কোভিড-১৯: যখন আতশি কাচের নিচে সরকারি কেনাকাটা

English

করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলার জন্য বিশ্বের দেশগুলো বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খুব দ্রুত খরচ করছে। কোন ধরনের সরকারি চুক্তির মাধ্যমে এসব অর্থ খরচ করা হচ্ছে, তা তলিয়ে দেখা জরুরি হয়ে পড়ছে।

এই সংকট কিছু নতুন চ্যালেঞ্জ হাজির করেছে। দেশে দেশে সরকারি কর্মকর্তারা এসব কেনাকাটা করছেন জরুরি ভিত্তিতে। জনসাধারণের কাছে সেসব তথ্য ‍উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে তৈরি করছেন প্রতিবন্ধকতা এবং তথ্য অধিকার আইনে করা আবেদনগুলোর জবাব দিচ্ছেন দেরিতে।

এমন নতুন ও পুরোনো প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও রিপোর্টাররা প্রতিনিয়ত প্রকাশ করে যাচ্ছেন সরকারি কেনাকাটা-সংক্রান্ত প্রতিবেদন।

কীভাবে এসব প্রতিবেদন তৈরি করা যায়, তার কিছু পরামর্শ থাকছে জিআইজেএন-এর এই রিসোর্স গাইডে। সঙ্গে থাকছে নানা উদাহরণ। এখান থেকে জানা যাবে: দুর্নীতির আভাস-ইঙ্গিত কীভাবে পাবেন এবং কেনাকাটা-সংক্রান্ত প্রক্রিয়ার বিভিন্ন পর্যায়ের তথ্য কোথায় মিলবে? জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায় তে বটেই, আমরা এখানে তুলে ধরেছি বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে আসা অর্থের হিসাব চিহ্নিত করার উপায়ও।

সরকারি চুক্তি ও কেনাকাটা নিয়ে কাজ করার মৌলিক পরামর্শগুলো সংক্ষেপে সংকলন করা হয়েছে এই এক পৃষ্ঠার টিপশিটে।
সূচিপত্র
তথ্য কোথায় খুঁজবেন

আগেই সতর্ক হবেন যেসব চিহ্ন দেখে

কাজ কে পেল ঘোষণা হলে কী খুঁজবেন

ঠিকাদার ও সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে অনুসন্ধান

কাজের মান যাচাই

প্রকিউরমেন্ট ডেটা ব্যবহার

আন্তর্জাতিক সংস্থার অর্থসাহায্য অনুসন্ধান

আরও তথ্যসূত্র

পরামর্শ কোথায় পাবেন

এই গাইডের জন্য জিআইজেএন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে ওপেন কন্ট্রাক্টিং পার্টনারশিপের কর্মীদের কাছে। তাঁদের সাপ্তাহিক নিউজলেটারে এসব চুক্তি নিয়ে অনুসন্ধানের নানা উপকরণ থাকে।
মৌলিক, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ
প্রথমেই আপনাকে নিজ দেশের সরকারি ক্রয়কাঠামো বুঝে নিতে হবে এবং জানতে হবে দুর্নীতি, দরপত্র জালিয়াতি, গোপনীয়তা ও প্রতারণার বিষয়গুলো খুঁজে পেতে কোন জায়গাগুলোতে নজর দিতে হবে।

এখানে থাকছে একটি সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।

সাধারণত একটি ক্রয়‍চুক্তির প্রক্রিয়ায় পাঁচটি পর্যায় থাকে:

