বিশ্বজুড়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকেরা নানামুখী ও ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির মুখে রয়েছেন। স্বৈরশাসকদের শক্তিশালী হয়ে ওঠা এবং গণতন্ত্রের পিছিয়ে যাওয়া, গণমাধ্যমের প্রতি বৈরিতা ক্রমে বাড়তে থাকা এবং সংবাদমাধ্যমের ক্ষয়িষ্ণু স্বাধীনতা – এর অল্প কয়েকটি মাত্র। একারণে সাংবাদিকদের কাজ ও তার প্রভাবগুলোকে নথিবদ্ধ করা আরও জরুরি হয়ে পড়েছে।
২০২২ সালে যেসব চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে তাদের মধ্যে সাড়া জাগানো অনুসন্ধানকে ঘিরে নির্মিত এমন কয়েকটি ফিল্ম রয়েছে, যেগুলো অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের শ্রমসাধ্য এবং ঝুঁকিপূর্ণ কাজগুলো সম্পর্কে গভীর অন্তদৃষ্টি তুলে ধরে। এসব তথ্যচিত্রের মধ্যে এমন দুই সাংবাদিকের গল্পও আছে– যাদের পেশাগত কাজের কারণে হত্যা করা হয়েছিল। সুস্থ গণতন্ত্রকে সচল রাখতে যে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা অপরিহার্য এই চলচ্চিত্রগুলোতে তা উঠে আসে; আর যেসব ক্ষমতাধরেরা এসব অনুসন্ধান থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন, তাদের কথাও নিরবে মনে করিয়ে দেয় – হোক তারা অলিগার্ক, ধনকুবের, আধাসামরিক বাহিনী বা সরকার। এখানে থাকছে এমন সেরা পাঁচটি চলচ্চিত্র।
নাভালনি
ড্যানিয়েল রোহারের এই তথ্যচিত্রটি মূলত রাশিয়ার বিরোধী দলীয় নেতা ও পুতিনের সোচ্চার সমালোচক অ্যালেক্সি নাভালনিকে নিয়ে। এতে দেখা যায়, ২০২০ সালের আগস্টে সাইবেরিয়া যাওয়ার পথে নোভিচক নার্ভ এজেন্ট প্রয়োগের পর তিনি জার্মানিতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। রোহার এখানে নাভালনি, অ্যান্টি-করাপশন ফাউন্ডেশনে তাঁর দল, এবং বেলিংক্যাট, ডের স্পিগেল ও দ্য ইনসাইডারের সাংবাদিকদের গল্পকে তুলে এনেছেন; দেখিয়েছেন, কীভাবে তাঁরা এই হামলার পেছনের ক্রীড়ানকদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন।
চলচ্চিত্রটিতে বিষপ্রয়োগের ঘটনা এবং রুশ শহর ওমস্কের হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে নাভালনিকে জার্মানিতে নিয়ে যেতে তাঁর স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়ার লড়াই থেকে শুরু করে মস্কোতে ফেরা মাত্র তাকে রুশ পুলিশের উঠিয়ে নেয়া পর্যন্ত পুরো সময়টি উঠে এসেছে। পরবর্তীতে, প্যারোলের শর্ত ভঙ্গের অভিযোগে নাভালনিকে আড়াই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়, যেটি তাঁর মতে ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
