজেএন কথা বলেছে থিও এঙ্গেলবার্টের সঙ্গে। যিনি বেশ কয়েক বছর ধরে অনুসন্ধান চালিয়ে খুঁজে বের করেছিলেন রুয়ান্ডার সাবেক সেনা কর্মকর্তা অ্যালোয়েস নিউইরাগাবোকে। যিনি দীর্ঘ সময় ধরে আত্মগোপন করে ছিলেন।
সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে যেভাবে বেরিয়ে এলো ২০০০ গুপ্ত কবর (২০১৯)। তথ্য অধিকার আইন প্রয়োগ, ডেটা বিশ্লেষণ ও পরিবারের সদস্যদের সাহায্য নিয়ে মেক্সিকোতে নিখোঁজ হওয়া মানুষদের ওপর অনুসন্ধান চালিয়েছিলেন মার্সেলা তুরাতি ও তাঁর দল। এই লেখায় তিনি সেই অনুসন্ধান নিয়ে কথা বলেছেন জিআইজেএন-এর সঙ্গে।
মিসিং অ্যান্ড মার্ডারড: দ্য আনসলভড কেসেস অব ইনডিজিনাস ওমেন অ্যান্ড গার্লস (২০১৭-১৮)। সিবিসি নিউজের এই পুরস্কারজয়ী পডকাস্টে উন্মোচিত হয়েছে, কানাডার আদিবাসী নারীদের ব্যাপক হারে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাগুলো কেন অমীমাংসিত থেকে গেছে।
জোনাস বার্গোস: ট্র্যাপড ইন আ ওয়েব অব লাইভস (২০১৩)। ফিলিপিনো বিদ্রোহী জোনাস বার্গোসকে নিয়ে এই অনুসন্ধান করেছেন র‌্যাপলারের গ্লোরিয়া গ্লেন্ডা।
দ্য সার্চ: মিসিং অ্যান্ড মার্ডারড ইনডিজিনাস ওমেন (২০১৯)। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আদিবাসী নারীদের নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া নিয়ে এই তথ্যচিত্র তৈরি করেছে আল-জাজিরা।
দ্য এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স অব দ্য আয়োজিনাপা স্টুডেন্টস (২০১৭)। ডেটা মাইনিং ও থ্রিডি ইন্টারঅ্যাকটিভ মডেলিং ব্যবহার করে ২০১৪ সালে মেক্সিকোতে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ৪৩ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে অনুসন্ধান করেছে ফরেনসিক আর্কিটেকচার ।
হাউ দ্য ইউএস ট্রিগার্ড আ ম্যাসাকার ইন মেক্সিকো (২০১৭)। মেক্সিকোর আলেন্দে-তে মাদক সংশ্লিষ্ট গণহত্যা  এবং এর ফলে কয়েক শ মানুষ নিখোঁজ হয়ে যাওয়া নিয়ে এই রিপোর্ট করেছিলেন জিনজার থম্পসন ও আলেক্সান্দ্রা জানিক ভন বারট্রাব।
হোয়াই আর ১০,০০০ মাইগ্রেন্ট চিলড্রেন মিসিং ইন ইউরোপ? (২০১৬)। এখানে শিশু পাচার ও হারিয়ে যাওয়া অভিবাসীদের নিয়ে তৈরি ইউরোপোলের পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখেছে বিবিসি।
দ্য রুম অব বোনস (২০১৫)। এল সালভাদরে তিন দশকের সামাজিক অস্থিরতা ও সহিংসতার মধ্যে চার মা খুঁজে বেড়াচ্ছেন তাঁদের সন্তানদের মৃতদেহ। এমন এক পরিস্থিতি নিয়ে নির্মিত হয়েছে এই তথ্যচিত্র।
লস্ট গার্লস অব ইন্দোনেশিয়া অ্যামং ৬১,০০০ ডেড অ্যান্ড মিসিং মাইগ্রেন্টস (২০১৮)। এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ইন্দোনেশিয়ার সেসব মেয়ের কথা, যাদের বিদেশে চাকরি দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ঘরছাড়া করা হয়েছে এবং আর কখনো দেখা যায়নি।

দরকারি গাইড ও সংগঠন
ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অন মিসিং পিপল (আইসিএমপি) বিশেষভাবে নজর দেয় নিখোঁজ ব্যক্তিদের মামলাগুলোর দিকে। এই বিষয় সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক আইনকানুন সম্পর্কে তাদের ভালো দখল আছে।

অফিস অব দ্য ইউনাইটেড নেশনস হাইকমিশনার ফর হিউম্যান রাইটস (ওএইচসিএইচআর) কাজ করে অভিবাসী ও অপরাধের শিকার ব্যক্তিদের সঙ্গে হওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে। গুম বা অপহরণের শিকার হয়ে যাঁরা হারিয়ে গেছেন, তাঁদের জন্য একটি কমিটিও আছে এই প্রতিষ্ঠানের।
অভিবাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকা শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের কেউ মারা গেছে কি না কিংবা নিখোঁজ হয়েছে কি না, তার খবর রাখছে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম)-এর দ্য মিসিং প্রজেক্ট।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও বলপূর্বক নিখোঁজ বা গুম হওয়া ব্যক্তিদের ঘটনা নিয়ে কাজ করে।
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স জার্নালিস্টস গাইড টু অর্গানাইজড ক্রাইম। এই গাইড থেকে জানা যাবে, সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র কীভাবে সাংবাদিকদের কাজ বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) নিখোঁজ সাংবাদিকদের নিয়ে বেশ কিছু অনুসন্ধান ও রিপোর্ট করেছে।
কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) নিখোঁজ সাংবাদিকদের নিয়ে প্রকাশিত সব প্রতিবেদন এক জায়গায় সংরক্ষণ করে। এবং তাদের এই বিষয়ে তাদের একটি ডেটাবেসও আছে।
মেক্সিকোতে, ডেটা ব্যবহার করে গণকবর খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করেছে হিউম্যান রাইটস ডেটা অ্যানালাইসিস গ্রুপ (এইচআরডিএজি)। তারা গুম বা অপহরণের কারণে নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে অনুসন্ধান করে এবং নির্দিষ্ট দেশ ধরে ধরে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
আর্জেন্টাইন ফরেনসিক অ্যানথ্রোপোলজিস্টস টিম (ইএএএফ), নিখোঁজ ব্যক্তিদের শনাক্ত ও খুঁজে বের করতে বিজ্ঞানভিত্তিক ফরেনসিক কৌশল ব্যবহার করে।
ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেডক্রস (আইসিআরসি) বিশ্বজুড়ে গুম বা নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার দিকেও নিবিড় নজর রাখে।

