মার্সেলা তুরাতির লেখা এ অধ্যায়ে জোরপূর্বক গুমের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। তিনি একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিক, মেক্সিকোতে মাদক যুদ্ধ নিয়ে অনুসন্ধান করেছেন। তিনি রিপোর্টিং প্রকল্প কুইন্টো এলিমেন্টো ল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
টিভি সিরিজ “ব্রেকিং ব্যাড” এর প্রথম পর্বের একটিতে প্রধান দুই চরিত্রকে আমরা দেখি, অ্যাসিড ভর্তি বাথটাবে একটি মৃতদেহকে গলিয়ে ফেলতে। ক্রিস্টাল মেথ প্রস্তুতকারকদের যে মৃত্যুর সময় কতটা করুণ পরিণতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, জীবনের সেই হৃদয়বিদারক পরিণতির চিত্রায়ন ভয়াবহ এ দৃশ্যটি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মৃতদেহকে অ্যাসিডে গলানোর পরীক্ষাটি এতটাই সফল হয় যে পরবর্তী পর্বগুলোতেও আমরা এর পুনরাবৃত্তি দেখতে পাই।
নেটফ্লিক্সে প্রচারিত এ সিরিজে নাটকীয়তা আনার জন্য বিভীষিকাময় এ দৃশ্যগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে চরিত্রগুলোকে আমরা এমন একটি কৌশল ব্যবহার করতে দেখি, যেটি মূলত নিরাপত্তা বাহিনী বা সংগঠিত অপরাধী চক্রগুলো ব্যবহার করে থাকে। তবে কাজটি একটি অপরাধ এবং তা মানবাধিকার লঙ্ঘন। যদিও বিশ্বজুড়ে মানুষদের গুম করার ক্ষেত্রে এটি একটি চর্চা হিসেবে ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রথমদিকে, যুদ্ধের সময় শত্রুর মৃতদেহ স্বদেশে প্রেরণ এড়াতে কর্তৃত্ববাদী শাসনের একটি নিকৃষ্ট কৌশল হিসেবে (১৯৭০ এর দশকে ল্যাটিন আমেরিকা জুড়ে যেমনটা আমরা ঘটতে দেখি), অথবা গৃহযুদ্ধের সময় শত্রু হিসাবে বিবেচিত ব্যক্তিদের সন্ত্রাসীর তকমা দিতে (স্পেন, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, রুয়ান্ডা, সিরিয়া এবং ইরাকে যার সবচেয়ে পরিচিত উদাহরণ রয়েছে) জোরপূর্বক গুম করা হতো। পরবর্তীতে সংগঠিত অপরাধ চক্রের মাধ্যমে এ ধরনের অনুশীলন আরো বেশি শানিত ও প্রসারিত হয়েছে।
বৈশ্বিক সমস্যা
যখন কোনো ব্যক্তি নিখোঁজ হন কিংবা একটি অজ্ঞাত লাশ পাওয়া যায়, মূলত সেখান থেকেই গুম নিয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়।
গুমের মাধ্যমে অপরাধীরা বিভিন্নভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত হয়: এগুলো যে কোনো তদন্ত কাজকে যথেষ্ট জটিল করে তোলে, গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তি— মৃত বা জীবিত – যাই হোক না কেন বেশিরভাগ সময় লোকচক্ষুর আড়ালেই থাকে। এছাড়া এটিকে অপহরণ, শিশু ও মানব পাচার, জোরপূর্বক নিয়োগ বা হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গেও গুলিয়ে ফেলা হতে পারে।
মেক্সিকো ও গুয়াতেমালার মতো দেশে যেমনটা দেখা গেছে, যারা অবৈধ অভ্যুত্থান বা রাষ্ট্রীয়-সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত ছিল, পরবর্তীতে তারাই অপরাধ সংগঠনগুলোকে মানুষের ওপর নির্যাতন চালানো, হত্যা বা গুমের প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
