এই অধ্যায়টি লিখেছেন জিআইজেএনের সদস্য প্রতিষ্ঠান ইনসাইট ক্রাইমের সহ-পরিচালক ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্টিভেন ডাডলি। আমেরিকায় সংগঠিত অপরাধ পর্যবেক্ষণ, বিশ্লেষণ ও অনুসন্ধানের লক্ষ্যে তাঁর এই উদ্যোগ শুরু হয়।
মাদক পাচার হলো বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অবৈধ কর্মকাণ্ডগুলোর একটি। এর আর্থিক মূল্য বছরে প্রায় পাঁচশ’ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যাকে সুইডেনের মোট দেশজ উৎপাদনের সঙ্গে তুলনা করা যায়। এটি স্বাস্থ্য-সমস্যা ও সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যসেবা খরচ, সহিংসতা ও বেসামরিক সংঘাত, এবং রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়সহ আরও অনেক সমস্যার উৎস। এই বিষয় নিয়ে যেসব খবর বেরোয় তাতে আর্ন্তজাতিক অপরাধী চক্রের শীর্ষে থাকা তথাকথিত মূল হোতা বা তাদের ঘনিষ্ঠ সাঙ্গপাঙ্গদের ওপর তেমন আলোকপাত করা হয় না। যাই হোক, সংবাদ হিসেবে কভারযোগ্য এই বাণিজ্যের সঙ্গে আরও অনেক ধাপ, মানুষ এবং বিষয় জড়িত আছে।
শুরুতেই আসে, সবচেয়ে বড় অপরাধী গোষ্ঠীগুলোর কথা, যারা বিশাল সরবরাহ চেইন পরিচালনা করে। এই চেইন পণ্য বেচাকেনার যে কোনো বৈশ্বিক নেটওয়ার্কের মতোই: এখানে উৎস এলাকা, বিতরণ চ্যানেল, পণ্য মজুতের কেন্দ্র, প্রক্রিয়াকরণের স্টেশন, প্রেরণের পয়েন্ট, ভোক্তাদের জন্য বিতরণ চ্যানেল – এমন সব কিছুই রয়েছে। এদের প্রতিটি একই সংগঠনের অধীন হতে পারে অথবা তৃতীয়-পক্ষের ঠিকাদারেরাও পরিচালনা করতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে তৃতীয়-পক্ষীয় ঠিকাদারেরা তাদের নিজস্ব শক্তিশালী অপরাধী সংগঠন ব্যবহার করে অনেক অর্থ আয় করে। মধ্য আমেরিকায়, স্বল্প দূরত্বে অবৈধ মাদক আনা-নেওয়ার কাজে নিযুক্ত মাদক-পরিবহন গোষ্ঠীগুলো এই অঞ্চলের সবচেয়ে শক্তিশালী অপরাধী সংগঠনের অন্যতম উদাহরণ। এই অঞ্চলজুড়ে চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত আরও অনেক উপদল রয়েছে, যারা অর্থপাচারে বিশেষ পারদর্শী হয়ে উঠেছে। অন্যরা, কখনো কখনো পুলিশ বা সামরিক বাহিনীর সদস্যরাও, অপরাধীদের নিরাপত্তায় বিশেষায়িত হয়ে ওঠেন।
নিঃসন্দেহে, এই বড় সংগঠনগুলোর কোনোটিই উপরের মহলের বিশেষ আর্শীবাদ ছাড়া চলে না। এই আর্শীবাদ আসে রাজনীতিবিদ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, প্রসিকিউটর, নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং অন্যান্যদের কাছ থেকে, যারা এই অপরাধী সংগঠনের ব্যবসায়িক স্বার্থকে সুরক্ষা দিতে পারে। এই গোপন নিরাপত্তার বিনিময়ে তারা ঘুষ ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা নেন। যেমন, একজন রাজনীতিবিদ তার নির্বাচনী প্রচারণায় সমর্থন আশা করতে পারেন, যার মধ্যে ভোটার-সমর্থকদের সরাসরি অর্থ প্রদান ও নির্বাচনী এলাকায় আর্থিক বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি – দুটোই থাকতে পারে। ব্যাঙ্কার এবং অর্থনৈতিক অভিজাতেরাও নীরবে মাদক পাচারকারীদের জন্য তাদের দরজা খুলে দেন। তারা বিনিয়োগ ও নগদ টাকা সহ সব ধরনের সুযোগ নিয়ে হাজির হন। এভাবে সময়ের সাথে সাথে, মাদক পাচারকারীরা শাসক শ্রেণীর অংশ হয়ে ওঠে, যা সমাজে অভিজাতশ্রেণীর কাঠামোটাই আগাগোড়া বদলে দেয়।