রিপোর্টিং টিপস
এলাকাটি সম্পর্কে জানুন
কোনো নির্দিষ্ট কেস নিয়ে কাজ করার সময়, সেই এলাকা সম্পর্কে ভালোমতো জেনে নেওয়া জরুরি। এতে করে আপনি কাজের ঝুঁকি সম্পর্কে ধারণা নিতে পারবেন। একই সঙ্গে বুঝতে পারবেন: সেখানে কী ধরনের সংগঠিত অপরাধী চক্র সক্রিয় আছে এবং কারা জড়িত থাকতে পারে। একই ধরনের ঘটনা আগেও ঘটলে, সেই মামলাগুলো থেকে আপনার অনুসন্ধান শুরু করতে পারেন।  সেই এলাকায় আগে কাজ করেছে, এমন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলুন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে খোঁজাখুঁজি করুন এবং সেখানকার অপরাধ জগতের কর্মকাণ্ড বোঝার চেষ্টা করুন।

বিশ্বস্ত কোনো সূত্রের সঙ্গে যোগাযোগ না করে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে যাবেন না। এবং প্রয়োজন হলে কীভাবে দ্রুত সেই এলাকা ছেড়ে যাবেন, তার একটি বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা তৈরি রাখুন।

নিরাপদ থাকা ও রাখা
সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র নিয়ে অনুসন্ধান শুরুর সময়, আপনার নিজের ও সূত্রদের নিরাপত্তার দিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এ জন্য আপনার প্রয়োজন হবে একটি শক্তিশালী নিরাপত্তা পরিকল্পনা। প্রথমত, আপনাকে ঠিক করতে হবে: আপনি কী ধরনের অনুসন্ধান করতে চান এবং আপনিই এই নির্দিষ্ট অনুসন্ধানটি করার জন্য সঠিক সাংবাদিক কি না।

এরপর, আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে: আপনি কীভাবে নিরাপদে তথ্য সংরক্ষণ করবেন এবং আপনার দল ও সাক্ষাৎকারদাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। আপনার কম্পিউটার বা ফোনে সংবেদনশীল কোনো তথ্য নিয়ে চলাচল করবেন না। কোথাও যাওয়ার সময় অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে: আপনি কোথায় যাচ্ছেন, তা যেন আপনার দলের অন্য সদস্যরা জানেন। কোনো বিপদের মুখে পড়লে কীভাবে তাঁদের সতর্কসংকেত দেবেন, তা-ও আগে থেকে ঠিক করে রাখুন।

অনুসন্ধান প্রকাশিত হওয়ার পর সোর্সদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তারা হয়তো আপনার এই কাজের জন্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তাদেরকে হামলার লক্ষ্য বানানো হতে পারে। বিষয়-সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর (যেমন: কোনো এনজিও) সঙ্গে জোট বেঁধে কাজ করলে আপনার সূত্রের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সহজ হতে পারে। তখন আপনিও সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন, কখন প্রতিবেদনটি প্রকাশ করলে ভালো হয়। সাধারণভাবে, আপনার প্রতিবেদনে সূত্রের এমন কোনো ব্যক্তিগত তথ্য রাখবেন না, যাতে করে তিনি বা তাঁর স্বজনেরা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারেন। বিশেষভাবে, এমন ছবি ও ভিডিও-র ব্যাপারে সতর্ক থাকুন, যেখান থেকে বোঝা যেতে পারে: কারা আপনার সূত্র এবং তারা কোথায় আছে। সাক্ষাৎকারদাতা কেমন পোশাক পরে ছিলেন, সেখান থেকেও তাঁর পরিচয় সম্পর্কে ধারণা মিলতে পারে। আরও তথ্য লুকিয়ে থাকতে পারে আপনার ছবির মেটাডেটায়।
তথ্য দেবে কারা
অন্য যেকোনো অনুসন্ধানের মতো, এখানেও আপনাকে শুরু করতে হবে সূত্র চিহ্নিত করা ও গড়ে তোলা দিয়ে। কী ঘটেছিল—এই প্রশ্ন সামনে রেখে যাবতীয় তথ্য সবার আগে এক জায়গায় করুন। তারপর আপনার কাজ শুরু করুন। বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে আপনি প্রাথমিক তথ্য পেতে পারেন:

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন
আদালতের নথিপত্র
তথ্য অধিকার আইনের আবেদন
প্রত্যক্ষদর্শী
এনজিও
আইনজীবী
পুলিশ
নিখোঁজ ব্যক্তির বন্ধুবান্ধব ও পরিবার

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে, নিখোঁজ ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের কাছে স্থানীয় অপরাধ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তথ্য থাকে। হয়তো দেখবেন, সেই এলাকায় অপরাধী চক্রগুলো কীভাবে কাজ করে, সে সম্পর্কেও তাদের জানাশোনা আছে। আবার কখনো কখনো নিখোঁজ ব্যক্তিকে রক্ষা করার জন্য তার প্রিয়জনেরা অনেক তথ্য বাদ দেয় বা গোপন করে। সব খুঁটিনাটিই সাংবাদিকদের বিবেচনা করতে হবে গুরুত্বের সঙ্গে। গুম বা অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের আত্মীয়স্বজন ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হিসেবে কাজ করবে। তবে তাদের দেওয়া সেই তথ্যগুলো আপনাকে যাচাই করে নিতে হবে বিশ্লেষণী দৃষ্টি দিয়ে।