এমনও প্রমাণ রয়েছে যে উঁচু মাত্রায় বিচারহীনতা ও দুর্নীতিতে নিমজ্জিত দেশগুলোতে বলপূর্বক গুমকাণ্ডে জড়িত অপরাধীরা সুরক্ষিত থাকে এবং রাষ্ট্রীয় এজেন্টরা পরোক্ষভাবে হলেও এই কাজের সঙ্গে জড়িত থাকে। পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তোলে মাদক ও কালো টাকা। সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অন মিসিং পার্সনস (আইসিএমপি)-এর প্রতিবেদনের উপসংহারে বলা হয়েছে যে, “দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকায় অবৈধ মাদক শিল্পের উত্থান মাদক কারবারী, ডান ও বামপন্থী আধাসামরিক বাহিনী এবং সশস্ত্র নিরাপত্তা বাহিনীর একটি বিষাক্ত সংমিশ্রণ তৈরি করেছে। এর ফলে প্রতিটি ক্ষেত্রেই ভয়ভীতি প্রদর্শন, হত্যা এবং গুমের মহামারি দেখা দিয়েছে।”
জাতিসংঘের মতে, বিশ্বের অন্তত ৮৫টি দেশে সংঘাত বা দমন–পীড়নের সময় লাখ লাখ মানুষ নিখোঁজ হয়েছে। যেহেতু অনেক দেশ এই অপরাধের পরিসংখ্যান প্রকাশ করে না এবং বিশ্বব্যাপী এর কোনো স্বীকৃত সংজ্ঞা নেই, তাই প্রতি বছর কত লোক নিখোঁজ হয় তা সঠিকভাবে অনুমান করা অসম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, কিছু দেশে শুধুমাত্র সরকারি এজেন্টদের দ্বারা সংঘটিত জোরপূর্বক গুমের শিকার হওয়া লোকেদের পরিসংখ্যান গণনা করা হয়, কিছু দেশে শুধু সহিংসতার সঙ্গে সম্পর্কিত গুমের হিসাব রাখা হয়, এবং অন্যরা যুদ্ধ, অভিবাসন বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো নানা কারণে যাদের কখনো হদিস মেলেনি তাদের অন্তর্ভুক্ত করে।
নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের ভয়াবহ ব্যক্তিগত ও মানসিক টানাপোড়েনের পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রভাবও মোকাবেলা করতে হয়। অস্ট্রেলিয় এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, একজন নিখোঁজ ব্যক্তির বিপরীতে ১৭৭০ মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ অর্থ খরচ হয়— যার মধ্যে রয়েছে খোঁজাখুঁজির খরচ, নিখোঁজ ব্যক্তির খোঁজ করার সময় পরিবারের সদস্যদের উপার্জনজনিত ক্ষতি এবং স্বাস্থ্য ও আইনি খরচ।
তাছাড়া দেশভেদে গুমের ধরন বেশ আলাদা এবং তা নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। ভেনেজুয়েলা বা ভারতের মতো দেশগুলোতে যারা বিভিন্ন অবৈধ খনিতে কাজ করে তারা নিখোঁজ হয়েছে বলে জানা যায়; ফিলিপাইনে, সরকার যাদের অপরাধী বা মাদক বিক্রেতা হিসাবে বিবেচনা করে এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এটি ঘটে; মেক্সিকোয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর আঞ্চলিক বিরোধে ধরা পড়া মানুষদের সঙ্গে এটি ঘটতে পারে; ভিয়েতনামের শিশুরা ইউরোপগামী পাচারকারী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে নিখোঁজ হতে পারে; থাই সীফুড শিল্পে জোর করে দাস শ্রমে নিয়োজিত কিছু জেলেকে আর ফিরতে দেখা যায় না; এছাড়া ইতালীয় মাফিয়ারা কিছু ভুক্তভোগীকে এসিডে গলিয়ে নিশ্চিহ্ন করেছে।