মাদক পাচারের অনেক আনুষঙ্গিক প্রভাবও রয়েছে, যা খবরের বিষয় হতে পারে: মাদক সেবন বৃদ্ধি, যা আসক্তি এবং আকাশচুম্বী স্বাস্থ্যসেবা খরচের দিকে নিয়ে যায়; মাদক পাচারের করিডোর বা বিক্রয় পয়েন্ট নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সহিংসতা; মাদক পাচার থেকে আয় করা টাকা দিয়ে বেসামরিক সংঘাতের অর্থায়ন; মাদকের বৈধকরণ এবং/অথবা বি-অপরাধীকরণ; মাদক পাচার মোকাবিলা করার জন্য নিবর্তনমূলক ব্যবস্থার পারিপার্শ্বিক ক্ষতি (যেমন, যুক্তরাষ্ট্রে “মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ”)।
মূল প্রশ্ন: কারা এই সোর্স? আপনি কীভাবে গবেষণা করেন? আপনি কোথায় যান?
মাদক পাচার নিয়ে কাজ করা স্বাভাবিকভাবেই কঠিন এবং বিপজ্জনক হতে পারে। তথ্যও মেলে কম, এবং কখনো কখনো ডেটা নিয়ে সংশয় থাকে। তাছাড়া, প্রায়ই দেখা যায় অধিকাংশ সরকারের কাছে মাদক পাচার মোকাবিলার কেন্দ্রীয় স্তম্ভ হলো নিবর্তনমূলক ব্যবস্থা, তাই মাদক পাচার সংক্রান্ত সরকারি নীতিগুলোও বেশ বিতর্কিত হয়ে থাকে। এ ধরনের নিবর্তনমূলক নীতির পারিপার্শ্বিক ক্ষতি প্রায়ই ব্যাপক হয়।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে, কাজ শুরু করার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো, যতটা সম্ভব সেরা ডেটা সংগ্রহ। মাদক পাচারের হালচাল নিয়ে কর্মকর্তা, স্থানীয় সোর্স, জাতিসংঘের মতো বহুপাক্ষিক সংস্থা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো সরকারগুলোর কাছ থেকে ডেটা পাওয়া যায়, যারা মাদক পাচারের সার্বিক অবস্থায় সতর্ক দৃষ্টি রাখে। বিশেষ করে, ইউনাইটেড নেশন্স অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম (ইউএনওডিসি) এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট মাদক পাচারের চলতি প্রবণতা নিয়ে নিয়মিত প্রতিবেদন তৈরি করে। এসব প্রতিবেদনের তথ্য প্রায়ই স্থানীয় উৎস থেকে আসে।
তবে, প্রতিটি ক্ষেত্রে সাবধানতার সঙ্গে অগ্রসর হোন: মাদক পাচার, বিশেষ করে মাদক বাজেয়াপ্তকরণের ডেটা আপনার সামনে সামগ্রিক চিত্রের একটি ক্ষুদ্র অংশই কেবল তুলে ধরে এবং কিছু ক্ষেত্রে বাস্তবতাকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে। যেমন, এই বিষয়ে অধিক সতর্ক সরকার হয়ত অনেক বেশি মাদক বাজেয়াপ্ত করছে, তবে তার মানে এই নয় যে, সীমান্ত দিয়ে আরও বেশি মাদক পাচার হচ্ছে। অন্যদিকে মাদক ইস্যুতে নীরব বা দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার হয়ত কম মাদক বাজেয়াপ্ত করছে, কিন্তু সেই দেশটিই পাচার কার্যক্রমের কেন্দ্রস্থল হতে পারে।