তথ্যচিত্রটির পিলে চমকানো এক দৃশ্যে নাভালনিকে দেখা যায় যে তিনি সরকারি কর্মকর্তা সেজে ফোন কলে এক রুশ এজেন্টকে প্রশ্ন করছেন, এবং সেই এজেন্ট বলছেন তোমস্কে বিষ প্রয়োগের পর তাকে “সব কিছু পরিষ্কারের” জন্য পাঠানো হয়েছিল, এবং তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল – গোলমাল কোথায় বাঁধলো৷ সেই ব্যক্তি যখন স্বীকার করেন যে তিনি রুশ নিরাপত্তা বাহিনী এফএসবির সদস্য এবং তাদের একটি দল নাভালনির অন্তর্বাসের সেলাইয়ে বিষ মিশিয়ে দিয়েছিল, তখন অ্যান্টি-করাপশন ফাউন্ডেশনের কর্মী গ্রোজেভ ও মারিয়া পেভচিখ নিরব ভয়ের অভিব্যক্তি নিয়ে তা শুনছিলেন৷
“নাভালনি” চলচ্চিত্রে আমরা দেখতে পাই যে, চরম নিপীড়নমূলক শাসনব্যবস্থাতেও আন্তঃসীমান্ত অনুসন্ধানী প্রকল্পগুলো রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা উন্মোচন করতে পারে; এই তথ্যচিত্রটি শক্তিশালী গণমাধ্যম চালানো একজন সাংবাদিক-রাজনীতিবিদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার সমস্যাগুলোও তুলে ধরে। টিকটক, ইউটিউব ও টুইটারের মতো সামাজিক মাধ্যমে পোস্টের সময়সূচী তৈরিতে এই অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যম অংশীদারদের সঙ্গে একটি উল্লেখযোগ্য সময় ব্যয় করেছেন নাভালনি ও তাঁর দল।
চলচ্চিত্র চলাকালে এক সাক্ষাৎকারে ডের স্পিগেলের রিপোর্টার ফিডেলিয়াস স্মিড বলেছেন, “এমন অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিষয়গুলোকে আরও কঠিন করে তোলে।” গোটা চলচ্চিত্রে নির্মাতা ও তার মিডিয়া-পারদর্শী কেন্দ্রীয় চরিত্রের মধ্যকার টানাপোড়েন স্পষ্ট বোঝা যায়: একটি আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎকারের বিরতির ফাঁকে নাভালনি পেভচিখকে বলেন, “চলচ্চিত্রের জন্য রোহার যা যা ধারণ করছেন, তা কেবল আমি মরলেই প্রকাশ পাবে।”
“নাভালনি” ২০২২ সালে সানড্যান্স চলচ্চিত্র উৎসবে ফেস্টিভাল ফেভারিট অ্যাওয়ার্ড এবং অডিয়েন্স অ্যাওয়ার্ড ফর ইউএস ডকুমেন্টারিজ পুরস্কার জিতেছে৷ এর পরপরই, নাভালনিকে দ্বিতীয়বারের মত বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছিল, এবং আরও নয় বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল৷
যুক্তরাজ্যের বিবিসি আইপ্লেয়ার ও যুক্তরাষ্ট্রের এইচবিও ম্যাক্স-এ “নাভানলি” চলচ্চিত্রটি পাওয়া যায়।
লিরা
উত্তর আয়ারল্যান্ডের অনুসন্ধানী সাংবাদিক লিরা ম্যাককি ছিলেন একজন স্বঘোষিত “যুদ্ধবিরতি শিশু”। তিনি এমন এক প্রজন্মের অংশ যারা বেড়ে উঠেছেন গুড ফ্রাইডে চুক্তি পরবর্তী যুগে, যা উত্তর আয়ারল্যান্ডের দীর্ঘ নৃতাত্ত্বিক-জাতীয়তাবাদী সংঘাতের অবসান ঘটাবে বলে আশা করা হয়েছিল। এই চুক্তি বলে দিয়েছিল কয়েক দশকের সংঘাত শেষে উত্তর আয়ারল্যান্ডের শাসনকার্য কীভাবে চলবে। ম্যাককির নিজের ভাষায় যার “নিয়তি” ছিল “আর কখনোই যুদ্ধের ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ না করা এবং শুধুই শান্তির ফল ভোগ করা”। কিন্তু সেই চুক্তির ২১তম বার্ষিকীতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ম্যাককি।