অপরাধীরা বিভিন্ন কারণে লোকেদের গুম করে: সম্ভাব্য শত্রুদের শাস্তি দিতে, ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে বাধা দিতে পারে এমন ব্যক্তিদের ক্ষতির উদ্দেশ্যে, বিভিন্ন সম্প্রদায়কে হুমকি দিতে বা আতঙ্ক তৈরি করতে (এভাবে তারা মানুষ এবং অঞ্চলগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে), এবং আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, বাণিজ্য রুট বা বাজারের মালিকানা সম্পর্কিত বার্তা পাঠাতে। এছাড়া এটি কর্পাস ডেলিক্টি (মৃত ব্যক্তির দেহ ও অপরাধের প্রমাণ) অপসারণের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ড গোপনের জন্যেও ব্যবহৃত হয়। এ ধরনের গুমের মাধ্যমে পুলিশের অবাঞ্ছিত মনোযোগও এড়ানো সম্ভব হয়।
গুম এমন একটি অপরাধ, যার শেষ নেই: এটি ততক্ষণ পর্যন্ত পীড়া দিতে থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত না তার শিকারের খোঁজ মেলে, জীবিত হোক কিংবা মৃত। এ অনিশ্চয়তার ধ্বংসাত্মক প্রভাব রয়েছে। পরিবারের হারিয়ে যাওয়া সদস্যকে যারা খুঁজতে থাকেন, তারা সবসময়ে এক ধরনের পীড়নের মধ্য দিয়ে যান। এই অনিশ্চিত পরিস্থিতি তাদের স্বাস্থ্য, সঞ্চয়, সামাজিক বন্ধন, স্থিতিশীলতা, জীবন ঘিরে পরিকল্পনা এবং মানসিক ও মনস্তাত্ত্বিক সুস্থতা কেড়ে নিতে পারে। পরিবারের পাশাপাশি ভুক্তভোগীর প্রিয়জনেরাও প্রভাবিত হন, যা ক্রমশ গোটা সম্প্রদায়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সর্বোপরি, বিচারহীনতার সংস্কৃতি অপরাধের পুনরাবৃত্তি বাড়িয়ে তোলে।
এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে কোনো একক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাবে না, কারণ অপরাধী প্রত্যেকটি গোষ্ঠী তাদের নিজস্ব রীতি, ক্ষমতা ও পরিস্থিতি অনুযায়ী কাজ করে। এছাড়া যেখানে রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো অবৈধ কাজের সহযোগী বা সরাসরি জড়িত, সেখানে সম্পূর্ণ চিত্রটি তুলে ধরা অনেক বেশি কঠিন হতে পারে।
অনেক প্রমাণও রয়েছে যে, বিভিন্ন সংস্থায় এমন অনেক লোক আছে যারা অন্যদের গায়েব করতে পারদর্শী। এর অর্থ হতে পারে ভুক্তভোগীদের জোরপূর্বক শ্রম শিবিরে নিয়ে যাওয়া, হত্যা করা এবং মৃতদেহ মাটির নিচে বা পানির নিচে লুকিয়ে রাখা, অ্যাসিডে দ্রবীভূত করা বা দাহ করা। তাদের নিষ্ঠুরতা কল্পনারও অতীত।
অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে গুমের শিকার ব্যক্তিদের খুঁজে পাওয়ার ঘটনা বিরল। তবে সাংবাদিকেরা নিখোঁজ হওয়ার প্রেক্ষাপট ও অপরাধী গোষ্ঠীর অপরাধের ধরন তুলে ধরতে, কারা ক্ষতিগ্রস্ত ও কারা অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তা অনুসন্ধানে, রাষ্ট্রীয় এজেন্টদের সংশ্লিষ্টতা উন্মোচনে এবং সরকারি তদন্তের সাফল্য-ব্যর্থতা মূল্যায়নে সহায়তা করতে পারেন। তারা স্থান, উদ্দেশ্য ও নিখোঁজের ধরন ঘিরে তৈরি হওয়া বিভ্রান্তিগুলো কাটাতেও সাহায্য করতে পারেন।
প্রসিকিউটরের অফিসের মতো অপরাধীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া, নিরাপত্তা কেন্দ্রে যাওয়া, মৃতদেহ সন্ধানের জন্য সম্ভাব্য জায়গা খনন এবং নিহত ব্যক্তিকে শনাক্তের জন্য দেহাবশেষের জেনেটিক বিশ্লেষণের ক্ষমতা সাংবাদিকদের থাকে না। কিন্তু তথ্য প্রাপ্তির জন্য তারা বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন।
সূত্র
