প্রতিবেদনটি লেখা হয়েছে জিআইজেএনের একটি সাম্প্রতিক ওয়েবিনারের ওপর ভিত্তি করে। ফুটবল ও ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ অনুসন্ধানের উপায় নিয়ে আয়োজিত এই ওয়েবিনার দেখা যাবে জিআইজেএন-এর ইউটিউব চ্যানেলে বা এই লেখার নিচে।
পেশাদার ফুটবল এবং এবছরের বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে কাতারকে বাছাই করার সিদ্ধান্ত নিয়ে অনুসন্ধানগুলো মূলত আবর্তিত হচ্ছে অবকাঠামো নির্মাণ এবং আয়োজনের নিলামে দুর্নীতিকে ঘিরে। গত ১২ বছরে “দ্য বিউটিফুল গেম” নামে পরিচিত এই ফুটবল খেলার জগতে যেসব উচ্চপর্যায়ের কেলেঙ্কারির খবর (ব্যাপক আকারে ভোট কেনাবেচা এবং ২০১৫ সালে এক দিনে ফিফার নয় কর্মকর্তাকে এফবিআইয়ের গ্রেপ্তারের ঘটনা উল্লেখযোগ্য) এসেছে, তাতে এমন দুর্নীতির কথা মাথায় আসাটাই স্বাভাবিক।
তবে সম্প্রতি জিআইজেএনের ওয়েবিনারে অভিজ্ঞ অনুসন্ধানী সাংবাদিকেরা জোর দিয়ে বলেছেন, ওয়াচডগ রিপোর্টারেরা ২০২২ ও ২০২৩ সালে ফুটবল সংশ্লিষ্ট আরও অনেক বিষয় নিয়ে অনুসন্ধান করতে পারেন। যেমন: পদ্ধতিগত লিঙ্গবৈষম্য ও যৌন নিপীড়ন (ধামাচাপা দেয়া), স্বৈরশাসকদের “স্পোর্টসওয়াশিং” (খেলাধুলার মাধ্যমে ভাবমূর্তি উন্নয়ন), মারাত্মক শ্রম নিপীড়ন, অর্থ পাচার, স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা। এমনকি স্থানীয় অনেক ফুটবল সংস্থা যেভাবে তাদের ঘোষিত মহৎ লক্ষ্যগুলোকে নীরবে পাশে সরিয়ে রাখছে– তা নিয়েও অনুসন্ধান হতে পারে।
ওয়েবিনারে উপস্থিত ছিলেন ফিফার সাবেক হুইসেলব্লোয়ার ও লেখক বনিতা মার্সিয়াদেস, ফুটবল খেলা অনুসন্ধানে বিশেষজ্ঞ রোমেইন মোলিনা, এবং যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান পত্রিকার ক্রীড়া প্রতিবেদক ডেভিড কন যিনি “দ্য বিউটিফুল গেম?” ও “দ্য ফল অব দ্য হাউস অব ফিফা” শিরোনামের দুইটি বই লিখেছেন।
কন বলেছেন, “মানুষের সত্যিই বোঝা উচিত যে খেলাধুলা ও ফুটবল অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার অনেক বড় একটি ক্ষেত্র। অবশ্যই, অধিকাংশ ফুটবলপ্রেমী খেলাটাকেই উপভোগ করতে চান। তারা পছন্দের ক্লাবকে সমর্থন জানান, প্রিয় খেলোয়াড়দের ভালোবাসেন এবং নিজেরাও খেলতে পছন্দ করেন। আমি নিজেও একজন ফুটবলপ্রেমী। তবে বছরের পর বছর ধরে এই খাত নিয়ে যথেষ্ট অনুসন্ধান না হওয়ার পেছনে, অংশত, ফুটবলের এই জনপ্রিয়তাই দায়ী।”
একটি ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন একজন স্বৈরশাসকের জন্য কতটা গুরুত্ববহ? কনের মতে, ২০১৮ সালের ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজনের নিলামে রাশিয়ার বিতর্কিত জয় “ভ্লাদিমির পুতিনের প্রোফাইল ভারি করেছে। নিজের গুরুত্ব সম্পর্কে তিনি আরও আত্মবিশ্বাসী হয়েছেন। এবং আমার মনে হয়, এই আত্মবিশ্বাসই পুতিনকে ইউক্রেনে একটি ভয়ঙ্কর যুদ্ধ শুরুর দৃঢ়তা জোগাতে সাহায্য করেছে।”
