সাংবাদিকদের জন্য জরুরি সাহায্য

English
দুনিয়া জুড়ে সংবাদকর্মীরা নানারকম ঝুঁকির মুখে কাজ করে যাচ্ছেন। ১৯৯২ সাল থেকে ১ হাজারের বেশি সাংবাদিক মারা গেছেন, হাজার হাজার সাংবাদিক ভয়ভীতি, হামলা, নিগ্রহ ও কারাভোগের শিকার হয়েছেন ।

বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা বিপদগ্রস্ত সাংবাদিকদের জরুরি সাহায্য দিয়ে থাকে। সাহায্য নানা ধরনের হতে পারে, যেমন মেডিক্যাল বা আইনি সহায়তা। ক্ষেত্রবিশেষে ঝুঁকিতে থাকা সাংবাদিককে দেশের বাইরেও নিয়ে যাওয়া হয়। অতএব বিপদে পড়লে, আপনিও সাহায্য পেতে পারেন।

কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে): নিউ ইয়র্কে অবস্থিত  সিপিজে তাদের জার্নালিস্ট  অ্যাসিসট্যান্স প্রোগ্রামের মাধ্যমে ঝুঁকিতে থাকা সাংবাদিকদের মেডিক্যাল, আইনি এবং রিলোকেশন (দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া) সহায়তা দিয়ে থাকে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি নিহত বা কারাগারে অন্তরীণ সাংবাদিক পরিবারকেও সাহায্য করে থাকে। সাহায্যের জন্য বা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা লঙ্ঘন রিপোর্ট করতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন এখানে।

ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্টস পরিচালনা করে আইএফজে-র সেফটি ফান্ড। যেটি “সাংবাদিকদের সহায়তা করে সহিংসতা, হুমকি, শাস্তি মোকাবিলা বা চিকিৎসার জন্য”। হুমকি, সহিংসতা, অন্য দেশে নির্বাসন, অসুস্থতা ইত্যাদি জরুরি ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের বিভিন্ন মাত্রায় আর্থিক সহায়তা প্রদান করে সেফটি ফান্ড।
রিপোর্টারস উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ): প্যারিস ভিত্তিক আরএসএফ সাংবাদিক এবং সংবাদমাধ্যমকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করে, যাতে তারা নানা ধরনের আক্রমণ (মামলা বা হামলা) থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে। বন্দী সাংবাদিকদের পরিবারকেও আরএসএফ সাহায্য করে থাকে। দেখুন তাদের সহায়তা ডেস্ক। ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বীমা প্রসঙ্গে জানুন এখানে।
ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড: এটি ডাচ সাংবাদমাধ্যম উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান । সাংবাদিক ও মিডিয়া হাউসকে সরাসরি সহায়তা দেওয়ার জন্য এর আন্তর্জাতিক জরুরি তহবিল আছে । প্রতিষ্ঠানটি সাহায্যের আবেদন পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিয়ে থাকে। ইমেইলে যোগাযোগ করুন এখানে: reportersrespond@freepressunlimited.org বা ফোন করুন এখানে: +31 20 8000 400

ইন্টারন্যাশনাল ওমেনস মিডিয়া ফাউন্ডেশন: এই প্রতিষ্ঠান কর্মরত নারী সাংবাদিকদের (প্রিন্ট, ব্রডকাস্ট, অনলাইন বা ফ্রিল্যান্স) মেডিক্যাল, আইনি বা রিলোকেশন (অন্য কোনো দেশে নিয়ে যাওয়া) সহায়তা দিয়ে থাকে আইডব্লিউএমএফ ইমার্জেন্সি ফান্ডের মাধ্যমে। এছাড়াও আইডব্লিউএমএফ গড়ে তুলেছে ইউনাইটেড স্টেটস জার্নালিজম ইমার্জেন্সি ফান্ড। যেটি নারী-পুরুষ, উভয়কেই সহায়তা দেয়। এবং ব্ল্যাক জার্নালিস্টস থেরাপি রিলিফ ফান্ড। যেটি তৈরি করা হয়েছে সেসব কৃষ্ণাঙ্গ সাংবাদিকদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে, যারা আর্থিক দুরাবস্থার কারণে নিজেদের মানসিক চিকিৎসাসেবার খরচ বহন করতে পারছেন না। 