আপনার অনুসন্ধানী কাজের শুরুটা করুন সংশ্লিষ্ট প্রকাশিত সংবাদ, নিবন্ধ, ছবি এবং সূত্র সংগ্রহের মাধ্যমে। এগুলো মামলা সম্পর্কে গভীর প্রেক্ষাপট জানাতে সক্ষম। তথ্য সংগ্রহ থেকে শুরু করে অনুসন্ধানের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিটি ধাপে ব্যক্তিগত ঝুঁকিগুলো সনাক্ত করুন, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নিম্নলিখিত সংস্থাগুলোতে গুম বিষয়ে স্বীকৃত বিশেষজ্ঞ রয়েছে:
- ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অন মিসিং পিপল (আইসিএমপি) নিখোঁজ ব্যক্তিদের মামলা পর্যবেক্ষণে বিশেষায়িত এবং সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক আইন সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান রাখা সংস্থা।
- ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইএমও) মিসিং মাইগ্রেশন প্রজেক্টের আওতায় শরণার্থীসহ নিখোঁজ অভিবাসী এবং আশ্রয়–প্রার্থীদের খুঁজে বের করে, যারা অভিবাসন প্রক্রিয়ায় সময় মারা গেছে বা নিখোঁজ হয়েছে।
- জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন অফিস (ওএইচসিএইচআর) অপরাধের শিকার ও অভিবাসীদের মানবাধিকার সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে। জোরপূর্বক গুমের ঘটনা দেখার জন্য তাদের আলাদা একটি কমিটি আছে।
- অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জোরপূর্বক গুমের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে।
- মেক্সিকোর গণকবরগুলো খুঁজে বের করতে সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করেছে হিউম্যান রাইটস ডেটা অ্যানালাইসিস গ্রুপ (এইচআরডিএজি)। তারা জোরপূর্বক গুমের ঘটনাগুলো অনুসন্ধানে ডেটা ব্যবহার করে এবং নির্দিষ্ট দেশ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
- ইকুইপো আর্জেন্টিনো ডি অ্যানট্রোপোলজি ফরেন্স (ইএএএফ)। আর্জেন্টিনার এ দলটি নিখোঁজ ব্যক্তিদের অনুসন্ধান, পুনরুদ্ধার এবং সনাক্তের জন্য ফরেনসিক কৌশল প্রয়োগ করে।
- ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অফ দ্য রেড ক্রস (আইসিআরসি) সারা বিশ্বের গুমের ঘটনাগুলোর দিকে দৃষ্টি দেয়।
ফিল্ডওয়ার্ক পরিচালনার আগে, সুরক্ষার সম্ভাব্য সব ধরনগুলো চিহ্নিত করতে এ অঞ্চলে কাজ করে এমন অপরাধী গোষ্ঠীগুলোর পাশাপাশি স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পটভূমি সম্পর্কে যতটা সম্ভব জানা অপরিহার্য।
সাংবাদিকদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো পক্ষপাতগ্রস্ত হতে পারে, তাই গণমাধ্যমে প্রকাশিত সব রিপোর্ট চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করবেন না। পরিবর্তে, এমন সোর্সের সন্ধান করুন যা অপরাধের ধরন সম্পর্কে ধারণা দিতে সক্ষম। সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে একটি ছক তৈরি করুন। কীভাবে পর্যায়ক্রমে এবং কোন মুহূর্তে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে তা নির্ধারণ করুন। যে কোনো অনুসন্ধানে নিরাপত্তা ঝুঁকিগুলো হিসেব করুন৷
ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগে সবসময় এলাকায় যোগাযোগের চেষ্টা করুন, জরুরী পরিস্থিতিতে ব্যক্তিগত সুরক্ষা প্রোটোকল নিশ্চিত করুন, এবং যেসব তথ্যবহুল নথি বা জিনিসপত্র আপনার অনুসন্ধান বা সোর্সকে বিপদে ফেলতে পারে, সেগুলো বহন করা এড়িয়ে চলুন।