এক মুখোশধারী যখন ম্যাককিকে গুলি করে হত্যা করেন, তখন ডেরিতে দাঙ্গা চলছিল। ধারণা করা হয়, এই মুখোশধারী নিউ আইরিশ রিপাবলিকান আর্মি (নিউ আইআরএ)-র সদস্য। পুলিশকে লক্ষ্য করে তার ছোঁড়া গুলিতে পুলিশের গাড়ির কাছে দাঁড়িয়ে থাকা ম্যাককি নিহত হন। তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৯ বছর, অথচ এরই মধ্যে তাঁকে বিবেচনা করা হতো ইউরোপের সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল ও ব্যাপক সমাদৃত তরুণ সাংবাদিকদের একজন হিসেবে। তাঁর মৃত্যুতে উত্তর আয়ারল্যান্ড এবং এর বাইরেও শোক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
ম্যাককির বেড়ে ওঠা বেলফাস্টের শ্রমিক-অধ্যুষিত এলাকায়। উত্তর আয়ারল্যান্ডের ঐতিহাসিক সংঘাতকে ভুলে না গিয়ে তিনি বরং সেখানকার জনজীবনে এই সংঘাতের চলমান বিস্তৃত প্রভাব নথিবদ্ধ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন। তাঁর সমবয়সীদের মধ্যে আত্মহত্যার মহামারি থেকে শুরু করে তরুণদের গুম হওয়ার অমীমাংসিত ঘটনা পর্যন্ত- অনেক স্টোরিই তিনি তলিয়ে দেখেছেন, যা অন্যেরা ভুলে যেতে চেয়েছিলেন। এসব কাজের জন্য তিনি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন। ২০১৪ সালে, ২৪ বছর বয়সে “এ লেটার টু মাই ফোরটিন ইয়ার অল্ড সেল্ফ” শিরোনামে একটি ব্লগ পোস্ট প্রকাশের পর তিনি সুপরিচিত হয়ে ওঠেন। সমকামী হওয়ায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তাঁকে যে কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয় এবং বেলফাস্টে তরুণ বয়সে এলজিবিটি জনগোষ্ঠী যে প্রতিকূলতার মুখে পড়ে, এই ব্লগ পোস্টে তিনি সেটিই তুলে ধরেছেন। ২০১৬ সালে ফোর্বসের থার্টি আন্ডার থার্টি ইন মিডিয়া তালিকায় তাঁর নাম ছিল, এবং ২০১৯ সালে আইরিশ টাইমস পত্রিকা তাঁকে “আইরিশ লেখালেখির জগতের উঠতি তারকা” বলে অভিহিত করেছে। মৃত্যুর আগে তিনি প্রকাশনা সংস্থা ফেবার অ্যান্ড ফেবারের সঙ্গে দুটি বই প্রকাশের চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন।
“লিরা” চলচ্চিত্রের পরিচালক অ্যালিসন মিলার, ম্যাককির ব্যক্তিগত বন্ধু। তিনি গোটা চলচ্চিত্রে ম্যাককির লেখনীকে চিত্রায়িত করেছেন নিবন্ধ থেকে নেওয়া চলমান টেক্সটের ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট ব্যবহার করে। তিনি ম্যাককির সাক্ষাৎকার নেওয়ার দক্ষতা সম্পর্কেও ধারণা দিয়েছেন তাঁর বিভিন্ন সোর্সের সঙ্গে কথা বলে। এসব সোর্সদের মধ্যে ছিলেন জ্যানেট ডোনেলি, যাঁর বাবা ১৯৭১ এর ব্যালিমার্ফি গণহত্যায় মারা গিয়েছিলেন।
চলচ্চিত্রের এক পর্যায়ে ম্যাককি বলেছেন, “আমি কখনোই অর্থের পেছনে ছুটিনি। সত্যি কথা বলতে কী, আমার সব কিছুই ছিল বিদ্যমান ব্যবস্থাকে নাড়া দেয়া এবং যা কিছু ভুল, তা ঠিক করার চেষ্টা।”
“লিরা” চলচ্চিত্রটি জুন মাসে শেফিল্ড ডকফেস্টে টিম হিদারিংটন পুরস্কার জিতেছে এবং ২০২৩ সালে যুক্তরাজ্যের চ্যানেল ফোর-এ মুক্তি পাবে।