অন্যান্য স্থানীয় সূত্র

আপনার অনুসন্ধানের এলাকা ছেড়ে অন্য কোথাও চলে গেছে, এমন ব্যক্তিরা হয়তো আরও বেশি খোলামেলা কথা বলতে আগ্রহী হবে। কারণ, তাদের ঝুঁকি তুলনামূলক কম। এমন সূত্র ও তথ্যদাতাদের একটি ম্যাপ তৈরি করে নিলে আপনার সুবিধা হতে পারে। কারাগারের বন্দিরাও আপনার গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হতে পারে। কারণ, অপরাধী চক্রের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করার অভিজ্ঞতা তাদের আছে। তবে তাদের কাছ থেকে পাওয়া প্রতিটি তথ্য সব সময় ক্রসচেক করে নেওয়া উচিত।

সোশ্যাল মিডিয়া

ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত (নিখোঁজ বা সন্দেহভাজন ব্যক্তি) মানুষদের কর্মকাণ্ড নজরে রাখার ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে প্রায়ই অনেক সহায়তা পেতে পারেন। এখান থেকে আপনি সেই অঞ্চলের অপরাধী কর্মকাণ্ড সম্পর্কেও অনেক প্রাসঙ্গিক তথ্য পেতে পারেন। মাঠপর্যায়ের সূত্রদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা তথ্য যাচাই করে নেওয়ারও একটি ভালো মাধ্যম সোশ্যাল মিডিয়া।

সূত্র খুঁজবেন কোথায়
কিছু ক্ষেত্রে, নিখোঁজ ব্যক্তিরা তাঁদের সোশ্যাল নেটওয়ার্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বা সূত্র রেখে যান। পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের মধ্যে তাঁরা শেষ কার সঙ্গে কথা বলেছেন, তা খুঁজে বের করার মাধ্যমে আপনি আপনার কাজ শুরু করতে পারেন, বিশেষভাবে আধুনিক দাসপ্রথা ও মানব পাচারের ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে।

আপনি যদি নিখোঁজ ব্যক্তির সেলফোন বা অন্য কোনো মোবাইল ডিভাইস ট্র্যাক করতে পারেন, তাহলে তাঁর অবস্থান সম্পর্কে অনেক মূল্যবান তথ্য পাবেন। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের তথ্য থেকেও বেরিয়ে আসতে পারে যে নিখোঁজ ব্যক্তিটি কোথায় আছেন বা তাঁদের ভাগ্যে কী ঘটেছে।

আরও তথ্য পাওয়ার জন্য এবং নতুন সূত্রদের আকৃষ্ট করার জন্য, আপনি প্রাথমিক কিছু তথ্য দিয়েও একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারেন। কিন্তু এ-ও মাথায় রাখবেন: এমন প্রতিবেদন বাড়তি ঝুঁকিও তৈরি করবে।
সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ
কখনো কখনো আপনার অনুসন্ধান চলার সময়ই কর্তৃপক্ষ বা অন্য কোনো গ্রুপ একটি মৃতদেহ খুঁজে পেতে পারে। আপনি যে নিখোঁজ ব্যক্তিকে নিয়ে অনুসন্ধান করছেন, মৃতদেহটি তারই কি না, তা যাচাই করে দেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি লাশের গায়ে থাকা জামাকাপড় বা ট্যাটুর বর্ণনা মিলে যায়, বা তার সঙ্গে সঠিক শনাক্তকরণ কাগজপত্র পাওয়া যায়, তারপরও আপনার সেটি ভালোমতো যাচাই করা উচিত। কারণ, দুজন মানুষের মধ্যে একই রকম শারীরিক বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে বা তাদের জামাকাপড় ও শনাক্তকরণ কাগজপত্র বদলে দেওয়া হতে পারে। আদর্শ পদ্ধতি হলো: প্রতিবেদন প্রকাশের আগে আপনি ফরেনসিক ভেরিফিকেশন করিয়ে নেবেন।

অনেক দেশেই, পুলিশ খুব বিশদভাবে তদন্ত করে না এবং তাদের বাজেট, সক্ষমতা বা ইচ্ছার ঘাটতি থাকে। তাদের কাছে প্রায়শই কোনো ডিএনএ ল্যাব বা জটিল মামলা নিয়ে কাজ করার মতো পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ থাকে না। এমন জায়গায় তদন্তের ফলাফল বাইরের কোনো বিশেষজ্ঞকে দিয়ে যাচাই করে নেওয়ার চেষ্টা করুন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বা সরকারি তদন্তকারীদের কাছ থেকে যেসব ফরেনসিক প্রমাণ ও বিশ্লেষণ পাবেন, সেগুলোর ব্যাপারে সংশয়ী থাকুন। এখানে কোনো স্বার্থের সংঘাত বা দুর্নীতির সংযোগ থাকতে পারে, যা হয়তো ফলাফলকে প্রভাবিত করেছে।
কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ
কিছু ক্ষেত্রে, সাংবাদিকদের সতর্ক থাকতে হবে কর্তৃপক্ষের ব্যাপারেও। মাথায় রাখতে হবে যে, তাদেরও অপরাধীদের সঙ্গে সংযোগ থাকতে পারে। ঘটনা আসলেও এমন কি না, তা জানার সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন এবং অন্য যেকোনো সূত্রের মতো তাদের কথাগুলোও যাচাই করে নিন। তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেও আপনি সহায়ক নথিপত্র পেতে পারেন।