লাইফলাইন ফান্ড: এই ফান্ড দমন-পীড়ন এবং আক্রমণের শিকার হওয়া সাংবাদিক ও সিভিল সোসাইটি প্রতিষ্ঠানকে জরুরি সহায়তা দিয়ে থাকে। ১৭টি সরকার এবং ফাউন্ডেশন মিলে লাইফলাইন ফান্ডকে সমর্থন জোগায়। এই ফান্ড মেডিক্যাল ও আইনি সহায়তা, নিরাপত্তা ও সাময়িক রিলোকেশন সাহায্য ছাড়াও মামলার অগ্রগতির ওপর নজর রাখে এবং অচল হয়ে যাওয়া যন্ত্রপাতি বদলে দেয়। সাহায্য করার আগে লাইফলাইন একটি প্রতিষ্ঠানের অতীত রেকর্ড অর্থাৎ মানবাধিকার বা গণতন্ত্রের পক্ষে তাদের ভূমিকা বিবেচনা করে থাকে।

মিডিয়া ডিফেন্স: লন্ডনে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠান সাংবাদিক, ব্লগার ও স্বাধীন সাংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে আইনি সহায়তা দেয়। এছাড়াও এই সংগঠন জনস্বার্থে পরিচালিত মামলায়ও  (যেমন, সাংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সুরক্ষা) সমর্থন জুগিয়ে থাকে।

ররি পেক ট্রাস্ট: লন্ডনভিত্তিক ররি পেক ট্রাস্ট বিশ্বজুড়ে ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও তাদের পরিবারকে সহায়তা দেয় এর ফ্রিল্যান্স অ্যাসিসট্যান্স প্রোগ্রামের মাধ্যমে। তারা বর্তমানে তিনটি তহবিল পরিচালনা করছে: ট্রমা থেরাপি ফান্ড, জেনারেল অ্যাসিসটেন্স ফান্ড, এবং লিগাল ফান্ড।

জার্মান আরএসএফ ব্রাঞ্চ বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা সাংবাদিকদের  সহায়তা করে। হেল্প ইন এক্সাইল প্রকল্পটি এমন সাংবাদিকদের সহায়তা করে, যারা নজরদারি ও দমনপীড়নের শিকার হয়ে তাদের দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। হেল্প ইন নিড প্রকল্পের মাধ্যমে সাংবাদিকদের নতুন একটি নিরাপদ দেশে আশ্রয় নিতে সহায়তা করা হয়, যেখানে তারা ভয়ভীতি ছাড়াই নিজেদের সাংবাদিকতা চালিয়ে যেতে পারবেন।

ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া ফ্রিডম নারী সংবাদকর্মীদের জন্য একটি অ্যালার্ম সেন্টার তৈরি করেছে, যেখানে তারা বিভিন্ন হামলা-হুমকির কথা জানাতে পারবেন এবং সাহায্য-পরামর্শ চাইতে পারবেন।

কানাডিয়ান সেন্টার ফর ফ্রি এক্সপ্রেশন পরিচালনা করে জার্নালিস্টস ইন ডিসট্রেস প্রকল্প। যেটি বিশ্বজুড়ে এমন সাংবাদিকদের মানবিক সহায়তা প্রদান করে, যাদের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে পেশাগত কাজের কারণে। এটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রদান করে। যেমন কোনো সাংবাদিক আটক বা গ্রেপ্তারের শিকার হলে এটি আইনি ফি কাভার করতে পারে। কোনো বিষয় কাভার করতে গিয়ে আহত হলে বা ট্রমার শিকার হলে এটি চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে পারে। হত্যার শিকার বা আটক হওয়া সাংবাদিকদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিতে পারে। এবং নিরাপদ কোনো দেশে পৌঁছানোর পর প্রথম এক বছরের পূণর্বাসন খরচ দিতে পারে। 

ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া সাপোর্ট (আইএমএস) একটি সুরক্ষা প্যাকেজ প্রদান করে, যার মধ্যে আছে:

১. প্রশিক্ষণ: ঝুঁকি বিশ্লেষণ ও হামলা-হুমকি মোকাবিলা, প্রাথমিক চিকিৎসা, সুরক্ষিত যোগাযোগ, সংঘাত-সংবেদনশীল সাংবাদিকতা, মিডিয়া আইন ও রীতিনীতি ইত্যাদি

২.