কে বা কারা এবং কিভাবে গুম করেছে তা প্রতিষ্ঠা করতে পরিকল্পনামাফিক অগ্রসর হন। মনে রাখতে হবে, গুম হওয়া ব্যক্তি জীবিত, মৃত বা আটক হতে পারে। ওই এলাকায় যদি কোন গোপন কবর বা বেওয়ারিশ লাশ পাওয়া যায়, তা এলাকার পরিবেশ পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খায় কিনা যাচাই করুন।
-
ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্য ও কাছের লোকজন
ভুক্তভোগীর পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে কথা বলা বা সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় অবশই সম্মান ও সহানুভূতি প্রদর্শন করুন ও কৌশলী হোন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যরা অনুসন্ধানে নামেন ও তথ্য সংগ্রহ করেন। ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের অনুভূতিকে আঘাত না করে কিভাবে তাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া যায় সে সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেয়া গুরুত্বপূর্ণ।
সাংবাদিক হিসেবে আপনাকে অবশ্যই গভীরভাবে মনে রাখতে হবে যে, বেদনাদায়ক স্মৃতিগুলো মানুষকে কতটা প্রভাবিত করে। তাছাড়া সময়ের সঙ্গে ঘটতে থাকা বিভিন্ন ঘটনা, খবর, মানুষের আলোচনা সব মিলিয়ে খুঁটিনাটি বিষয়গুলো বিস্মৃত হয়ে যেতে পারে। তাই সাক্ষ্যের সমর্থনে প্রমাণ খোঁজ করা গুরুত্বপূর্ণ। লক্ষ্য রাখতে হবে, পরস্পরবিরোধী ভাষ্য এড়াতে গিয়ে যেন কোনো ভাষ্য জোর করে চাপিয়ে না দেওয়া হয়।
-
সাক্ষী
মাঠে কাজের সময় কে সাক্ষী হবেন এবং নিখোঁজ ব্যক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে পারবেন তা খুঁজে বের করুন।
-
বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা
গুমের আগ মুহূর্তে ওই ব্যক্তির সঙ্গে ছিলেন বা কিছুদিনের জন্য বন্দি ছিলেন এমন মানুষদের কাছ থেকে আপনি আপনার সবচেয়ে মূল্যবান তথ্যগুলো পেতে পারেন। ভয়ের কারণে অনেক সময় তারা এ বিষয়ে কথা বলা থেকে বিরত থাকেন। তাই অনুসন্ধানের প্রেক্ষিতে যাদের কথা বলা হয়েছে বা যাদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে, সাংবাদিকদের অবশ্যই সে সব সোর্সের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং তারা যেন পুনরায় ভুক্তভোগী না হন তা নিশ্চিত করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে, যাদেরকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে বা দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে তাদের সঙ্গে কথা বলা সহজ হয়।
-
মানবাধিকারকর্মী, আইনজীবী, জোট, সম্প্রদায়ের নেতা, যাজক
ঘটনার মিলের কারণে যেসব ভুক্তভোগী পরিবার জোট বেঁধেছে, তাদের কাছে এমন তথ্য থাকতে পারে যা গুমের ঘটনার একটি প্যাটার্ন প্রমাণ করে, এবং তারা হয়তো এগুলো ব্যবহার করে জট খোলার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
-
বিচারিক নথি
অপরাধী নেটওয়ার্কের সঙ্গে সরাসরি জড়িত কারাবন্দী এমন কোনো ব্যক্তি কী আছে, যার কাছে প্রত্যক্ষ তথ্য রয়েছে? কেউ কি অপরাধী গ্রুপের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছে? মনে রাখবেন যে সব তথ্য অবশ্যই অন্যান্য সোর্সের সঙ্গে ক্রস–চেক করা উচিত।
