আউট ল ওশান প্রজেক্ট একটি সাংবাদিকতা বিষয়ক অলাভজনক সংগঠন, যারা মূলত পৃথিবীর দুই-তৃতীয়াংশ জায়গাজুড়ে ছড়িয়ে থাকা সাগর-মহাসাগর নিয়ে সাংবাদিকতা করে। সাংবাদিকতার বিষয় হিসেবে সাগর অনেক সময় বৈশ্বিক গণমাধ্যমের নাগালের বাইরে থেকে যায়, তবে বিষয়টি অনুসন্ধান-উপযোগী। কখনো কখনো সমুদ্রকে অনেক দূরের অথবা রিপোর্টিংয়ের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং বিষয় বলে মনে হতে পারে, তবে এটি মানব পাচার, আধুনিক দাসত্ব, চোরাচালান, জলদস্যুতা ও পরিবেশগত অপরাধের মতো জরুরি বিষয়গুলোর অন্যতম ক্ষেত্র। উন্মুক্ত সমুদ্র এতটাই বিশাল যে সেখানে নজরদারি করা বেশ কঠিন। আইনিভাবেও উন্মুক্ত সমুদ্র নিয়ে অস্পষ্টতা আছে, যার সুযোগ নিয়ে সেখানে “খুন, বর্জ্য ডাম্পিং ও চুরির” মতো ঘটনা ঘটে। ঠিক একই সুবিধার কারণে, লঘু অপরাধের জন্য স্থলভাগের ধরাবাধা আইন থেকে যারা নিস্তার পেতে চায়, এখানে তারা স্বাধীনতা খোঁজে।
পরিচালক ও প্রতিষ্ঠাতা, পুলিৎজারজয়ী অনুসন্ধানী সাংবাদিক ইয়ান আরবিনা এই উন্মুক্ত সমুদ্রকে রিপোর্টিং জগতের “শেষ সীমান্ত” বলে অভিহিত করেন এবং এই বিষয় নিয়ে রিপোর্টিংয়ের ঘাটতি কমাতে ২০১৯ সালে আউট ল ওশান প্রজেক্ট প্রতিষ্ঠা করেন। এর আগে নিউ ইয়র্ক টাইমসে থাকাকালে আরবিনা বেশ কয়েক বছর ধরে এ বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন।
দলটির সর্বশেষ উদ্যোগ হলো লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস ও কানাডিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন (সিবিসি) এর সঙ্গে যৌথ অংশীদারিত্বে তৈরি সাত-পর্বের একটি পডকাস্ট ধারাবাহিক, যার মূল ভিত্তি হলো বিশ্বের সাগর-মহাসাগর নিয়ে করা আট বছরের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টিং। সমুদ্রে দাসত্ব, সামুদ্রিক ইতিহাসে কোনো আইন-প্রয়োগকারী সংস্থার দীর্ঘতম অভিযান, সমুদ্রে জলাবদ্ধ অবস্থায় গর্ভপাত সেবা, ইংল্যান্ড উপকূলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন একটি সামুদ্রিক দুর্গের উদার ক্ষুদ্র-জাতিরাষ্ট্রে পরিণত হওয়া, এবং আইন নিজ হাতে তুলে নেওয়া পরিবেশবাদী গ্রুপসহ সহ বিচিত্র অনেক বিষয় উঠে এসেছে ধারাবাহিকটিতে।
এধরনের জটিল গল্পগুলোতে কীভাবে প্রাণ সঞ্চার করা যায়, একটি পডকাস্ট বানাতে কী লাগে আর ছোটখাটো অন্যান্য অনুসন্ধানী গণমাধ্যমগুলো নিজেদের গল্প বলতে কীভাবে অডিও-র শক্তি কাজে লাগাতে পারে – এমন সব বিষয় নিয়ে আরবিনার সঙ্গে কথা বলেছে জিআইজেএন। দৈর্ঘ্য ও স্পষ্টতার কথা চিন্তা করে সাক্ষাৎকারটি সম্পাদনা করা হয়েছে।
জিআইজেএন: এত কিছু থাকতে আপনি কেন মহাসাগর নিয়ে পডকাস্ট বানাতে চাইলেন?