কোভিড-১৯: সাংবাদিকদের জন্য যত রকম অর্থসহায়তা

English

কোভিড-১৯ মহামারি নিয়ে ভালো রিপোর্টিংকে উৎসাহিত করতে সাংবাদিকদের জন্য অনুদান নিয়ে এগিয়ে আসছে দাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।

আপনি কি কোভিড-১৯ কভার করার জন্য আরও রিসোর্স খুঁজছেন? তাহলে জিআইজেএন এর রিসোর্স সেন্টার থেকে ঘুরে আসতে পারেন।এর পাশাপাশি এই মহামারির কারণে যেসব প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান আর্থিক চাপে পড়েছে, তাদের জন্যও সাহায্য দিচ্ছে বিভিন্ন সংগঠন।

এই ধরনের যত সুযোগ এখন পর্যন্ত এসেছে, তাদের একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করেছে জিআইজেএন। নিচে পাওয়া যাবে তার বিবরণ।

এর বাইরেও বিভিন্ন ব্যক্তি ও সরকার থেকে সহায়তা তহবিলের ঘোষণা এসেছে। এগুলো সরাসরি গণমাধ্যমের কথা না বললেও সাংবাদিকেরা তাকে নিজেদের প্রয়োজনে কাজে লাগাতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন বেলআউট সম্পর্কে নিম্যান ল্যাবে প্রকাশিত এই নিবন্ধ এবং কানাডা সরকারের এই মিডিয়া ইনজেকশনটি দেখে নিতে পারেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফ্রিল্যান্সাররাও এমন আর্থিক সুবিধার জন্য যোগ্য হতে পারে।

কিছু কিছু সুযোগের ক্ষেত্রে সময়সীমা সীমিত। আপনি যদি এমন কোনো সুযোগের কথা জানেন, আমাদের জানাতে পারেন, এই ইমেইলে hello@gijn.org।
কোভিড-১৯ রিপোর্টিং অনুদান
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি (গ্লোবাল)

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকদের জন্য একটি জরুরি তহবিল গঠন করেছে। যাঁরা নিজ নিজ এলাকা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ওপর কোভিড-১৯-এর প্রভাব নিয়ে কাজ করতে চান, তাঁরা এই তহবিল পেতে পারেন।

প্রতিষ্ঠানটি অনুদানের আবেদন গ্রহণ করছে ধাপে ধাপে। একেক দফায় জমা পড়া আবেদন থেকে সেরা প্রস্তাব বাছাই করে অনুদান দেওয়া হচ্ছে। তারপর আবার আবেদন সংগ্রহ করা হচ্ছে।

তারা প্রস্তাবের গুণাগুণ বিবেচনা করে ১,০০০ থেকে ৮,০০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত অনুদান দিচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, “বিশ্বব্যাপী এই মহামারির প্রস্তুতি, প্রতিক্রিয়া এবং প্রভাবের ওপর প্রমাণনির্ভর সাংবাদিকতা” যাঁরা করতে চান, তাঁরাই অর্থসহায়তা পাবেন।

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক তহবিল “বেশি জোর দিচ্ছে, সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কাছে সংবাদ পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগে”। তারা আগ্রহী “আঞ্চলিক এবং এমনকি ক্ষুদ্র-অঞ্চলভিত্তিক (জেলা এমনকি তার চেয়েও ছোট পরিসরে কাজ করা গণমাধ্যম) বিতরণ মডেলে”। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, “কোভিড-১৯-এর কারণে যে বৈষম্য তৈরি হচ্ছে,” তারা সেই গল্পই দেখতে চায় বেশি করে। আরও তথ্যের জন্য তাদের ঘোষণা দেখুন।