তবে কিছু ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষকে সহায়ক ভূমিকাতেও দেখা যায়। সেসব ক্ষেত্রে এমন কোনো তথ্য প্রকাশের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন, যার কারণে তাদের অনুসন্ধান বাধাগ্রস্ত হতে পারে বা নিখোঁজ ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে যেতে পারে।

মানসিকভাবে বিপর্যস্তদের নিয়ে কাজ
এ ধরনের অনেক প্রতিবেদনের কেন্দ্রে থাকে স্বজন হারানোর কষ্ট। তাই আপনাকে অবশ্যই সংবেদনশীল হতে হবে। নিখোঁজ ব্যক্তির পরিবার বা প্রিয়জনের সঙ্গে কথা বলার সময় ভাষার ব্যবহার নিয়ে সতর্ক থাকুন। যদি কোনো পরিবার বিশ্বাস করে, হারানো ব্যক্তিটি এখনো জীবিত, তাহলে তাদের সঙ্গে “অতীতকাল সূচক ভাষায়” তা কথা বলবেন না।

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য সততা ও স্বচ্ছতা থাকা জরুরি। কথা বলার আগেই পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে দেওয়া উচিত, সাংবাদিক হিসেবে আপনি একই বিষয় নিয়ে অন্য কোনো সোর্স—যেমন অপরাধী চক্রের সদস্য বা এমন কারও সঙ্গে কথা বলেছেন কি না। এতে সেই পরিবারটি বুঝতে পারবে, ভবিষ্যতে কী হতে পারে। তবে যাচাই করা হয়নি, এমন কোনো তথ্য তাদের সঙ্গে শেয়ার করবেন না। তাদের কোনো মিথ্যা আশা দেবেন না।

আগে সংঘবদ্ধ অপরাধের শিকার হয়েছেন, এমন কোনো মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের সময় খুবই স্পষ্টভাবে বলুন: আপনি কে এবং কী করছেন। আপনার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সেই ব্যক্তির নতুনভাবে ট্রমার শিকার হওয়ার ঝুঁকিও থাকে। এবং সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে, তাঁরা হয়তো ভয় পেয়ে আবার লুকিয়ে যেতে পারেন। সোর্সরা যেন বিপদে না পড়েন, সে জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন।

সাংবাদিক হিসেবে আপনার সীমাবদ্ধতার কথা খেয়াল রাখুন। এবং রাখতে পারবেন না, এমন কোনো ওয়াদা করবেন না। কীভাবে কোনো ভিকটিমের সাক্ষাৎকার নেবেন, তা আগে থেকেই ভেবে নেওয়াটা জরুরি। কীভাবে এমন ভিকটিম ও সারভাইভারদের সঙ্গে কাজ করতে হয়, তা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শ পাবেন ডার্ট সেন্টারের এই টিপশিটে। আরও পড়ুন: ভুক্তভোগী ও বেঁচে ফেরাদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার ক্ষেত্রে মেক্সিকান সাংবাদিক মার্সেলা তুরাতির পরামর্শ।
নিজের যত্ন
নিখোঁজ খোঁজ করার কাজটা হয়ে উঠতে পারে ক্লান্তিকর, হতাশাজনক ও ঝুঁকিপূর্ণ। কিছু ক্ষেত্রে, গণকবরে গিয়েও খোঁজাখুঁজি করতে হতে পারে সাংবাদিকদের, দেখতে হতে পারে বীভৎস সব দৃশ্য। অথবা এমন কোনো ভিকটিমের সঙ্গে কাজ করতে হতে পারে, যার ওপর চালানো হয়েছে ভয়াবহ শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন।

এই ঘটনাগুলো প্রচণ্ড মানসিক চাপ তৈরি করতে পারে। আপনি যদি খুব শক্ত মনেরও হন, তবু ট্রমা কাটিয়ে উঠতে বাইরের কারও সহায়তা দরকার হতে পারে। সহকর্মী, বন্ধু ও ভালো থেরাপিস্টের সাপোর্ট নেটওয়ার্ক তৈরির মাধ্যমে, আপনি এমন কাজের জন্য নিজেকে আগেভাগেই তৈরি রাখতে পারেন।

গাইডটি তৈরি করেছেন জিআইজেএন-এর সম্পাদনা সহযোগী হানা কুগানস। তিনি সিটি ইউনিভার্সিটি থেকে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন। হংকংয়ে গবেষক হিসেবে কাজ করেছেন বন্য প্রাণী পাচারসংক্রান্ত অপরাধ নিয়ে। কাজ করেছেন যুক্তরাজ্যের চ্যানেল ফোর-এর বিভিন্ন প্রোগ্রামের জন্যও। বর্তমানে আছেন লন্ডনে।

এই গাইডে অবদান রাখার জন্য মার্সেলা তুরাতিকে বিশেষ ধন্যবাদ। তুরাতি একজন ফ্রিল্যান্স অনুসন্ধানী সাংবাদিক, যিনি নিখোঁজ মানুষ, বলপূর্বক গুম, অভিবাসীদের গণহত্যা, গণকবর এবং সহিংসতার ঘটনা অনুসন্ধানের জন্য বিখ্যাত।

গাইডটি প্রকাশিত হয়  ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে এবং আরও কিছু রিসোর্স যোগ করে ডিসেম্বর ২০২০-এ  হালনাগাদ করা হয়।

লিখুন আমাদের জন্য!