ইয়ান আরবিনা: বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ অঞ্চলজুড়ে জলভাগ, আর এ নিয়ে আমাদের কাজ; বিশেষ করে সেখানে চলমান মানবাধিকার, শ্রম ও পরিবেশগত লঙ্ঘনের ইস্যুগুলোতে আমরা নজর দেই। এ ধরনের রিপোর্টিং আমাদের একেবারেই অন্য জগতে নিয়ে যায়। আর এই রিপোর্টিং কখনো কখনো বেশ দুঃসাহসী ও অন্ধকারাচ্ছন্ন। এই দুই কারণেই গত আট বছরের রিপোর্টিংকে পডকাস্টে রূপ দেয়া একটি ভালো চিন্তা মনে হয়েছিল: আমি বিশ্বাস করি, মানুষকে ধরে রাখার এক আবেগীয়, ও অনেকটা বুদ্ধিবৃত্তিক স্বতন্ত্র শক্তি – অডিওর আছে। এই অঞ্চল নিয়ে তেমন জানাশোনা না থাকায় আমরা চেয়েছি – মানুষ যেন চোখ বন্ধ রেখে একটু কল্পনা করে, আর এগুলোকে সমস্যা না ভেবে বরং একটু যেন উপলব্ধি করে। পডকাস্ট ফরম্যাটে আমরা এই কাজটি আরও ভালোভাবে করতে পারি।
জিআইজেএন: এই নতুন পডকাস্টের সাতটি পর্ব আছে। প্রতিটির আলাদা আলাদা থিম আছে৷ আপনি কেন কেবল একটি অনুসন্ধানে জোর না দিয়ে পডকাস্টে বিষয়ভিত্তিক অনুসন্ধানে নজর দিয়েছেন?
আইইউ: বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আমাদের লক্ষ্য হলো সমুদ্র নিয়ে করা স্টোরির ব্যাপ্তি ও বৈচিত্র্য বজায় রাখা, এই পরিসর সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে ভাবনার নতুন খোরাক জোগাতে সেখানকার চলমান ঘটনা তুলে ধরা। আমার ধারণা, দূর সমুদ্রের গল্প বলতে গিয়ে সাধারণত মানুষের মানসপটে ভেসে উঠে বিপি (ব্রিটিশ বহুজাতিক তেল ও গ্যাস কোম্পানি), সমুদ্রের পানিতে ভেসে থাকা তেল, সোমালিয় জলদস্যু ও প্লাস্টিক দূষণের ছবি। সাংবাদিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে এগুলো বড় ও আইনি বিষয়, তবে আমরা এই বিষয়কে জনসাধারণের কাছে সহজবোধ্য করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আর তাই সবাই যেন সহজে বুঝতে পারে, এমন করে আমরা একটি ধারাবাহিক তৈরি করতে পারতাম যেখানে কেবল একটি গল্প থাকত, তবে সেখানে অনেক চরিত্র ও ঘটমান বিস্ময়কর সমস্যাগুলো উঠে আসত না। বড় পরিসরে কাজ করাটা আমাদের কাছে সঠিক মনে হয়েছে।
জিআইজেএন: পডকাস্টে আসা অনেক স্টোরিই মৌলিক অনুসন্ধান ছিল। অতীতের লিখিত গল্পকে আপনারা কীভাবে অডিও উপযোগী করে তুলেছেন? আপনি কি বরাবরই আগে থেকে ভাবতেন যে কোনো কিছুকে ভিন্ন ভিন্ন ফরম্যাটে তুলে ধরা যায়?
আইইউ: সবসময় না পারলেও, আমাদের রিপোর্টিংয়ের লক্ষ্য থাকে প্রতিটি স্টোরিতে ভূ-ভাগের বাইরের একটি অংশ থাকবে। এর আংশিক কারণ হলো কেবল ভূ-ভাগে নেয়া সাক্ষাৎকারের ওপর নির্ভর করলে আপনি যে স্টোরি চান তা পাবেন না। তবে দ্বিতীয় বড় সুবিধা হলো ভিডিও। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে আসলে যা ঘটছে, আমরা সেই দৃশ্য ধারণ করতে পারি। তাই ভ্রমণ সংশ্লিষ্ট সব গল্পে আমার সঙ্গে একজন ভিডিওগ্রাফার ছিলেন। আর যখন থেকে আমি এই প্রতিবেদন করা শুরু করি, সেই ২০১৪ সাল থেকে এভাবেই চলছে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ভিজ্যুয়াল সামগ্রী আছে আর সেখান থেকেই আমরা অডিওতে নজর দিয়েছি। ফলে গুণগত মান ঠিক ছিল।
জিআইজেএন: এক্ষেত্রে আপনি কর্মীদের কীভাবে কাজে লাগাতেন? আপনাকে কি অতিরিক্ত দক্ষতাসম্পন্ন কর্মী আনতে হতো? প্রকল্প হিসেবে আপনার সংগঠনের জন্য ব্যাপারটি কেমন ছিল- এর সঙ্গে কী কী যুক্ত ছিল?