পরিকল্পনা – যখন কী কী জিনিস কিনতে হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আলোচনা হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই পরিকল্পনার পর্যায়টি খুব তড়িঘড়ি করে সম্পন্ন করা হচ্ছে। কখনো কখনো এসব সিদ্ধান্তের কথা জনসাধারণের কাছে উন্মুক্ত করা হচ্ছে না এবং কোনো নথিপত্রও থাকছে না।
টেন্ডারিং – এই পর্যায়ে সরকার কোট, বিড বা প্রস্তাব আহ্বান করে। (কখনো কখনো এটিকে অন্য নামেও ডাকা হয়। যেমন রিকোয়েস্ট ফর প্রোপোজাল, অ্যাপ্রোচ টু মার্কেট ও সলিসিটেশন)
কাজ দেওয়া – এই পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, চুক্তিটি কার সঙ্গে করা হবে। এটা নির্ধারিত হয় হাই বিডার দেখে বা অন্য কোনো উপায়ে।
চুক্তি – এই পর্যায়ে চুক্তির নানা শর্ত বিস্তারিত লেখা হয়। এটি আইনি সমঝোতার বিষয়। কখনো কখনো, এসব চুক্তিপত্রের সংশোধন ও সংযোজনের জায়গাগুলোতে পাওয়া যায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য।
বাস্তবায়ন – কাজটি কি শেষ হয়েছে?

দেশ ধরে ধরে বিশ্বব্যাংকের কোভিড-১৯ অর্থায়ন ট্র্যাক করবেন যেভাবে

English

কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকারকে অর্থ সহায়তা দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এখন পর্যন্ত ১০০টির বেশি দেশে দেওয়া হয়েছে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু এই অর্থ কীভাবে খরচ করা হচ্ছে? কাদের সঙ্গে চুক্তি করা হচ্ছে?

মার্কিন নির্বাচন কাভার করবেন? সাংবাদিকদের জন্য দরকারি সব রিসোর্স এখানে পাবেন

English

আগামী ৩ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ভোট দেবেন মার্কিন জনগণ। একই সঙ্গে বেছে নেবেন সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য, আর হাজারো স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। ভুল হবে না, যদি বলি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবারের মতো পরিস্থিতি আগে কখনোই দেখেনি। এবার শঙ্কা আছে ভোটারদের ভয় দেখাতে কিংবা মেইল-ইন-ব্যালট পদ্ধতিতে বাধা দিতে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হতে পারে সশস্ত্র পর্যবেক্ষক; আছে ভোট জালিয়াতির আর বিদেশি হস্তক্ষেপের ঝুঁকি, প্রকাশ্য বা গোপন অনুদানের কল্যাণে রেকর্ড পরিমাণ টাকার ছড়াছড়ি, আর ভুয়া তথ্যের জোয়ার। আবার এত কিছু কিনা হচ্ছে এমন একটি মহামারির মধ্যে, যা শত বছরে একবার দেখা যায়।

এই নির্বাচনের সঙ্গে শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, গোটা বিশ্বেরই অনেক স্বার্থ জড়িয়ে আছে। এ কারণে নির্বাচনী মৌসুমের বাকি সময়টাতে জিআইজেএন মনোনিবেশ করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে। যাবতীয় রিসোর্স ঘেঁটে গোটা বিশ্বের সাংবাদিকদের জন্য আমরা গড়ে তুলেছি সেরা টিপস ও টুলের এই সংগ্রহ, যাতে তাঁরা এই মার্কিন নির্বাচন নিয়ে অনুসন্ধান করতে পারেন।
যাঁরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাভার করছেন, তাঁরা টুইটারে ফলো করতে পারেন আমাদের এই হ্যাশট্যাগ: #gijnElectionWatchdog। এখানে প্রতিদিন নতুন নতুন কৌশল ও পরামর্শের আপডেট পাবেন। আর যদি কোনো মতামত বা হালনাগাদ তথ্য দিতে চান, তাহলে ইমেইল করুন এখানে: ElectionWatchdog@gijn.org

এই গাইডে থাকছে ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে বাছাই করা সেরা রিসোর্স:

নির্বাচনী নিরাপত্তা নিয়ে ব্রেনান সেন্টার ফর জাস্টিস-এর বিশেষ একটি প্রকল্পে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের ভোটিং ব্যবস্থার দুর্বলতাগুলো। সঙ্গে আছে সেগুলো মোকাবিলার পরামর্শ ও নির্বাচনী বিশেষজ্ঞদের সাথে যোগাযোগের উপায়।বিশ্লেষণ, জরিপ ও রাউন্ডআপ