-
তথ্য অধিকার আইনে তথ্যের অনুরোধ
সাংবাদিকেরা যে সব তথ্য চান তা সবার জন্য উন্মুক্ত অবস্থায় না থাকলেও, প্রায় ক্ষেত্রে সেগুলোর অস্তিত্ব থাকে। এ তথ্যগুলো হাতে পেতে একজন সাংবাদিককে অবশ্যই এফওআইয়ের (ফ্রিডম অব ইনফরমেশন) এর মতো স্বচ্ছ আইনি টুল প্রয়োগ করতে পারেন কিংবা তার নিজ দেশে বা অন্য দেশে এ ধরনের মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানের শরণাপন্ন হতে পারেন।
-
অন্যান্য মুক্ত উৎস
নিখোঁজ ব্যক্তির সামাজিক মাধ্যম অ্যাকাউন্টগুলোতে তথ্য সন্ধান করুন। তাদের পোস্ট, কনট্যাক্ট এবং অন্যান্য পাবলিক টুলসগুলো সার্চ করুন। এক্সেল স্প্রেডশীটে তথ্যগুলো গুছিয়ে রাখলে উপকৃত হবেন।
-
পুলিশ এবং প্রসিকিউটর
এরাই মূলত সরকারী পক্ষের হয়ে তদন্ত চালান। তাই সতর্কতা অবলম্বন করুন যেন এমন কোনো তথ্য প্রকাশিত হয়ে না পড়ে যা তাদের তদন্তকে ঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারে, যেমন গোপন তথ্য বা অসাবধানতাবশত প্রকাশিত কোনো তথ্য যা অপরাধীদের সহায়তা বা ক্ষতিগ্রস্তদের আরও বিপদের দিকে ঠেলে দেয়।
পুলিশ বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে পরামর্শ করার সময়, অপরাধ সম্পর্কে আপনার কাছে থাকা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকুন। কেননা, অপরাধীদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের যোগসাজশ থাকলেও থাকতে পারে।
-
স্বাধীন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ
প্রাপ্ত তথ্যগুলো সঠিক কিনা— সে বিষয়ে স্বাধীন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা আপনাকে সাহায্য করতে পারেন। বিশেষ বিষয়ে, যেমন জেনেটিক প্রমাণ পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের পদ্ধতির নির্ভরযোগ্যতা সম্পর্কে তারা তথ্য বা মতামত দিতে পারেন।
কেস স্টাডি
মেক্সিকোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে একটি গণহত্যার সূচনা করেছিল
২০১৭ সালে প্রো-পাবলিকা, মেক্সিকোর আলেন্দেতে মাদক–সংশ্লিষ্ট গণহত্যার ঘটনা নিয়ে একটি প্রতিবদেন প্রকাশ করে। ধারণা করা হয়, এ ঘটনার জেরে কয়েক ডজন ব্যাক্তি নিখোঁজ হন। ঘটনার সত্যতা নিরুপণের জন্য সাংবাদিকেরা ওই এলাকায় বেশ কয়েক দফায় যান, ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং ৯১১ নম্বরে করা ফোনকলের তথ্য ও অন্যান্য অফিসিয়াল নথি সংগ্রহ করেন। প্রতিবেদনটিতে ভুক্তভোগীদের গল্পগুলোকেও পুননির্মাণ করা হয় এবং তুলে ধরা হয়, সেসময় মেক্সিকো ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কী ঘটেছিল ও কতজন লোক নিখোঁজ হয়েছিল।
একটি এনজিওর পক্ষ থেকে এপির সাংবাদিকদের ইন্দোনেশিয়ার একটি প্রত্যন্ত দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে প্রায় ২ হাজার শ্রমিককে ক্রীতদাসের মতো রাখা হতো এবং তাদের পরিবারও তাদের খবর জানত না। সাংবাদিকেরা ওই শ্রমিকদের সাক্ষাৎকার নেন এবং বাড়িতে ফিরে আসা লোকদের খুঁজে বের করেন, দ্বীপের গোপন কবরগুলোকে তালিকাভুক্ত করেন— যেখানে মৃতদের মিথ্যা নামে কবর দেওয়া হয়েছিল। এ অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি ২০১৬ সালে পুলিৎজার পুরস্কার জিতেছে। এর কারণে ইন্দোনেশিয় কর্তৃপক্ষ ক্রীতদাস শ্রমিকদের উদ্ধার ও অপরাধীদের আটক করতে বাধ্য হয়।