লেখক, ফটোগ্রাফার, ভিডিওগ্রাফার, অডিও সাংবাদিক, কার্টোগ্রাফার, চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং ডেটা ভিজুয়ালাইজেশন বিশেষজ্ঞরা এই তহবিলের জন্য আবেদন করতে পারেন।

পুলিৎজার সেন্টার (গ্লোবাল)

পুলিৎজার সেন্টার অন ক্রাইসিস রিপোর্টিং চালু করেছে করোনাভাইরাস নিউজ কোলাবরেশন চ্যালেঞ্জ। তাদের নতুন এই অনুদান, সাংবাদিক এবং নিউজরুমগুলোর মধ্যে সহযোগিতামূলক সাংবাদিকতাকে উৎসাহিত করছে। রাষ্ট্রীয় এবং জাতীয় সীমারেখার ভেতেরে ও বাইরে করোনাভাইরাস মহামারির খবর সংগ্রহকে বেগবান করতেই তাদের এই উদ্যোগ। এই সুযোগ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশের সব স্বাধীন সাংবাদিক এবং নিউজরুমের জন্য উন্মুক্ত।

এই অনুদান পেতে হলে প্রতিবেদন তৈরি এবং প্রকাশের ক্ষেত্রে শক্তিশালী কোলাবরেশন বা সহযোগিতা কাঠামো থাকতে হবে। আবেদনের জন্য এর বাইরেও যা যা মাথায় রাখতে হবে:

করোনাভাইরাস সংকটের অন্তর্নিহিত সিস্টেমিক ইস্যুতে নজর দিন, যা নিয়ে খুব বেশি রিপোর্টিং হয়নি।
করোনাভাইরাস নিয়ে প্রতিবেদন তৈরির জন্য ডেটাভিত্তিক এবং/অথবা বিষয়-নির্দিষ্ট পদ্ধতি ব্যবহার করুন।
ক্ষমতাকে জবাবদিহি করার বিষয়টি রাখুন।

করোনাভাইরাস নিউজ কোলাবরেশন চ্যালেঞ্জের জন্য পুলিৎজার সেন্টার আবেদন জমা নিচ্ছে পর্যায়ক্রমিক ভিত্তিতে।

ইন্টারনিউজ (গ্লোবাল)

ইন্টারনিউজ গঠন করেছে ইনফরমেশন সেইভস লাইভস র‌্যাপিড রেসপন্স ফান্ড। সেই সব গণমাধ্যম, প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তি এই তহবিল থেকে সহায়তা পেতে আবেদন করতে পারেন; যাঁরা স্থানীয় ভাষায় কোভিড/করোনাভাইরাস মহামারি এবং তার প্রভাব সম্পর্কে তথ্য বা খবর জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে চান। অনুদানের অঙ্ক হতে পারে ৫০০ থেকে ৫,০০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত। এই টাকা খরচ করতে হবে “ এমন তথ্যের নির্মাণ, প্রযোজনা এবং প্রচারের জন্য, যা করোনাভাইরাস থেকে মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে এবং তাদের নিজের পরিবার ও সম্প্রদায়ের জন্য সুষ্ঠু সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে: বিষয় হতে পরে বৈজ্ঞানিক উন্নয়ন, রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা, স্থানীয় স্বাস্থ্য নীতি ও পদ্ধতি এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য প্রতিদিনের দরকারি খবর ও তথ্য ইত্যাদি।”

এর পাশাপাশি ইংরেজি, স্প্যানিশ, ফরাসি, আরবি, রাশিয়ানসহ বিভিন্ন ভাষায় করোনাভাইরাস কাভার করার জন্য বিনা পয়সায় পরামর্শ এবং বিশেষজ্ঞ সহায়তাসহ অ্যাডভাইজরি তৈরিতেও ইন্টারনিউজ অতিরিক্ত বিনিয়োগ করবে। বিস্তারিত এখানে।