বিশ্বজুড়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার চর্চা নিয়ে লেখা প্রকাশ করে গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম নেটওয়ার্ক। আমরা সবসময়ই অনুসন্ধানের নিত্যনতুন কৌশল নিয়ে আর্টিকেল খোঁজ করি। বিষয়বস্তু হতে পারে: পরামর্শ, বিভিন্ন টুলের ব্যবহার, কেস স্টাডি, সাংবাদিকতার নতুন উদ্ভাবন বা টেকসই মডেল, ইত্যাদি।  

আমাদের প্রদায়কদের মধ্যে আছেন সাংবাদিক, শিক্ষক, মিডিয়া প্রশিক্ষক ও জিআইজেএন-এর সদস্যরা। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা ও সেই সংশ্লিষ্ট প্রাসঙ্গিক ক্ষেত্রগুলো নিয়ে তাদের রয়েছে বিশেষ জ্ঞান। আমাদের প্রতিবেদনগুলি সাধারণত ৫০০-১৫০০ শব্দের মধ্যে হয়। লেখার জন্য টাকা প্রদানের বিষয়টি প্রতিযোগিতামূলক। এটি নির্ভর করে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ওপর। 

বিশ্বের ১০০টি দেশ থেকে পাঠকরা নিয়মিত আমাদের সাইট ভিজিট করেন। ফলে, আমরা প্রতিশ্রুতি দিতে পারি: আপনার লেখা বৈশ্বিক পর্যায়ের পাঠকের কাছে পৌঁছাবে। আমাদের লক্ষ্য, বিশ্বজুড়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার চর্চা জোরদার ও তার মানোন্নয়নে কাজ করা। লেখা প্রকাশের বেলায়ও আমরা এই বিষয়কে প্রাধান্য দিই। 
আমাদের পছন্দের জায়গা
জিআইজেএন-এর পাঠকদের মধ্যে আছেন সাংবাদিক, অনুসন্ধানী সাংবাদিক, সাংবাদিকতার শিক্ষার্থী, এবং গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন অলাভজনক সংগঠনের কর্মীরা। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই পাঠকগোষ্ঠী যেন বিভিন্ন অনুসন্ধানের বিষয় ও পদ্ধতি সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে পারেন, সেজন্য আমরা কেস স্টাডি ধাঁচের লেখা খুবই পছন্দ করি। এছাড়া, আমরা বিভিন্ন অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার গ্রুপ বা মানুষদের পরিচিতি প্রকাশ করি। এর মাধ্যমে বোঝা যায়: কিভাবে বিশ্বজুড়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা নানা বিষয় নিয়ে কাজ করছেন ও টিকে আছেন। আমরা খুব আগ্রহ নিয়ে খেয়াল করি ডেটা সাংবাদিকতা ও ডেটা ভিজ্যুয়ালাইজেশন বিষয়টিও। আমাদের আগ্রহের বিষয়গুলির মধ্যে আরো আছে: সাংবাদিকতার আধুনিক সব টুল, টিকে থাকার কৌশল, কিভাবে আকর্ষণীয় ডিজিটাল প্রতিবেদন তৈরি করা যায় বা আরো ভালোভাবে লেখা যায়। 

আমাদের মূল পছন্দের জায়গা, অনুসন্ধানের মৌলিক বিষয়আশয়। যার মধ্যে আছে: অনলাইনে খোঁজাখুঁজি, ফলো দ্য মানি, টেকসই প্রতিষ্ঠান ও জটিল নথিপত্র নিয়ে কাজ করা। মজার ও উদ্ভাবনী কোনো প্রতিবেদন নিয়ে কাজ করছেন, এমন অনুসন্ধানী সাংবাদিকের সঙ্গে প্রশ্নোত্তরও আমরা খুব ভালোভাবে গ্রহণ করি। মাল্টিমিডিয়া কনটেন্টের বুদ্ধিদীপ্ত ও উদ্ভাবনী ব্যবহার, অনলাইন ডিজাইন, সহযোগিতা, ছদ্মবেশে রিপোর্টিং ইত্যাদি বিষয়ও আমাদের পাঠকরা পছন্দ করেন। এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে (আফ্রিকা, এশিয়া, আমেরিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য) আমাদের সহকর্মীরা যে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, সে সংক্রান্ত গল্পগুলোও আমাদের জন্য বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক। 