দ্য কিলিং অব এ জার্নালিস্ট
এক তরুণ লেখিকার হত্যাকাণ্ড একটি জনগোষ্ঠীকে কতটা নাড়া দিতে পারে “লিরা” যদি সেটি উন্মোচন করে, তাহলে “দ্য কিলিং অব এ জার্নালিস্ট” চলচ্চিত্রটি দেখায় যে স্লোভাকীয় অনুসন্ধানী প্রতিবেদক জ্যান কুচিয়াক ও তাঁর বাগদত্তা মার্টিনা কুশনিরোভার হত্যা একটি দেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী লোকগুলোকে ক্ষমতাচ্যুতও করতে পারে।
২৭ বছর বয়সী কুসিয়াক ও কুসনিরোভা, দুজনকেই ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে ব্রাতিস্লাভার বাইরে তাঁদের বাড়িতে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। সহকর্মীদের বিশ্বাস- প্রভাবশালী ব্যবসায়ী মারিয়ান কোচনারের নির্দেশেই এই ভাড়াটে খুন হয়েছিল। মৃত্যুর সময়, কুসিয়াক সংবাদ ওয়েবসাইট অ্যাকচুয়ালিটি ডট এসকের জন্য কোচনারের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড নিয়ে অনুসন্ধান করছিলেন। (কোচনার ও তাঁর কথিত সহযোগী আলেনা সুজসোভা ২০২০ সালে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ থেকে মুক্তি পেয়েছেন, তবে বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অপরাধের অভিযোগে পুনরায় তাদের বিচার করা হচ্ছে।)
কুসিয়াক ও কুশনিরোভের এই হত্যাকাণ্ড ১৯৮৯ সালের ভেলভেট বিপ্লবের পর স্লোভাকিয়ায় সবচেয়ে বড় বিক্ষোভের জন্ম দেয়। পরিণামে পুলিশ বাহিনীর প্রধানসহ সরকারি কর্মকর্তারা একের পর এক পদত্যাগ করতে থাকেন। আর আকচুয়ালিটি ডট এসকে-এর সহকর্মীদের কাছে হত্যাকাণ্ডের পুলিশী তদন্ত নথি ফাঁস হলে স্লোভাকিয়ায় দুর্নীতির পুরো চিত্র সর্বসাধারণের সামনে উন্মোচিত হয়। রিপোর্টারেরা বলেন, ফাইলগুলো দেখায় যে কোচনার কীভাবে বিচারক, রাজনীতিবিদ ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের শাসাতেন ও ভয়ভীতি দেখাতেন; ব্ল্যাকমেইল করার জন্য প্রায়ই সুজসোভাকে দিয়ে তাদের নানা অপকর্মের প্রমাণ (কমপ্রোম্যাট) জোগাড় করতেন।
“দ্য কিলিং অব এ জার্নালিস্ট” চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) এর ম্যাট সারনেকি। প্রতিষ্ঠানটি এখন কোচনারের নথিপত্র সব সাংবাদিকদের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে৷ ওসিসিআরপির ভাষায়: “সাংবাদিককে হত্যা করলেও আপনি সংবাদকে কখনোই হত্যা করতে পারবেন না।”
“দ্য কিলিং অব এ জার্নালিস্ট” মে মাসে হটডকস উৎসবে প্রথমবারের মত প্রদর্শিত হয়েছে।
শি সেইড