ফুটবল জগতের অনিয়ম-অপচর্চা নিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস, গার্ডিয়ান ও বিবিসির জন্য রিপোর্ট করেছেন মোলিনা। তিনি সাংবাদিকদের পরামর্শ দিয়েছেন, তাঁরা যেন পেশাদার ক্রীড়া সংগঠকদের নৈতিক ও আইনী চর্চা মনের ভেতর কোনো আগাম ধারণা পুষে না রাখেন। বরং তিনি সোর্স থেকে আসা একেবারে অসম্ভব-প্রায় দাবিকেও খোলা মনে বিবেচনার তাগিদ দিয়েছেন; সেটি ব্যাপক যৌন নিপীড়নের অভিযোগ বা খেলায় অপরাধ জগতের সংশ্লিষ্টতা – যাই হোক না কেন।
একইভাবে, অস্ট্রেলিয়ার ফুটবল পরিচালনা কমিটির প্রাক্তন নির্বাহী ও “হোয়াটএভার ইট টেকস: দ্য ইনসাইড স্টোরি অব দ্য ফিফা ওয়ে”-এর লেখক মার্সিয়াদেস সতর্ক করে বলেছেন, সাংবাদিকেরা যেন স্বজনপ্রীতির বিষয়টিকে উপেক্ষা না করেন, বা ছোট করে না দেখেন। কারণ এই ধরনের সব অপচর্চাই ২০১৮ বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে রাশিয়ার বিতর্কিত ভূমিকার পথ করে দিয়েছিল।
“মাস দুয়েকের মধ্যে আসর বসছে বলে সবার নজর এখন কাতারে, কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না যে রাশিয়া ও কাতার যে বিশ্বকাপ আয়োজক হবে– সেই সিদ্ধান্ত একইসঙ্গে নেওয়া হয়েছিল। এবং ১২ বছরের সময়পর্বে এগুলোই রাশিয়া ও কাতারের জন্য অন্যতম বড় শক্তি ছিল। দুর্নীতিতে রাশিয়া কোন অংশেই কাতারের চেয়ে কম নয়, হয়ত আরও বেশি। তবুও সবাই ২০১৮ সালে রাশিয়ায় গিয়েছে এবং উপভোগ করেছে। সাংবাদিক সমাজ: ভুলবেন না – পরিস্থিতি বদলায়নি,” বলেছেন মার্সিয়াদেস।
কন বলেন, ক্রীড়াজগতের বাইরের সাংবাদিকদের জন্যেও পেশাদার ফুটবলের মৌলিক কাঠামো বোঝা জরুরি: এখানে রয়েছে সম্পদের অভাবে ভুগতে থাকা “তৃণমূল”; অলাভজনক জাতীয় ফুটবল ফেডারেশন; ব্যক্তি-মালিকানাধীন ক্লাব ও তাদের দ্বারা পরিচালিত বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় লিগ; মালিক ও এজেন্ট; এবং মহাদেশীয় কনফেডারেশন, যারা কিনা ফুটবলের বৈশ্বিক সংস্থা ফিফা অনুমোদিত৷
কন, এ ধরনের অনুসন্ধানের সম্ভাব্য দর্শকদের ব্যাপারেও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, একই রকম বা কাছাকাছি ধরনের একটি অবৈধ কর্মকাণ্ড যখন ফুটবলের ক্ষেত্রে দেখা যায়, তখন তার অনুভূতি স্বাভাবিকের চেয়ে আরও খারাপ হয়। কারণ ভক্তকূল তাদের সমর্থন করা ক্লাবগুলোতে টাকার চেয়েও অনেক বেশি কিছু বিনিয়োগ করেন।
“ফুটবল নিছক ব্যবসা নয়,” কন বলেন। “ধরা যাক আপনি দুর্নীতি নিয়ে অনুসন্ধান করছেন। আমি মনে করি: কোনো ইস্পাত বা গাড়ি কারখানায় দুর্নীতির চেয়ে ফুটবল সংক্রান্ত দুর্নীতি আরও বেশি খারাপ। কারণ এটি একটি খেলা, একটি ক্রীড়া, এবং এটি কিছু মানুষের কাছে তাদের জীবনের সবটা।”
কন বলেছেন, খুবই মৌলিক, অপরাধ সংশ্লিষ্ট নয়– এমন জবাবদিহিমূলক প্রতিবেদন আরও বেশি গুরুত্ব বহন করে। এমনকি সেটি হতে পারে স্থানীয় ফুটবল ফেডারেশনগুলোর ঘোষণা করা লক্ষ্যগুলোকে খুঁটিয়ে দেখা এবং কিভাবে সেই লক্ষ্যগুলো পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়েছে তা তুলে ধরা।