প্রচার অর্থায়ন

বিজ্ঞাপন ব্যয়

ভুয়া খবর ও যাচাই

নির্বাচনী কাভারেজের “হাউ-টু

নির্বাচনে নিরাপত্তা

নির্বাচনী এক্সপ্লেইনার

আইনি ইস্যু ও নোংরা কৌশল

ভাষণ, অনুলিখন, টুইট ও ভিডিও

ভোটার ডেটা

ভোটের অধিকার ও নীতিমালা

ভোটের ফলাফল
বিশ্লেষণ, জরিপ ও রাউন্ডআপ
কুক পলিটিক্যাল রিপোর্ট হলো স্বাধীন ও দলনিরপেক্ষ নির্বাচনী বিশেষজ্ঞদের একটি গ্রুপ, যারা যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ও রাজনৈতিক প্রবণতা নিয়ে কাজ করে। তাদের সাইটে ফ্রি ও সাবস্ক্রিপশন; দুই ধরনের কনটেন্ট পাবেন।

ফাইভথার্টিএইট, নামটি অদ্ভুত শোনালেও  এটি এসেছে মূলত ইউএস ইলেকটোরাল কলেজের (যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন) সদস্য সংখ্যা থেকে। সংগঠনটির কাছ থেকে খুবই গভীর রাজনৈতিক বিশ্লেষণ পাওয়া যায়। পোলিং অ্যাগ্রিগেশনের জন্যও এটি খুব কাজের সাইট।

ইলেকশনল্যান্ড২০২০ হলো অলাভজনক গণমাধ্যম প্রোপাবলিকার একটি সহযোগিতামূলক সাংবাদিকতা প্রকল্প। তারা ২০২০ সালের নির্বাচনে ভোটদানের অধিকার, সাইবার নিরাপত্তা, ভুয়া তথ্য ও নির্বাচনী সততা ইত্যাদি নিয়ে কাজ করছে।

প্রতিটি নির্বাচনী কেন্দ্রে একজন করে রিপোর্টার আছেন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-র। তাঁরা প্রতিদিন মাঠপর্যায়ের নানা খবরাখবর দিয়ে যাচ্ছেন নির্বাচনী কাভারেজের মাধ্যমে।
প্রচার অর্থায়ন
সেন্টার ফর রেসপনসিভ পলিটিকস (সিআরপি) একটি দলনিরপেক্ষ গবেষণা গ্রুপ, যারা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে অর্থের লেনদেন ট্র্যাক করে এবং নির্বাচনে ও নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে তার প্রভাব নির্ধারণ করে। ফেডারেল ক্যাম্পেইন কন্ট্রিবিউশন, লবিং ডেটা ও নানা রকম বিশ্লেষণের জন্য যেতে পারেন তাদের ওয়েবসাইট ওপেনসিক্রেটস-এ।

নির্বাচনী প্রচারণায় যে অর্থায়ন হয়েছে, তা নিয়ে কাজ করার পরামর্শ, টুল ও টাইমলাইন পাওয়া যাবে সিআরপির লার্নিং সেন্টারে; স্থানীয় নির্বাচনে জাতীয় পর্যায় থেকে আসা অনুদান ট্র্যাক করে এই সেন্টার; এবং তাদের নিউজরুম স্থানীয় ও জাতীয় রাজনীতির ওপর নানা ধরনের বিশ্লেষণ হাজির করে।

ফেডারেল ইলেকশন কমিশন (এফইসি)-র কাছ থেকে পাওয়া নির্বাচনী অর্থায়নের ইলেকট্রনিক ফাইলগুলো খুব সহজে ব্রাউজ করতে পারবেন প্রোপাবলিকার এফইসি আইটেমাইজার-এর মাধ্যমে। এখানে তারিখ, কমিটি, সুপার প্যাকস, রেস ইত্যাদি অনেক বিষয় ধরে সার্চ করতে পারবেন।