ফান্ডটি চালু করার পর থেকে এত বেশি আবেদন এসেছে যে, ইন্টারনিউজকে আপাতত আবেদন সংগ্রহ বন্ধ রাখতে হয়েছে। প্রথম দফায় যত আবেদন জমা পড়েছে, সেগুলোর মধ্য থেকে যাচাই-বাছাই করে, সেরা প্রস্তাবগুলোকে তারা সহায়তা দেবে। পরবর্তীকালে কবে আবেদন করা যাবে, তাদের সাইটে জানিয়ে দেওয়া হবে।

ইন্টারন্যাশনাল উইমেন্স মিডিয়া ফাউন্ডেশন (গ্লোবাল)

আইডব্লিউএমএফের সাংবাদিকতা ত্রাণ তহবিল, এমন নারী সাংবাদিকদের জন্য যাঁরা চাকরি বা কাজ হারিয়ে গুরুতর আর্থিক সংকটে পড়েছেন, এবং অপূরণীয় ক্ষতি এড়ানোর জন্য যাদের জরুরি সহায়তা প্রয়োজন। অনুরোধের ধরন অনুসারে এই তহবিল একেকজনকে সর্বোচ্চ ২০০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত অনুদান প্রদান করবে। দ্রষ্টব্য: যাদের বেশি আর্থিক প্রয়োজন, তাদের কেস-টু-কেস ভিত্তিতে বিশেষ বিবেচনায় সহায়তা দেওয়া হবে।

উইমেন ফটোগ্রাফ (গ্লোবাল)

কোভিড-১৯ জরুরি তহবিল থেকে বিশ্বব্যাপী নন-বাইনারি এবং স্বাধীন নারী ফটোগ্রাফারদের জন্য একককালীন সহায়তা দিচ্ছে, উইমেন ফটোগ্রাফ। এই টাকা কোন কাজে খরচ করা যাবে, সে সম্পর্কে কোনো বিধিনিষেধ নেই। স্বাস্থ্যসেবা, শিশুযত্ন, বাসাভাড়া, পেশাদার ব্যয়—এমন যেকোনো কাজেই  ইত্যাদি। প্রথম দফা আবেদনের সময়সীমা ৩ এপ্রিল শেষ হয়েছে। দাতাদের কাছ থেকে তহবিল পেলে তারা আবার আবেদন সংগ্রহ শুরু করবে।

লেখকদের জন্য জরুরি সহায়তা তহবিল (গ্লোবাল)

অর্থসহায়তা কেবল তাঁদের জন্যই, যাঁরা বর্তমানে অসুস্থ বা কোনো অসুস্থ ব্যক্তির যত্ন নিতে হয় বলে কাজ করতে পারেন না। আমেরিকান সোসাইটি অব জার্নালিস্টস অ্যান্ড রাইটার্সের মতে, “আবেদনের জন্য লেখকদেরকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধিবাসী হতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। তবে তাঁদের অবশ্যই ইংরেহি ভাষায় লেখা বই বা নিবন্ধ জমা দিতে হবে।”

ফটোগ্রাফার ফান্ড (গ্লোবাল)

ফটোগ্রাফার তহবিলটি গঠন করেছে ফরম্যাট। তাদের লক্ষ্য হলো, সেই সব স্বনিয়োজিত ফটোগ্রাফারের সহায়তা করা, যাঁরা কোভিড-১৯-এর কারণে আর্থিক সমস্যায় পড়েছেন। ফরম্যাট হলো একটি অনলাইন পোর্টফোলিও প্ল্যাটফর্ম, যেখানে পোর্টফোলিও তৈরির মাধ্যমে নিজেদের কাজ প্রদর্শন ও বিক্রি করতে পারেন ফটোগ্রাফাররা। এই তহবিল থেকে একেকজনকে ৫০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত সহায়তা দেওয়া হয়।
সংবাদ প্রতিষ্ঠানের জন্য সহায়তা
ফেসবুক (গ্লোবাল)