আইইউ: কর্মী নিয়োগের আগে অর্থায়নের বিষয়টি আসে। কাজের আগে কর্মীদের জন্য টাকার যোগান নিশ্চিত করতে হবে। আমরা এই লক্ষ্যে ন্যাটজিও ফেলোশিপের (ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ফেলোশিপ) জন্য আবেদন করেছি। একবার তহবিলের ব্যবস্থা হয়ে গেলে আমি ঠিক জানতাম কাকে কোন কাজে লাগানো যাবে। রায়ান ফ্রেঞ্চ পেশায় একজন ফ্রিল্যান্স ভিডিওগ্রাফার। পডকাস্টের আগে আমাদের কাছে থাকা সব ফুটেজ দিয়ে সূচী তৈরিতে তিনি বেশ কয়েক মাস কাটিয়েছেন। ফুটেজ সম্পর্কে তাঁর বেশ ভালো দখল থাকায় আমি ভাবলাম, আমরা কেন এগুলোর সদ্ব্যবহার করছি না? রায়ান আগে কখনও পডকাস্ট করেননি — তিনি ছিলেন অসাধারণ ভিডিওগ্রাফার ও গল্পকার, তবে তিনি অডিও নিয়ে কাজ করেননি। আমার চোখে এটি বরং একটি সুযোগ, কারণ তিনি প্রচলিত নিয়মে অভ্যস্ত ছিলেন না। তিনি সৃজনশীলতার সঙ্গে কাজটি শুরু করতে পারতেন। আমার ধারণা, ফলাফলেও তার প্রতিফলন দেখা যাবে। গোটা প্রক্রিয়াটি স্ক্রিপ্টিং ও রেকর্ডিংয়ে আমরা এক বছর ব্যয় করেছি। আমরা একটি ছোট দল — মাত্র আটজন কর্মী — তাই এ ধরনের অনেক কাজে আমরা বাইরের লোক নিয়োগ দেই, এখানেও তা-ই, আমাদের একটি ফ্রিল্যান্স পরামর্শক দল ছিল।
জিআইজেএন: প্রয়োজনীয় উপকরণ হাতে থাকলে এমন সাত পর্বের পডকাস্ট বানাতে কেমন খরচ হয়?
আইইউ: অনুদানের পরিমাণ ছিল প্রায় ১১০,০০০ থেকে ১২০,০০০ মার্কিন ডলার, যা খুবই সামান্য। আমাদের অর্থ ফুরিয়ে গিয়েছিল এবং আমাদের কিছুটা অতিরিক্ত প্রস্তুতির প্রয়োজন ছিল, তাই সবাই যেমনটি বলেছে, এর সম্ভাব্য খরচ প্রায় ১৪০,০০০ মার্কিন ডলার।
জিআইজেএন: এলএ টাইমস ও সিবিসির মধ্যকার একটি অংশীদারিত্ব চুক্তির আওতায় পডকাস্টটি সম্প্রচারিত হয়। প্রতিষ্ঠান দু’টি কি পডকাস্ট তৈরিতে যুক্ত ছিল, নাকি কেবলই প্রচারে?
আইইউ: রেকর্ডিং পর্ব ও সম্পাদনা, আবহসঙ্গীতের সত্ত্ব আর প্রায় এক বছরের শ্রমের পেছনে এই অর্থ খরচ হয়েছে। তারপর আসলে আমরা বিপণনে কোন খরচ করিনি। লিখিত গল্প, ভিডিও, ডকুমেন্টারি বা পডকাস্ট ধারাবাহিক – যাই হোক না কেন, আমরা সবকিছু নিজেদের টাকায় করি যেন নিয়ন্ত্রণ, মেধাসত্ত্ব ও কপিরাইট সবকিছু আমাদেরই থাকে। তারপর আমরা সেটি বাজারে নিয়ে আসি এবং বিশ্বকে বিনাপয়সায় সেটি দেখার সুযোগ করে দিই। এখানেও তাই হয়েছে। সামাজিক পরিবর্তন মডেলের দৃষ্টিকোণ থেকে আপনি যদি সাংবাদিকতার প্রভাব দেখতে চান – আমি বিশ্বাস করি, তাহলে আপনার কন্টেন্টকে একটি স্থানে আটকে রাখা উচিত হবে না। মেধাসত্ত্ব আইনের এক্সক্লুসিভিটি ধারা এড়ানোর উপায় পেলে, আপনার তা করা উচিত। তাই এটিকে বাজারে নিয়ে আসাটা ছিল বেশ চমৎকার ব্যাপার, আর সিবিসি ও এলএ টাইমসও এ ব্যাপারে খুব আগ্রহী ছিল।
জিআইজেএন: আপনি কি নতুন দর্শকদের কাছে যেতে পেরেছেন?