নিরুদ্দেশ: সত্য উন্মোচনের জন্য পরিবারের ঝুঁকিপূর্ণ অনুসন্ধান
২০২০ সালে প্রকাশিত গ্লোব অ্যান্ড মেইলের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি তুলে ধরে, কীভাবে নয়টি মেক্সিকান পরিবার মেক্সিকোর বন্দর নগরী ভেরাক্রুজের উপকণ্ঠে একটি গোপন কবরে প্রিয়জনদের হদিস পায়। সংবাদপত্রের ডিজিটাল দলটি কবরের একটি থ্রিডি মডেল তৈরি করে ভূখণ্ডের ছবির সঙ্গে কবর খননকারী স্বেচ্ছাসেবকদের সাক্ষ্য মিলিয়ে দেখে, যা এলাকাটিকে চিত্রিত করতে সহায়তা করে।
কৌশল ও পরামর্শ
দ্রুত কাজ করুন, তবে সতর্কতার সঙ্গে
নিখোঁজ হওয়ার প্রথম কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তথ্য পাওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। গুমের শিকার ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় বা টেক্সট বার্তার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ যোগসূত্র রেখে যেতে পারে। এছাড়া প্রতিবেশীর বাড়ি কিংবা রাস্তার আশপাশের দোকানগুলোর ক্যামেরা রেকর্ডিং, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, ঘটনার সময় কিছু অংশের দৃশ্য ধারণ করা পথচারী— এমন উৎসগুলো থেকেও তথ্য নেয়া যেতে পারে। মনে রাখবেন, আপনার কাছে নিরাপত্তা ক্যামেরার অ্যাক্সেস থাকলে, আপনার কাছে প্রমাণও আছে। আপনি পুলিশ নন, তাই আপনি আপনার ফোন দিয়ে আসল রেকর্ডিংটি কপি করতে পারেন, তবে মূল কপিটি আপনার সঙ্গে বহন করা উচিত নয়।
জিওলোকেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করুন
পরিবার-পরিজনদের অনুমতি ও সহযোগিতা পেলে, আপনি অনুসন্ধান করে দেখতে পারেন যে ভুক্তভোগী টেলিফোন ব্যবহার করেছে কিনা। অন্যান্য জিওলোকেশন টুলগুলোও কাজে লাগাতে পারেন। এছাড়াও, আপনি দেখতে পারেন যে সেই ব্যক্তি নিখোঁজ হওয়ার আগে বা পরে কোনো কল পেয়েছেন কিনা। সাধারণত, সরকার তার তদন্তের অংশ হিসাবে এ তথ্যগুলো সংগ্রহ, কাছাকাছি টেলিকমিউনিকেশন অ্যান্টেনা সনাক্ত এবং সম্ভাব্য অবস্থান নির্ণয় করতে পারে। কিছু দেশে, এই তথ্যগুলো পরিবারের পক্ষ থেকে চাওয়া যেতে পারে। তারপর, তাদের মাধ্যমে সাংবাদিকেরা তা পেতে পারেন।
গুগল আর্থ, গুগল স্ট্রিট ভিউ এবং স্যাটেলাইট ইমেজ ব্যবহার করুন
এই টুলগুলো ব্যবহার করে সাংবাদিকেরা এমন সব এলাকা দেখতে পারেন যেখানে স্বাভাবিকভাবে প্রবেশ করা কঠিন বা যা কোনো অপরাধীচক্রের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০০৯ সালে মেক্সিকোর জুয়ারেজে, গুগল স্ট্রিট ভিউ ইমেজে একদল তরুণীর ছবি ধারণ করা হয়, যারা পরে একটি হোটেলের বাইরে থেকে অদৃশ্য হয়ে যান। ওই জায়াগাতে আরও কয়েক ডজন কিশোরী যৌন পাচারের শিকার হয়েছিল৷ এক্ষেত্রে ড্রোন ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে আপনাকে অবশ্যই অপরাধীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত স্থানের ঝুঁকি মূল্যায়ন করতে হবে।
নথি ও বিবৃতির সত্যতা যাচাই করুন