সংবাদশিল্পকে বাঁচাতে ফেসবুক এরই মধ্যে ১০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যে থেকে আড়াই কোটি ডলার খরচ করা স্থানীয় ছোট ছোট গণমাধ্যমের জন্য জরুরি সহায়তা হিসেবে, ফেসবুক জার্নালিজম প্রজেক্টের মাধ্যমে। আর বাকি সাড়ে সাত কোটি ডলার তারা খরচ করবে বিপণন কার্যক্রমে, যেন বিশ্বের সংবাদমাধ্যমগুলোর কাছে অর্থ পৌঁছাতে পারে।

কোভিড-১৯ কমিউনিটি নেটওয়ার্ক গ্র্যান্ট প্রোগ্রামের আওতায় তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ৫০টি স্থানীয় গণমাধ্যমকে সহায়তা দিয়েছে, প্রথম দফায়। দ্বিতীয় পর্যায়ে এই দুই দেশের আরও ৪০০টি ক্ষুদ্র গণমাধ্যমকে সহায়তা দেওয়া হয়। তবে তৃতীয় রাউন্ড কবে আসবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। এই তহবিলের আওতায় করোনাভাইরাসের খবর সংগ্রহ ও প্রকাশের জন্য ৫০০০ মার্কিন ডলার করে দেওয়া হয় গণমাধ্যমগুলোকে।

আগ্রহীদেরকে এই লিংকে গিয়ে ফেসবুক জার্নালিজম প্রজেক্ট নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করতে বলা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে।

এর বাইরে, স্মল বিজনেস গ্র্যান্ট প্রোগ্রামের আওতায় আরও ১০ কোটি ডলার অনুদান দিচ্ছে ফেসবুক। এখান থেকে ৩০টি দেশের ৩০ হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসা তাদের কাছ থেকে ছোট অনুদান বা বিজ্ঞাপন ক্রেডিট পাবে।

গুগল (গ্লোবাল)

স্থানীয় কমিউনিটি নিয়ে কাজ করছে, এমন ছোট ও মাঝারি নিউজরুমগুলোকে জরুরি অর্থসহায়তা দেওয়ার জন্য জার্নালিজম ইমার্জেন্সি রিলিফ ফান্ড গঠন করেছে গুগল। কোভিড-১৯ মহামারি নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে মানসম্পন্ন সাংবাদিকতা জারি রাখাই এই অনুদানের প্রধান উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছে তারা। অন্তত এক বছর ধরে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে এবং দুই থেকে এক শ জন পূর্ণকালীন কর্মী আছেন, এমন নিউজরুমগুলো এই অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারবে।

করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ে ভুয়া তথ্য ও গুজব মোকাবিলায় ফ্যাক্টচেকার এবং অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ৬৫ লাখ ডলার দেবে গুগল। সম্প্রতি তারা এই ঘোষণা দিয়েছে। এর অংশ হিসেবে গুগল নিউজ ইনিশিয়েটিভ প্রথমে ফার্স্ট ড্রাফটকে সহায়তা করছে। তারা এরই মধ্যে কোভিড-১৯ নিয়ে সাংবাদিকদের জন্য একটি রিসোর্স হাব তৈরি করেছে, যেখানে প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে ক্রাইসিস সিমুলেশন পর্যন্ত অনেক ধরনের রিসোর্স আছে।

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার যত ম্যানুয়াল

English

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা

ডেটা সাংবাদিকতা

শিক্ষকতা ও প্রশিক্ষণ

অন্যান্য দরকারী গাইড

আপনি কি টিপস, টুলস এবং টিউটোরিয়াল খুঁজছেন? রিপোর্টার হিসেবে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করতে, শিক্ষক হিসেবে এই বিষয় পড়াতে অথবা শিক্ষার্থী হিসেবে বিষয়টিকে গভীরভাবে জানতে – এই রিসোর্স আপনার কাজে লাগবে, সন্দেহ নেই। নিচের সহায়িকাগুলো অনুসন্ধানী ও ডেটা সাংবাদিকতা নিয়ে। এখানে পাবেন সারা বিশ্ব থেকে সংগ্রহ করা কেস স্টাডি আর উদাহরণ। গাইডগুলোর বেশীরভাগই পাওয়া যায় বিনামূল্যে।