আইইউ: কিছু মানুষ সত্যিই পডকাস্টে আছে, আর এই খাতে এটিই ছিল আমাদের প্রথম কাজ। তাই আমি মনে করি, এই মাধ্যম আমাদেরকে একদম নতুন একটি বাজারে নিয়ে এসেছে, আর তারপর সিবিসি সেই দরজা খুলে দিয়েছে। তারা বড় মাপের প্রতিষ্ঠান হওয়ায় আমরা নিউজলেটারে অনেক নতুন গ্রাহক পেয়েছি।
জিআইজেএন: সংখ্যা সম্পর্কে কি আপনার কোনো ধারণা আছে আর আপনি কি তা নিয়েই সন্তুষ্ট?
আইইউ: আমি কখনো সংখ্যায় মনোযোগ দেইনি। তবে আমি জানি, প্রথম ৪৮ ঘন্টায় আমরা কানাডায় এক নম্বরে পৌঁছেছি।
জিআইজেএন: বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল থেকে এই পডকাস্ট শোনা যায় কি না, সে বিবেচনায় ভাষা অবশ্যই একটি বিষয়, তবে আপনার পূর্ব পরিচিত ভুক্তভোগীরা যেখান থেকে এসেছেন, আপনি কি সেখানকার দর্শকশ্রোতার কাছে যেতে চান?
আইইউ: ইউরোপ/আমেরিকার বাইরে গিয়ে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল বিশ্বে কীভাবে আমাদের কন্টেন্ট আরো বেশি ছড়িয়ে দেওয়া যায়, তার উপায় খুঁজতে আমরা বাড়তি শ্রম দিয়েছি। ভাষার কারণে কাজটি কঠিন ছিল, তবে প্রতিটি পডকাস্টের জন্য আমরা একটি ৫০০ শব্দের লেখা দাঁড় করিয়েছি, তারপর সহযোগীদেরকে দিয়েছি যেন তারা তাদের নিজস্ব ভাষায় পডকাস্ট তৈরি করতে পারে। আমি সংখ্যার দিকে তাকাইনি, বরং অঞ্চলভিত্তিক সাংবাদিকতা আর স্টোরিটির উৎসস্থলে এর সম্প্রচার নিশ্চিত করাটাকেই মূলনীতি হিসেবে যথাযথ ভেবেছি।
জিআইজেএন: আপনারা একজন সাউন্ড ডিজাইনারকে নিয়োগ দিয়েছেন। সংবাদ ভাষ্যের সঙ্গে সুর নিয়ে আপনি কীভাবে কাজ করেছিলেন?
আইইউ: আউট ল ওশান মিউজিক প্রজেক্ট নামে আমাদের একটি শক্তিশালী প্রকল্প আছে, যেখানে এখনও বিশ্বজুড়ে সঙ্গীতজ্ঞদের নিয়োগ দেয়া হয়, যারা নিজেদের মতো করে সাংবাদিকতার ব্যাখ্যা দাঁড় করায় ও সাংবাদিকতার শব্দ ব্যবহার করে। আমাদের মাথায় আসে, বিষয়টিকে গল্প বলার প্রেক্ষাপট হিসেবে ব্যবহার করলে কেমন হয়? প্রশ্ন হলো: নাবিকদের কমিউনিটির মতো এমন অপরিচিত, স্বতন্ত্র ধারণা কেবল শব্দ ছাড়া আর কিছুই ব্যবহার না করে আপনি কীভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দিবেন? তাই সাংবাদিকতার টুল হিসেবে গানের ব্যাপক ব্যবহার পরিকল্পনায় যুক্ত করা হয়েছিল।
গত বছর ডিসেম্বরে আমাদের শিল্পীরা ক্ষেপে গিয়েছিলেন, কারণ একদল শিল্পী প্রকল্পের শর্তাবলী নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন। [সম্পাদকের নোট: রয়্যালটি নিয়ে বিতর্কের পর আরবিনা “শর্তহীন” ক্ষমা চেয়েছিলেন কিন্তু তিনি বলেছেন, এই প্রকল্প থেকে তিনি “এক শতাংশ”ও পাননি] তাই কোনো উপায় না দেখে আমরা শর্তগুলো বাতিল করেছি, প্রকল্পটি ফের সাজিয়েছি, মালিকানা কাঠামো উল্টে দিয়েছি, আর বলেছি, “ঠিক আছে, এখন থেকে ভবিষ্যতের এবং অতীতের সব কাজের ক্ষেত্রেও সব শিল্পী তাঁদের গানের শতভাগ মালিক, এবং গান থেকে অর্জিত আয় পুরোটাই তাঁরা পাবেন।” আমরা গানের সব ধরনের নগদীকরণ থেকে সম্পূর্ণরূপে সরে এসেছি। মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা থেকে শিল্পীদের সত্যিকারের হতাশা ছিল; তাই আমরা গানের বুদ্ধিবৃত্তিক স্বত্ত্ব হস্তান্তরের প্রক্রিয়া আমূল বদলে ফেলেছি। আমার মনে হয়, শুরুতে আমাদের ৫০০ শিল্পী ছিল, ৪২০ জনের বেশিরভাগ সঙ্গীতশিল্পীই এখনো প্রোগ্রামে আছেন আর তাঁরা সবাই বেশ সন্তুষ্ট। তারপর আমরা “সন্তুষ্ট” শিল্পীদের কাছ থেকে গান বেছে নিয়েছিলাম।