২০২২ কাতার বিশ্বকাপে শ্রম নিপীড়ন অনুসন্ধান
ওয়েবিনারে বক্তারা একমত হন যে এবছর বিশ্বকাপের আগে ও চলাকালে কাতারে গিয়ে অনুসন্ধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে অভিবাসী শ্রমিক নিপীড়ন। অনিরাপদ কর্মপরিবেশ থেকে শুরু করে প্রায় শ্রম দাসত্বের মতো পরিস্থিতি– সব কিছুই এর অর্ন্তভুক্ত।
“মনে রাখবেন, ফিফা এমন একটি দেশকে বিশাল নির্মাণ প্রকল্প মঞ্জুর করেছে, যে দেশে নির্মাণ শ্রমিকদের জন্য ভালো পরিবেশ বা অধিকার নেই,” বলেন কন।
“সেখানে প্রচণ্ড গরম এবং এমন পরিবেশে ঘন্টার পর ঘন্টা কাজ করে যাওয়া সবচেয়ে কর্মক্ষম যুবকদের জন্যও নিরাপদ নয়। আর তারাই সবচেয়ে ভারি ও কঠিন কাজগুলো করছেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যেমনটি দেখিয়েছে, তরুণ অভিবাসীরা স্রেফ মারা যাচ্ছে, কেউ কেউ তার শোবার ঘরে। অথচ কাতারি কর্তৃপক্ষ এগুলো নিয়ে উপযুক্ত ব্যাখ্যা দিচ্ছে না, যেন ‘এটি নিছক হার্ট অ্যাটাক ছিল’ বা ‘তার শ্বাসকষ্ট ছিল।’”
সাধারণত গ্রীষ্মকালে বিশ্বকাপ আয়োজনের কথা থাকলেও এ অঞ্চলের প্রচণ্ড গরমে খেলোয়াড় ও ক্রীড়ানুরাগীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় আসরটি কাতারের শীত মৌসুমে (এই নভেম্বর-ডিসেম্বর) সরিয়ে নেয়া হয়। এই বিষয়টি বিশ্বকাপ চলাকালে সাংবাদিকদের শ্রম নিপীড়ন কাভার করার কাজ আরও কঠিন করে তুলেছে।
এই সমস্যা মোকাবিলায় কনের পরামর্শ হল, যেসব সাংবাদিক বিশ্বকাপ কাভার করবেন – বা আগেই সেখানে চলে যাবেন – তারা দেশটির অভিবাসী শ্রমিক আবাসন ক্যাম্পগুলোতে গিয়ে হতাহত ও কর্মপরিবেশ নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন।
“কাতারিরা আসলে এবার সাংবাদিকদের জন্য শ্রমিক ক্যাম্প খুলে দিবে, কারণ এখন তারা কর্মপরিবেশ উন্নত করেছে আর এ নিয়ে তারা বেশ গর্বিত,” বলেছেন কন। “সেখানে সমাজের বিভাজনগুলো দেখুন। এগুলো অনেক বড় জায়গা, আর আপনি সেখানে বিনা প্রহরায় মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। কর্তৃপক্ষ হয়তো সবসময় আপনার ঘাড়ের ওপর দাঁড়িয়ে থাকবে না।”
খেলাধুলা নিয়ে অনুসন্ধানে আগ্রহী সাংবাদিকদের জন্য বেশ বিস্তৃত পরিসরের কিছু পরামর্শ দিয়েছেন ওয়েবিনারের বক্তারা।
ফুটবল নিয়ে অনুসন্ধানের সাধারণ পরামর্শ
- ছোট দেশগুলোতে অফিসিয়াল সোর্সের খোঁজ করুন। এই সোর্সদের অনেক গভীর বৈশ্বিক যোগাযোগ থাকতে পারে, এবং তাদের নাগাল পেতে খুব বেশি গেটকিপারও পেরোতে হয় না। মোলিনার পরামর্শ: “ছোট দেশগুলোতে নজর দিন। মনে রাখবেন, লাওসের ভোটের গুরুত্ব ফ্রান্স বা ইংল্যান্ডের ভোটের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। তাই এই দেশগুলোর যেসব স্থানীয় সাংবাদিক ঐ কর্মকর্তাদের চেনেন, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আপনি হয়তো এমন কিছু আশ্চর্য বিষয়ের খোঁজ পেয়ে যাবেন, যা অনেক বড় ইস্যুর সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা রাঘব বোয়ালদের খবর জানে; হয়তো একদিন তাঁরাই বনিতার (মারসিয়াদেস) মতো হুইসেলব্লোয়ার হতে পারে।”