ফেডারেল ইলেকশন কমিশন (এফইসি)-র কাছ থেকে পাওয়া নির্বাচনী অর্থায়নের ইলেকট্রনিক ফাইলগুলো খুব সহজে ব্রাউজ করতে পারবেন প্রোপাবলিকার এফইসি আইটেমাইজার-এর মাধ্যমে। এখানে তারিখ, কমিটি, সুপার প্যাকস, রেস ইত্যাদি অনেক বিষয় ধরে সার্চ করতে পারবেন।ফলো দ্য মানি প্রকল্পের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণায় অর্থায়নের দিকে নজর রাখে এবং সেগুলো বিশ্লেষণ করে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অন মানি ইন পলিটিকস (এনআইএমপি)।

এই সব নির্বাচনী অর্থায়নের ডেটার সূত্র এফইসি। এটিই কেন্দ্রীয় নির্বাচনী প্রচারণায় অর্থায়ন-সংক্রান্ত আইন ও বিধিমালা পর্যবেক্ষেণ ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান।

রাজ্য পর্যায়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অর্থায়নের ডেটা ও বিধিমালা নিয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে, দেখুন ন্যাশনাল কনফারেন্স অব স্টেট লেজিসলেটরস (এসসিএসএল) ডিসক্লোজার অ্যান্ড রিপোর্টিং রিকয়ারমেন্টস এবং দ্য ক্যাম্পেইন ফিন্যান্স ইনস্টিটিউটের অফিশিয়াল স্টেট এজেন্সিস অ্যান্ড ডিসক্লোজার রিপোর্টস।
বিজ্ঞাপন ব্যয়
অনলাইন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রচারণায় কেমন খরচ করা হয়েছে, জানতে চান? সিআরপি সেটিও ট্র্যাক করে। এর পলিটিক্যাল অ্যাডস ট্র্যাকারের মাধ্যমে জানতে পারবেন ফেসবুক ও গুগলে এবং রেডিও ও টেলিভিশনে কত টাকার  বিজ্ঞাপন চালানো হয়েছে।

কান্তার মিডিয়া, অ্যাডভারটাইজিং অ্যানালিটিকস বা মিডিয়া মনিটরস-এর মতো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকেও আপনি রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনী ব্যয়ের ডেটা কিনে নিতে পারেন। অ্যাডভারটাইজিং অ্যানালিটিকস তাদের টুইটার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেও নিয়মিত তথ্য জানায়।

বিজ্ঞাপনী ব্যয়সংক্রান্ত এসব ডেটা বিনা মূল্যে পাবেন ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশন (এফসিসি)-র পাবলিক ইন্সপেকশন ফাইলস এবং এফইসি ক্যাম্পেইন ফিন্যান্স ডেটায়। কিন্তু এগুলো এমন ফরম্যাটে থাকে যে, সেগুলো সেখান থেকে বিশ্লেষণ করাটা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। এফইসি ডেটায় বিজ্ঞাপনী ব্যয় খুঁজে পাওয়ার জন্য স্পেন্ডিং ট্যাবে গিয়ে “ডিসবার্সমেন্টস” নির্বাচন করুন, এরপর ফিল্টার করুন “অ্যাডভারটাইজিং” দিয়ে।

অনলাইন বিজ্ঞাপনে কত টাকা খরচ করা হয়েছে, তা ট্র্যাক করার পাশাপাশি এটি বোঝাও জরুরি, কীভাবে সেই বিজ্ঞাপনে দেওয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করা হয়েছে।  এবং এ ব্যাপারে ফেসবুক, গুগল, রেডিট, স্ন্যাপচ্যাট ও টুইটারের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোর নীতিমালা কী?

হারিয়ে যাওয়াদের পদচিহ্ন যেভাবে খোঁজেন অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা

মানবপাচার, জোরপূর্বক শ্রম, গুম-খুন ইত্যাদি নানা কারণে প্রতি বছর নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছেন লাখো মানুষ। কখনো কখনো কেউ হয়তো নিজে থেকেই লুকিয়ে থাকছে। কিভাবে এসব হারিয়ে যাওয়া মানুষদের নিয়ে করা যায় অনুসন্ধান? এই লেখায়, অভিজ্ঞ সাংবাদিকরা বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করেছেন উদাহরণ দেখিয়ে। এবং দিয়েছেন দরকারী সব পরামর্শ।