জিআইজেএন: অন্যান্য যে ছোটখাটো অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের অনুসন্ধানী কাজ পডকাস্টে তুলে ধরতে চায়, তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কী? আপনি কোথা থেকে শুরু করবেন আর তাদের কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত?
আইইউ: আমি মনে করি, ইন্টারনেট বেশ বিশৃঙ্খল। এখানে কন্টেন্ট তৈরির লোকের অভাব নেই – বরং বেশিই আছে। আমরা কীভাবে ভালো কিছু করব, সেটি চ্যালেঞ্জ নয়, সেটি তো করতেই হবে। বরং এই শোরগোল ছাড়িয়ে যাবেন কীভাবে? প্রশ্নটি তাই বিতরণের। এর মানে হচ্ছে ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা ও ভাবনা; এটি মোটেই অনুপ্রেরণার বিষয় নয়, এটি অঙ্গীকারের বিষয়। একটি পুরানো প্রবাদ আছে: একটি খারাপ গল্প ছড়ালো, এটি খারাপ; কিন্তু একটি ভালো গল্প কেউ শুনলো না তা আরও খারাপ। তাই আমি বরং পডকাস্ট বানাতে বা অডিও পরিসরে জায়গা করে নিতে আগ্রহী: এ কাজে এগিয়ে যান, সত্যিই ভালো মানের কিছু শুনুন, কিন্তু তারপর জনসাধারণের শোনার বিষয়টি নিশ্চিত করতে ভাবনা-চিন্তায় সময় ব্যয় করুন।
আরও পড়ুন
এ গ্লোবাল, বেস্ট-অব লিস্ট অব রিসেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ পডকাস্টস
হাও তাইওয়ান’স দ্য রিপোর্টার ক্রিয়েটেড এ চার্ট-টপিং পডকাস্ট
ইউজিং কমিকস, মিউজিক অ্যান্ড থিয়েটার টু ব্রিং ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম টু নিউ অডিয়েন্সেস
অ্যালেক্সা ভ্যান সিকল জিআইজেএনের সহযোগী সম্পাদক। আগে তিনি বিদেশি চিঠিপত্র বিষয়ক সাময়িকী রোডস অ্যান্ড কিংডমসের জ্যেষ্ঠ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ফিচার সম্পাদনা করতেন ও লিখতেন এবং সাময়িকীর জন্য পুরস্কারজয়ী পডকাস্ট বানাতেন। এছাড়া তিনি ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের সম্পাদক এবং লন্ডনভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক আইন বিষয়ক অলাভজনক সংস্থার প্রকাশক ছিলেন। তিনি অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় থাকেন।
লরা ডিক্সন জিআইজেএনের সহযোগী সম্পাদক। আগে তিনি লাতিন আমেরিকায় ফ্রিল্যান্স প্রতিনিধি প্রতিবেদক ছিলেন আর তাঁর কাজ টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট, আটলান্টিক ও ইউএস নিউজ সহ অন্যান্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি ইন্টারন্যাশনাল উইমেনস মিডিয়া ফাউন্ডেশন, পুলিৎজার সেন্টার ও জার্নালিস্টস্ ফর ট্রান্সপারেন্সি থেকে অনুদান ও ফেলোশিপ পেয়েছেন। তিনি যুক্তরাজ্যে থাকেন।