- স্টেডিয়ামের অবস্থা, নিরাপত্তা নীতি এবং বাজেটের পরিবর্তনগুলো লক্ষ্য করুন৷ “ফুটবলের বিপুল অর্থ, অনিরাপদ ও বিপর্যস্ত স্টেডিয়ামগুলোর উন্নয়নে সাহায্য করতে পারে– এটিই এখনকার সময়ে অনুসন্ধানের একটি বড় জায়গা,” বলেছেন কন। “সম্প্রতি প্যারিসে, আমরা লিভারপুল ভক্ত ও অন্যদের জন্য প্রায় আরেকটি বিপর্যয় দেখেছি, আর এবছরই আমরা ক্যামেরুনে প্রাণঘাতী স্টেডিয়াম বিপর্যয়ের সাক্ষী হয়েছি। আমি অনেক মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি, যারা মনে করেন স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা এখন ক্রমেই একটি বড় সমস্যা হয়ে উঠেছে। ক্লাবগুলো কি নিরাপত্তার জন্য বরাদ্দ থেকে অর্থ সরাচ্ছে?”
- অবৈধ কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রাথমিক, ছোট কিছু প্রতিবেদন প্রকাশ করে হুইসেলব্লোয়ারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করুন। জিআইজেএনের আরেকটি সাম্প্রতিক ওয়েবিনারের বক্তা, ফাইনান্সিয়াল টাইমসের রিপোর্টার ড্যান ম্যাকক্রামের “স্টোরি আরও স্টোরি আনে” মন্ত্রের প্রতিধ্বনি করে মার্সিয়াদেস বলেছেন, কিছু প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ের স্টোরিগুলো ফুটবল জগতের অভ্যন্তরীণ সোর্স গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে কার্যকর হয়েছিল। “২০১৬ সালে, পরিস্থিতি বোঝার জন্য আমি নিজের ওয়েবসাইটে একটি স্টোরি প্রকাশ করি। তখন কেউ আমার বিরুদ্ধে মামলাও করেনি, আবার কেউ এটাও বলেনি যে আমি ভুল করেছি। বরং অনেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে বলেছিল, ‘আহ, আপনি এটা ধরতে পেরেছেন। এ নিয়ে আমি এটা এটা জানি।’ একটি স্টোরি অন্যগুলোকে আরও শক্তপোক্ত করেছে।”
- আপনার স্থানীয় ফুটবল সংস্থার মিশন-বিবৃতি থেকে শুরু করুন। “এই সংস্থাগুলো অলাভজনক, আর আপনি তাদের প্রতিষ্ঠাকালীন নথিতে একটি মহৎ মিশন-বিবৃতি পাবেন: ‘আমরা সবার কল্যাণের জন্য এই সুন্দর খেলাটির প্রসার ঘটাতে এসেছি’। খেলাধুলা কাভারের এটি একটি মৌলিক উপাদান: খেলাটিকেই, তার নিজের করা দাবির জন্য জবাবদিহি করা,” বলেছেন কন।
- ফুটবলে অর্থের ক্রমবর্ধমান অসম বন্টন নিয়ে অনুসন্ধান করুন – মেয়েদের লিগ এবং শহরের ভেতরের স্কুলগুলোকেও বাদ দেবেন না। “এটি একটি টাটকা ইস্যু: এত অর্থ যাচ্ছে কোথায়?” কন প্রশ্ন ছুড়ে দেন। “যেখানে বিশ্বজুড়ে এই খেলায় বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ছড়াছড়ি, সেখানে কিছু মানুষ কেন অপর্যাপ্ত বা কোনো সুযোগ সুবিধা ছাড়াই খেলছে?”