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বলতে আমরা কী বুঝি, সে ব্যাপারে জিজ্ঞাসা থাকলে দেখতে পারেন এই প্রতিবেদন ও ভিডিও। 
প্রদায়ক হতে আগ্রহী? আমাদের এখানে লেখা পাঠাতে চাইলে, সংক্ষেপে লেখাটির একটি বিবরণ দিন। যেখানে থাকবে: শিরোনাম, প্রতিবেদনটি কী বিষয়ে, আপনি এটি লেখার জন্য কার কার সাথে কথা বলবেন এবং কেন আপনিই এটি লেখার জন্য সঠিক ব্যক্তি। সঙ্গে আপনার সাম্প্রতিক কিছু কাজের লিংক ও সিভি মেইল করুন এই ঠিকানায়: hello@gijn.org। মূল সাইটের জন্য লিখতে চাইলে সেটির অবশ্যই আন্তর্জাতিক প্রাসঙ্গিকতা থাকতে হবে এবং এটি ইংরেজি ভাষায় হতে হবে। তবে ভালো লেখার জন্য, আমরা সব সময়ই আমাদের ১০ জন আঞ্চলিক সম্পাদকের সহায়তা নেই সেটি অনুবাদ ও সম্পাদনার জন্য। 
লেখার ধারণা
নিচে থাকছে আমাদের সাম্প্রতিক প্রকাশিত কিছু প্রতিবেদনের উদাহরণ। এখান থেকে আপনি আমাদের লেখার ধরন সম্পর্কে ধারনা পাবেন। এটি হবে সহজ, সাধারণ, এবং সঙ্গে থাকবে অনেক প্রত্যক্ষ উদাহরণ। 
টিপস ও টুলস
এই লেখায় পাবেন ওপেন সোর্স টুল ব্যবহার করে ঘরে বসে রিপোর্টিংয়ের ৬টি পরামর্শ। ফরেনসিক পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকাণ্ড কাভার করার কৌশল আলোচিত হয়েছে এই লেখায়। অভিজ্ঞ সাংবাদিকরা তাদের কাজে কোন ধরনের টুল ব্যবহার করেন, সেই সংক্রান্ত সিরিজটি আমাদের পাঠকরা অনেক পছন্দ করেন। 
অনুসন্ধান পদ্ধতি
জিআইজেএন-এর “হাউ দে ডিড ইট” সিরিজে নজর দেওয়া হয় নির্দিষ্ট একেকটি রিপোর্টিং প্রকল্পের দিকে। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কিভাবে আদিবাসীদের কাছ থেকে পাওয়া জমি থেকে মুনাফা করেছে, বা কিভাবে দ্য করেসপনডেন্ট উন্মোচন করেছে ইউটিউবে ডানপন্থী উগ্রবাদের চিত্র। এসব লেখায় উঠে আসে বিভিন্ন অনুসন্ধান পদ্ধতির কথা। যেমন কিভাবে রিপোর্টাররা মোবাইল ফোনে জরিপ চালিয়ে অনুসন্ধান করছে দক্ষিণ সুদানের চলমান দ্বন্দ্ব-সহিংসতা নিয়ে। 
কেস স্টাডি
অনুসন্ধান করতে গিয়ে কী ধরনের শিক্ষা পাওয়া গেছে, তার কেস স্টাডিও আমরা পছন্দ করি। যেমন ওসিসিআরপি, যুক্তরাজ্যের আদালতে কিভাবে নিজের স্বপক্ষে যুক্তি দিয়েছিল; বা হাঙ্গেরিতে, আমাদের এক সদস্য সংগঠন কিভাবে সফলতার সাথে ক্রাউডফান্ডিং ক্যাম্পেইন চালিয়েছে।
প্রোফাইল, উদ্ভাবনী প্রবণতা ও প্রকল্প
ভালো কোনো লেখার ধারণা পাওয়ার জন্য একটি আদর্শ জায়গা হতে পারে বিভিন্ন আঞ্চলিক সম্মেলন। অনেক সময় আঞ্চলিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে করা প্রতিবেদন বা দেশ-ভিত্তিক কোনো প্রকল্পেরও আন্তর্জাতিক প্রাসঙ্গিকতা থাকে। এধরনের কোনো ইন-ডেপথ বা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার প্রকল্পও আমাদের আগ্রহের জায়গা। যেমন, এই লেখায় পাবেন অস্ট্রেলিয়ার এক আদিবাসী সাংবাদিকের ব্যক্তিগত বোঝাপড়া, এবং ইংরেজি, কিভাবে বৈশ্বিক সংবাদ ভাষ্য তৈরি করে দিচ্ছে, তা নিয়ে বিশ্লেষণ।
সারসংক্ষেপ ও “তালিকা”
নানা বিষয়ের তালিকা ও সারসংক্ষেপ নির্ভর প্রতিবেদনও (যেমন শীর্ষ ১০ পরামর্শ) আমাদের পছন্দের বিষয়। এখানে দেখতে পারেন সাম্প্রতিক কিছু বৈশ্বিক পডকাস্ট শোনার পরামর্শ, ভুয়া তথ্যের নেটওয়ার্ক উন্মোচন করার টুল ও কৌশল, এবং অপরাধস্থল থেকে কিভাবে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করবেন, তার পরামর্শ। 
রিসোর্স সেন্টার গাইড ও হাউ টু
জিআইজেএন, একটি জনপ্রিয় অনলাইন রিসোর্স সেন্টার পরিচালনা করে। যেখানে আছে শত শত টিপশিট, রিপোর্টিং গাইড, ভিডিও ও আরো অনেক কিছু। কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কি বাদ পড়ে গেল?

গ্লোবাল শাইনিং লাইট অ্যাওয়ার্ড

English

২০২৩ গ্লোবাল শাইনিং লাইট অ্যাওয়ার্ডের জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে। আবেদনের শেষ সময়: ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, রাত ১১.৫৯ মিনিট (ইস্টার্ন স্ট্যান্ডার্ড টাইম)।

উন্নয়নশীল বা রূপান্তরের পথে থাকা দেশগুলোতে হুমকি, কারাবরণের ঝুঁকি বা বিপদের মধ্যে থেকে যে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করা হয়, তার সম্মানে প্রতি দুই বছর পর গ্লোবাল শাইনিং লাইট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম নেটওয়ার্ক। মহামারির দীর্ঘ  বিরতির পরে, আমরা পুরস্কারটি ফিরিয়ে আনতে পেরে আনন্দিত, যা ১ জানুয়ারি, ২০২১ থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২ পর্যন্ত সময়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের জন্য প্রযোজ্য।

পুরস্কারটি দেওয়া হয় দুটি বিভাগে: ছোট ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান (যেখানে ফ্রিল্যান্সসহ কর্মী সংখ্যা সর্বোচ্চ ২০ জন বা তার কম) এবং বড় প্রতিষ্ঠান (যেখানে কর্মী ২০–এর বেশি)। শ্রেষ্ঠ হিসেবে নির্বাচিত সাংবাদিকেরা পাবেন সম্মাননা স্মারক, ২৫০০ মার্কিন ডলার, এবং সুইডেনের গোথেনবার্গে অনুষ্ঠেয় ২০২৩ গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম কনফারেন্সে গিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমন্ত্রিত শত শত সহকর্মীর সামনে এই পুরস্কার গ্রহণের সুযোগ।

অনেক বেশি আবেদনের কারণে, আমরা আপনাদের রিপোর্টের অনলাইন লিংক পাঠানোর অনুরোধ জানাচ্ছি। কাজটির যদি কোনো উন্মুক্ত লিংক না থাকে, তাহলে আপনি সেটি গুগল ড্রাইভ বা ড্রপবক্সে আপলোড করুন, এবং সেই লিংকটি এই ঠিকানায় শেয়ার করুন: shininglightaward@gijn.org। কোনো সমস্যায় পড়লে, আমাদের ইমেইল করুন। আপনার রিপোর্ট যদি ইংরেজি ছাড়া অন্য কোনো ভাষায় হয়, তাহলে প্রিন্ট বা অনলাইন স্টোরির সঙ্গে অবশ্যই ইংরেজিতে লেখা একটি বিস্তারিত সারাংশ জুড়ে দিতে হবে। প্রতিবেদনটি ব্রডকাস্ট হলে সঙ্গে স্ক্রিপ্টের ইংরেজি প্রতিলিপি যুক্ত করতে হবে।