যে প্রতিবেদনটি হার্ভি ওয়াইনস্টিনের কেলেঙ্কারি উন্মোচন করেছিল, তারই বহুল প্রত্যাশিত চলচ্চিত্র-রূপ “শি সেইড।” এই চলচ্চিত্রে নিউ ইয়র্ক টাইমসের সাংবাদিক জোডি ক্যান্টর ও মেগান টুহের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ক্যারি মুলিগান ও জো কাজান। এই দুই সাংবাদিক প্রথমবারের মতো হলিউডের সেই প্রভাবশালী ব্যক্তির যৌন নিপীড়ন, ভয়ভীতি প্রদর্শনের কৌশল ও ধামাচাপা দেয়ার ইতিহাস উন্মোচন করেছিলেন। #মিটু আন্দোলনের পালে হাওয়া জোগানোর কৃতিত্ব দেওয়া হয় এই স্টোরিকে, যা কর্মক্ষেত্রে হয়রানি ও যৌন নিপীড়ন এবং নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা নিয়ে বিশ্বব্যাপী সাড়া জাগায়।
একই নামের একটি বেস্ট-সেলিং বইয়ের ভিত্তিতে নির্মিত চলচ্চিত্রটির ট্রেইলারে দেখা যায়, ক্যান্টর ও টোয়ি নারীদেরকে রাজি করানোর চেষ্টা করছেন ওয়াইনস্টিনের নিপীড়ন সম্পর্কে কথা বলার জন্য। ট্রেইলারে সেই প্রভাবশালী শক্তিগুলোর দিকেও ইঙ্গিত করা হয়, যারা হলিউডের সবচেয়ে বড় জেনেও-না-জানা বিষয়টি উন্মোচনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল৷ [ওয়াইনস্টিনকে ২০২০ সালে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের দায়ে ২৩ বছরের সাজা দেয়া হয়েছে।]
২০২২ সালের নভেম্বরে বিশ্বব্যাপী সিনেমা হলগুলোতে মুক্তি পাবে “শি সেইড”।
এনডেঞ্জার্ড
হাইডি ইউইং ও র্যাচেল গ্র্যাডি পরিচালিত “এনডেঞ্জার্ড” চলচ্চিত্রটি ক্রমবর্ধমান বৈরি পরিবেশে কাজ করার চেষ্টায় নিবেদিত চার সাংবাদিককে নিয়ে নির্মিত। গার্ডিয়ান পত্রিকার রিপোর্টার অলিভার লাফল্যান্ড আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চলে ট্রাম্পের সমাবেশ কভার করতে গিয়ে ডানপন্থীদের হামলার ঘটনা তুলে ধরেন; ফটোসাংবাদিক কার্ল জাস্ট মিয়ামিতে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনে পুলিশের বর্বরতা নথিভুক্ত করেন; ব্রাজিলের ফোলহা দে সাও পাওলোর প্যাট্রিসিয়া ক্যাম্পোস বলসোনারোর ব্রাজিলে একটি বিক্ষুব্ধ জনসমাবেশের চিত্র তুলে ধরেন; এবং মেক্সিকান ফটোগ্রাফার সাশেঙ্কা গুতেরেস সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশগুলোর একটিতে নারীহত্যা নিয়ে রিপোর্ট করেন৷ তাঁদের স্টোরিগুলো একসঙ্গে সংকীর্ণতা ও ভুল তথ্যের ক্রমবর্ধমান ঢেউয়ের এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে যা তাঁদের পেশা ও গণতন্ত্রের জন্য সাক্ষাৎ হুমকি।
জুনে ট্রিবেকা চলচ্চিত্র উৎসবে প্রথমবারের মত প্রদর্শিত হয় “এনডেঞ্জার্ড” এবং যুক্তরাষ্ট্রে এইচবিও ম্যাক্স-এ এটি দেখতে পাওয়া যায়৷
আরও পড়ুন
বার্তাবাহকের মৃত্যুতেই বার্তার মৃত্যু হয় না: ইনভেস্টিগেটিভ সেন্টার অব ইয়ান কুসিয়াক
কিউ অ্যান্ড এ উইথ ক্যারি লোজানো: সানড্যান্স’স নিউ হেড অব ডকুমেন্টারি ফিল্মমেকিং
যা দেখবেন: অস্কারের জন্য মনোনীত পূর্ণদৈর্ঘ্য তথ্যচিত্র
মেগান ক্লিমেন্ট একজন সাংবাদিক ও সম্পাদক। তিনি জেন্ডার, মানবাধিকার, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন এবং সামাজিক নীতিতে বিশেষজ্ঞ। জেন্ডার, রাজনীতি, খেলাধুলা, ও প্যারিসের জনজীবন নিয়ে তিনি টুইট করেন। ২০১৫ সাল থেকে এই শহরেই তাঁর আবাস।