- খেলাধুলায় যৌন নিপীড়ন এবং এমন ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার ধরন সনাক্ত করুন – আর ভুক্তভোগী ব্যক্তির সঙ্গে সংবেদনশীলতার সঙ্গে কথা বলুন। এ বিষয়ে আরও জানতে এ ধরনের গাইড পড়ে দেখতে পারেন।
- চোখের সামনে পড়ে থাকা তথ্যপ্রমাণগুলো ফের পরীক্ষা করুন। যেমন: ছবি ও বার্ষিক প্রতিবেদন। ফুটবলে ছবির একটি বিশাল আর্কাইভ আছে, যেখানে অলিগার্ক থেকে শুরু করে অর্থ বিনিয়োগকারী ও প্রেসিডেন্ট পর্যন্ত বিভিন্ন খাতের অভিজাত মানুষদের পারস্পারিক যোগযোগের ছবি পাওয়া যায়। মার্সিয়াদেস বলেছেন, একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুসন্ধানী সময়ক্রমকে এক সুতোয় গাঁথতে তাঁকে সহায়তা করেছে ছবি দেখা। এবং শুধুই বার্ষিক প্রতিবেদন দেখতে গিয়ে তিনি টের পান: একজন ফেডারেশন বোর্ড সদস্য দ্বিতীয় একটি পরিচালনা পর্ষদের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে বছরে ৬ লাখ ডলার বেতন পাচ্ছেন। মার্সিয়াদেস বলছিলেন, “বিষয়টি সবার চোখের সামনেই ছিল। কিন্তু কেউই আগে সেটি দেখতে যায়নি।”
“খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হল, কাতারে যখন বিশ্বকাপ শুরু হয়ে যাবে, খেলার প্রথম বাঁশিটি বাজবে, তখন এই গুরুতর বিষয়গুলো কভার করার আর সময় থাকবে না, এবং আমাদের মনোযোগও চলে যাবে ফুটবলে,” বলেন কন৷ “কারণ তখন আন্তর্জাতিক সম্প্রচারের জনসংযোগ কাতারের হাতে থাকবে, আর ঠিক এ কারণেই তারা নিলামে এসেছিল।”
তিনি আরও বলেন: “আপনার মন কী বলে, তা অনুসরণ করতে ভুলবেন না: কোনো বিষয় যদি আপনার সঠিক বলে মনে না হয় – এমনকি তা যদি অন্য সবার মতামতের বিরুদ্ধেও যায় – আপনার ধারণাই ঠিক হয়ে দাঁড়াতে পারে। ”
আরও পড়ুন
আরব উপসাগরীয় অঞ্চলে অভিবাসন নিয়ে রিপোর্টিং: একটি সংশোধিত ও বর্ধিত জিআইজেএন গাইড
মানব পাচার ও জোরপূর্বক শ্রম নিয়ে সাংবাদিকতার টিপস
রোয়ান ফিলিপ জিআইজেএনের প্রতিবেদক। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার সানডে টাইমস পত্রিকার প্রধান প্রতিবেদক ছিলেন। বিদেশি প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্বের ২৪টির বেশি দেশে সংবাদ, রাজনীতি, দুর্নীতি ও সংঘাত নিয়ে রিপোর্ট করেছেন।