চাইলে চীনা এবং স্প্যানিশ ভাষার গাইডও পেতে পারেন। আর আপনার কাছে শেয়ার করার মত কিছু থাকলে আমাদের ইমেইল করুন এবং জানান।

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা
ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম ম্যানুয়াল: এটি তৈরি করেছে জার্মান ফাউন্ডেশন কনরাড অ্যাডেনোয়ার স্টিফটুং। বেশকিছু কেস স্টাডি ও অনুশীলনসহ এটি প্রথম বের করা হয় মূলত আফ্রিকার সাংবাদিকদের জন্য সাংবাদিকতার হ্যান্ডবুক হিসেবে। তবে হ্যান্ডবুকটির সর্বশেষ সংস্করণ ডিজাইন করা হয়েছে সেইসব সাংবাদিকদের জন্যে যারা কাজ করেন সম্পদের সীমাবদ্ধতা, দমনমূলক গণমাধ্যম আইন এবং স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে – এমন পরিবেশে। এটি এক ডজনের বেশি ভাষায় অনুদিত হয়েছে এবং তার মধ্যে বাংলা ভাষাও রয়েছে। এই গাইডের একটি ইন্টার‌অ্যাক্টিভ ওয়েবসাইট আছে।

ডিগিং ডিপার: বলকান অঞ্চলের অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের জন্য নির্দেশিকা: এটি প্রকাশ করেছে বলকান ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টিং নেটওয়ার্ক (বিআইআরএন)। কীভাবে নথিপত্র এবং তথ্য-উপাত্তের গভীরে যেতে হয়, এই সহায়িকায় সেদিকেই দৃষ্টি দেয়া হয়েছে। বইটি লিখেছেন শীলা করোনেল। তিনি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাবাইল সেন্টার ফর ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম এর পরিচালক। এখানে পাবেন অনুসন্ধানী রিপোর্টিংয়ের বেশ কিছু টিপস ও কলা-কৌশল। ভাষা: ইংরেজি, ম্যাসিডোনীয়।

ফলো দ্য মানি: এ ডিজিটাল গাইড টু ট্র্যাকিং করাপশন: বিনামূল্যের এই হ্যান্ডবুক প্রকাশ করেছে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর জার্নালিস্টস।

গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম কেসবুক: এই কেসবুকে প্রেক্ষাপটসহ বেশকিছু অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের উদাহরন আছে। সেখানে সাংবাদিকরা কীভাবে গবেষণা করেছেন এবং প্রতিবেদন লিখেছেন তাও তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে। ভাষা: ইংরেজি।

গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম: স্ট্র্যাটেজিস ফর সাপোর্ট: এই নির্দেশিকায় একটি জরিপ ও আলোচনার উপর ভিত্তি করে বিশ্বব্যাপী অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার বিস্তার সম্পর্কে লিখেছেন জিআইজেএনের ডেভিড ই কাপলান। এখানে অলাভজনক অনুসন্ধানী উদ্যোগের কাঠামো এবং অর্থায়নের উৎস সম্পর্কে টিপস রয়েছে। আর পাবেন বিশ্বব্যাপী অনুসন্ধানী দলগুলোর একটি তালিকা। এটি প্রকাশ করেছে সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া অ্যাসিসটেন্স-সিআইএমএ। ভাষা: ইংরেজি।

গাইড টু ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম: একজন অনুসন্ধানী প্রতিবেদক কোথায় তার রিপোর্টের বিষয়বস্তু খুঁজে পাবেন,  কীভাবে নিবেন অনুসন্ধানী সাক্ষাৎকার, কোথায় পাবেন দরকারী নথিপত্র, গল্পের কাঠামো তৈরী করবেন কীভাবে আর তাকে জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দিবেন কেমন করে?