এই পুরস্কারটি বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। ২০১৯ সালে জমা পড়েছিল ২৯১টি আবেদন। সেগুলোর গুনগত মান ছিল অসাধারণ। ১২টি চূড়ান্ত প্রতিবেদনের মধ্য থেকে বিচারকেরা নির্বাচন করবেন তিনটি পুরস্কার এবং দুইটি শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি। আবেদনের শেষ সময়: ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩।

 
পটভূমি
প্রতিবছর কেবল সাংবাদিকতা করার জন্য বহুসংখ্যক সাংবাদিককে হত্যা করা হয় এবং আরও শত শত সাংবাদিক হামলা, কারাবন্দিত্ব বা হুমকির শিকার হন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় এমন বাধার ঘটনা উন্নয়নশীল বা উদীয়মান দেশগুলোতে অনেক বেশি দেখা যায়, আর দেখা যায় সামরিক সংঘাতের এলাকাগুলোতে। বাধার মুখেও মতপ্রকাশের চেষ্টাকে স্বীকৃতি দিতে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক পুরস্কার রয়েছে।

কিন্তু বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বিশ্বব্যাপী সাংবাদিক এবং গণমাধ্যমের ওপর হামলার ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কারণ,  অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মাধ্যমে তাঁরা উদ্ঘাটন করে চলেছেন সেই সব সত্য, যা ক্ষমতাধর ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য অস্বস্তিকর। সাংবাদিকেরা সামনে তুলে আনছেন রাষ্ট্রব্যবস্থায় জেঁকে বসা দুর্নীতি। তাঁরা জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করছেন গণতন্ত্র এবং উন্নয়নের জন্য মুখিয়ে থাকা সমাজে। কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) বলছে, প্রতিবছর যুদ্ধের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে যত সাংবাদিক খুন হন, তার চেয়ে বেশি খুন হন দুর্নীতি আর রাজনীতি কাভার করতে গিয়ে।

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার বিশ্ব সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে জিআইজেএন সাহসী অনুসন্ধানী সাংবাদিক এবং তাঁদের কাজকে স্বীকৃতি ও সম্মান দিতে পেরে আনন্দিত। এর আগে যাঁরা এই পুরস্কার জিতেছেন, তাঁদের অসাধারণ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সম্পর্কে এখানে জানতে পারবেন।

আবেদনের শর্ত
স্বাধীন ও অনুসন্ধানী সাংবাদিক, দল বা গণমাধ্যমের তৈরি এমন প্রতিবেদন, যা:

উন্নয়নশীল বা রূপান্তরশীল দেশকেন্দ্রিক
১ জানুয়ারি ২০২১ এবং ৩১ ডিসেম্বর ২০২২-এর মধ্যে প্রচারিত বা প্রকাশিত
অনুসন্ধানী ধাঁচের
জনসাধারণের জন্য ক্ষতিকর এমন সমস্যা, অপরাধ বা দুর্নীতি উদ্‌ঘাটন করেছে
তৈরি করতে হয়েছে আটক, কারাবরণ, ভীতি, সহিংসতা এবং হুমকির মুখে থেকে

পুরস্কারের বিভাগ

ছোট এবং মাঝারি আউটলেট (ফ্রিল্যান্সার সহ ২০ বা তার কম কর্মী সহ প্রতিষ্ঠান)
বড় আউটলেট (২০ জনের বেশি কর্মী সহ প্রতিষ্ঠান)

বিচার প্রক্রিয়া
দক্ষ অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সমন্বয়ে তৈরি একটি আন্তর্জাতিক বিচারক-প্যানেল বিজয়ীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। বিচারকেরা, তাদের বিবেচনার ভিত্তিতে অসামান্য কাজের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য একাধিক বিজয়ী নির্বাচন করতে পারেন।

সাবেক বিজয়ী
২০১৯
বড় গণমাধ্যম ক্যাটেগরি
যুগ্ম বিজয়ী: “মার্ডার ইন ম্যানিলা,” র‌্যাপলার (ফিলিপিন্স) 
দল পরিচিতি: প্যাট্রিসিয়া ইভানজেলিস্তা, কার্লো গ্যাবুকো, লিয়ান বুয়েন, র‌্যাম্বো তালাবং, চে হফিলেনা।

ধারাবহিক এই প্রতিবেদন তুলে ধরেছে, ২০১৬ সালে ক্ষমতা নেয়ার পর থেকে দেশটির প্রেসিডেন্ট রডরিগো দুতের্তের তথাকথিত মাদকবিরোধী অভিযানের নামে কীভাবে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। র‌্যাপলারের ছয় মাসব্যাপী এই অনুসন্ধানে শক্তিশালী ইঙ্গিত রয়েছে, যে পুলিশের ভাড়া করা একটি গোষ্ঠীই বিচার বহির্ভূত হত্যা ঘটাচ্ছে।
যুগ্ম বিজয়ী: “#গুপ্তালিকস,” ডেইলি ম্যাভেরিক (স্করপিও ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিট), আমাবুনগানে সেন্টার ফর ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম, নিউজ ২৪, ওপেনআপ, এবং ফাইনান্স আনকভার্ড (দক্ষিণ আফ্রিকা)
দল পরিচিতি: আদি ইয়াল, অ্যাড্রিয়ান ব্যাসন, এঞ্জেলিক সেরাও, অ্যান্টোয়নেট মুলার, ব্রানিস্লাভ “ব্রাঙ্কো” ব্রিকিচ, ক্রেগ ম্যাককুনে, লেস্টার ফ্রিমন (ছদ্মনাম), লিওনেল ফল, মারিয়ান থাম, মিকাহ রেড্ডি, পলি ভ্যান উইক, পিটার–লুই মাইবার, রেবেকা ডেভিস , রিচার্ড পপলাক, স্যালি ইভান্স, স্টেফান্স ব্রামার, স্টিফেন “স্যাম” সোল, সুসান কমরি, টাবেলো টিমসে।