মুক্ত-তথ্যের প্লাটফর্ম বা সাক্ষাৎকার থেকে পাওয়া ফরেনসিক বা সরকারি তথ্যও মিথ্যা হতে পারে। তাই আপনার কাছে থাকা সরকারি তথ্যগুলোও খানিকটা হেরফের হতে পারে, বিশেষ করে যখনই স্বার্থের দ্বন্দ্ব বা দুর্নীতির ঘটনা থাকে। তাই সবসময় এমন বিশেষজ্ঞদের খোঁজ করুন যারা ফরেনসিক তথ্য বিশ্লেষণ ও যাচাই করতে সহায়তা করতে পারে।
তথ্যের জন্য ‘টোপ’ ফেলুন এবং অপেক্ষা করুন
কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনুসন্ধানের প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করার মাধ্যমে নতুন সোর্স পেতে পারেন এবং এটি নতুন তথ্য সংগ্রহের ‘টোপ’ হিসেবে কাজ করতে পারে। তদন্ত চলছে— জানার পর কিছু ব্যক্তি হয়তো ওই বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে উৎসাহিত হতে পারেন।
ভুক্তভোগীকে পাওয়া গেলে সতর্কতার সঙ্গে অগ্রসর হন
নিখোঁজ ব্যক্তির মৃতদেহের হদিস মিললে সঙ্গে সঙ্গেই সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাবেন না — এমনকি তার পোশাক, ট্যাটু বা ব্যক্তিগত নথি মিলে গেলেও না। জেনেটিকভাবে নিশ্চিত না হয়ে, বা বিশেষজ্ঞদের বৈধতা ছাড়াই এ তথ্য প্রদান করা পরিবারকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলবে। এমনকি পরবর্তীতে আপনার ওপর তারা আস্থাও হারাতে পারে।
শারীরিক, মানসিক ও ডিজিটাল নিরাপত্তা
শারীরিক, মানসিক এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য আপনাকে অবশ্যই সুস্পষ্টভাবে প্রোটোকল অনুসরণ করতে হবে। সোর্সের সঙ্গে আপনার কীভাবে যোগাযোগ করা উচিত এবং সংবেদনশীল তথ্যকে কিভাবে সুরক্ষিত রাখবেন— সে সম্পর্কে জানুন।
গুমবিষয়ক অনুসন্ধান একঘেয়ে, হতাশামূলক ও বিপজ্জনক হতে পারে। মামলার নথিপত্রে মৃতদেহ ও নির্যাতনের ছবি এবং নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকারও থাকতে পারে। তাই আপনি যে সংগঠনগুলোকে বিশ্বাস করেন বা আস্থা রাখতে পারেন তাদের সমর্থন নেয়া, সেলফ-কেয়ার রুটিন মানা এবং খুব বেশি জটিল মামলার ক্ষেত্রে থেরাপিতে অংশ নেয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।
উপসংহার
গুমবিষয়ক অনুসন্ধান কোনো মামুলি চ্যালেঞ্জ নয়। এক্ষেত্রে যেহেতু সহিংসতার ব্যাপকতা বৃদ্ধির পাশাপাশি অপরাধীদের বিচারহীনতার বিষয়গুলোও জড়িত, তাই প্রত্যেক সাংবাদিকের দায়িত্ব হচ্ছে, তাদের প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভুক্তভোগী যে ব্যক্তিদের কথা বলা হয়েছে বা যাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে, তাদের পরিণতি সম্পর্কে চিন্তা করা। এছাড়া সোর্স হিসেবে কেউ যখন আপনার সঙ্গে কথা বলতে যাবে তখন তিনি কী ধরনের ঝুঁকির মুখোমুখি হতে পারেন, সে সম্পর্কে অবহিত করা। সোর্স হিসেবে তিনি এই ঝুঁকি নিতে ইচ্ছুক কিনা তা জিজ্ঞাসা করুন এবং কীভাবে ঝুঁকির মাত্রা প্রশমিত করতে পারেন সে বিষয়ক পরামর্শ দিন।
একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিক হিসেবে আপনার অগ্রাধিকার হচ্ছে ভুক্তভোগী ব্যক্তিটি যেন পুনরায় অত্যাচারিত বা নির্যাতনের মুখোমুখি না হন, তা নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা। আপনার সোর্স, অনুসন্ধান এবং নিজেকে সবসময় সুরক্ষিত রাখার বিষয়টি মনে রাখবেন।