নব্বইয়ের দশকে ভারত থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা পাড়ি জমান গুপ্তা পরিবারের  তিন ভাই। অল্প দিনেই গড়ে তোলেন সম্পদের বিশাল সাম্রাজ্য। যৌথ এই অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার ঘনিষ্ঠ এই ব্যবসায়ী পরিবার কীভাবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে জিম্মি করে জনগণের টাকা সরিয়ে নিয়েছে নিজেদের কোম্পানিতে। গুপ্তালিকস প্রকাশ হওয়ার কিছুদিন পর জ্যাকব জুমা পদত্যাগ করেন। এই অনুসন্ধানটি এগিয়েছে গুপ্তা পরিবারের ফাঁস হওয়া অসংখ্য ইমেইলের সূত্র ধরে।
সাইটেশন অব এক্সেলেন্স: “দ্য আজারবাইজানি লন্ড্রোম্যাট,” অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) এবং আজারবাইজানের বেশকিছু গণমাধ্যম (আজারবাইজান)
দল পরিচিতি: ইলগার আগা, রোমান আনিন, আনাবা বাবিনেচ, সোফি বেলে, এত্তিলা বিরো, জন ব্রাতানিচ, আনুস্কা ডেলিচ, রিকার্ডো গিনেস, পাভলা হলকোভা, খাদিজা ইসমাইলোভা, এলেনা লোগিনোভা, মিরান্ডা প্যাট্রুসিচ, মদিনা মামাদোভা, পল রাদু, আতানাস চোবানভ, জনি রেট, ক্যারোল কারবেজ , ড্রাগানা পেকো, নাদিয়া শিয়াব, ফ্রেডরিক লিন্ডেনবার্গ, এমি গাই, লায়ন সামারবেল, ইলিয়া লোজোভস্কি, জোডি ম্যাকফিলিপস, ড্রিউ সুলিভান, বার্গিট ব্রুয়ার, লেইলা কামদিচ, রোক্সানা জিপা, আনা পেনারিয়ু এবং অজানা অনেক আজারবাইজানী সাংবাদিক।

সহযোগিতামূলক এই আন্তসীমান্ত অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, আজারবাইজানের ক্ষমতাসীন এলিটরা কীভাবে জটিল একটি মুদ্রাপাচার স্কিম থেকে লাভবান হয়েছেন। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসা ব্যাংকের নথি থেকে দেখা যায়, যুক্তরাজ্যে নিবন্ধিত চারটি ছায়া কোম্পানীর মাধ্যমে তারা ২৯০ কোটি মার্কিন ডলার পাচার করেছেন, মাত্র দুই বছরে।

ছোট গণমাধ্যম ক্যাটেগরি
বিজয়ী: “কার ওয়াশ” এবং “হোয়াইট কলারস”, আইডিএল রিপোর্টেরোস (পেরু+). দল পরিচিতি: কার ওয়াশ সিরিজে ছিলেন: গুস্তাভো গরিত্তি, রোমিনা মেলা, হার্নান পি.

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা কী?

English

সাম্প্রতিক প্রবণতা সম্পর্কে জানতে, আরও দেখুন: দ্য ফিউচার অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা কী? এ নিয়ে কোনো একক ও সর্বসম্মত সংজ্ঞা পাওয়া মুশকিল। তবে পেশাদার সাংবাদিকরা, এর মূল উপাদান নিয়ে মোটামুটি একমত: পদ্ধতি বা পরিকল্পনামাফিক (সিস্টেম্যাটিক) অনুসন্ধান, গভীর (ইন-ডেপথ) ও মৌলিক গবেষণা এবং গোপন তথ্য উন্মোচন। অনেকে আবার মনে করেন, অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ব্যাপকভাবে উন্মুক্ত তথ্য (পাবলিক ডাটা) ও নথিপত্র ব্যবহৃত হয়ে থাকে এবং এ ধরনের প্রতিবেদনের মূল বিবেচ্য থাকে সামাজিক ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা।

ইউনেস্কোর সংজ্ঞাটিও অনেকেই উল্লেখ করে থাকেন। ইউনেস্কো তার প্রকাশনা ‘স্টোরি-বেইজড এনকোয়ারি’ নামের এক হ্যান্ডবুকে বলছে, “অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার উদ্দেশ্য হচ্ছে গোপন বা লুকিয়ে রাখা তথ্য মানুষের সামনে তুলে ধরা। সাধারণত ক্ষমতাবান কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে এসব তথ্য গোপন রাখে; কখনো হয়তো-বা বিপুল ও বিশৃঙ্খলভাবে ছড়িয়ে থাকা তথ্যের মধ্যে লুকিয়ে থাকে, যা চট করে খুঁজে পাওয়া কঠিন। এই কাজের জন্য একজন সাংবাদিককে সাধারণত প্রকাশ্য ও গোপন নানা উৎস (সোর্স) ব্যবহার করতে হয়, ঘাটতে হয় নানা ধরনের নথিপত্র।” আবার ডাচ-ফ্লেমিশ অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা সংঘ ভিভিওজে’র সংজ্ঞায়, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বলতে সেসব প্রতিবেদনকে বোঝায়, যেগুলো “বিশ্লেষণাত্মক ও কোনো একটি বিষয়কে তলিয়ে দেখার চেষ্টা করে”।

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা কী?