মাদক পাচারের কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা পেতে, যারা ব্যবসা করছেন তাদের কাছে যাওয়া ভালো। এর অর্থ মাদক পাচারকারীদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করা বা বিচারিক নথিতে তাদের সাক্ষ্য পর্যালোচনা করা। এটি করার সর্বোত্তম উপায় হল আইনজীবীদের সহায়তা নেওয়া। তাদের কাছে প্রায়ই তথ্য থাকে অথবা তারা আপনাকে মক্কেল সম্পর্কে জানাতেও চাইতে পারেন। আর, যদি কোনো শুনানি বা বিচার কার্যক্রমে অংশ নিতে পারেন, তাহলে অবশ্যই তা করবেন।
বিকল্প হিসেবে, আইনপ্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থায় সোর্স পেতে চাইলে আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। মাদকবিরোধী বিশেষ শাখার পুলিশ ও প্রসিকিউটররা বেশ কাজে আসেন। নির্দিষ্ট মামলা ধরে কথা বলতে না চাইলেও, তারা আপনাকে বলতে পারবেন সাধারণত কীভাবে এই ব্যবসা চলে, আপনাকে কোথায় খুঁজতে হবে, এবং তাঁদের বাইরে আর কাদের সঙ্গে কথা বলা উচিত। তবে সতর্ক থাকুন, আইনপ্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থার সোর্সেরা মাদক ব্যবসা ও মাদক ঠেকাতে তাঁদের কার্যকর ভূমিকা সম্পর্কে নিজেদের পছন্দসই ভাষ্য আপনাকে গছিয়ে দিতে পারেন।
সর্বোপরি আপনার উচিত বিচারিক নথি পাওয়ার চেষ্টা করা। সাধারণত এগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত। সরকারি নথি সংক্রন্ত আইন ব্যবহার করে অনেক দেশে এই রেকর্ডের জন্য অনুরোধ জানানো যায়। এসব আইন ও তাদের সর্বোচ্চ ব্যবহার সম্পর্কে জানুন। এমন অনেক বিশেষজ্ঞ সংগঠন থাকতে পারে, যারা আপনার হয়ে আবেদন বা আবেদনপত্র লিখতে আপনাকে সহায়তা করতে পারে। এতে সফল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
যেমনটা বলা হয়েছে, মাদক পাচার নিয়ে এমন অগণিত স্টোরি আপনি করতে পারেন। এগুলোর জন্য সোর্স বিভিন্ন রকমের হতে পারে, তবে প্রক্রিয়া একটাই: ডেটার সন্ধান করুন; প্রাথমিক সোর্স অনুসরণ করুন; পরিপূরক হিসেবে আনুষাঙ্গিক সোর্স, বিচারিক ও অন্যান্য দাপ্তরিক নথি যুক্ত করুন।
কেস স্টাডি
খেতাবধারী সাবেক সামরিক কর্মকতা মরিসিয়ো লোপেজ বনিলা ২০১২ সালে গুয়াতেমালার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হন। এর এক বছরের কিছু সময় পর, মার্লোরি চাকন রোসেলের কাছ থেকে তিনি একটি অপ্রত্যাশিত বার্তা পান। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ ততদিনে “কিংপিন” (মূল হোতা) তালিকায় চাকনকে যুক্ত করেছে। এই তালিকায় অর্থ ও মাদক পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শীর্ষ ব্যক্তিদের অর্ন্তভুক্ত করা হয়। তবে বনিলা লোপেজের জন্য চাকনের একটি প্রস্তাব ছিল: সরকারি বাহন ও দেহরক্ষী দিয়ে আমাকে প্রতিপক্ষ মাদক কারবারিদের হাত থেকে রক্ষা করুন, বিনিময়ে আপনি বিপুল অর্থ পাবেন। লোপেজ বনিলা এই চৃুক্তিতে রাজি হন। পরবর্তীতে, চাকনের বাড়িতে তার সঙ্গে সামনাসামনি দেখা করে এই বিপুল অর্থ ঘুষ নেন। তবে তিনি জানতেন না, ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ডিইএ) সেখানে রেকর্ডিং যন্ত্র ও ভিডিও ক্যামেরা বসিয়ে রেখেছিল। অন্য ভাষায়, তিনি একজন সহযোগী সাক্ষী ছিলেন। ইনসাইট ক্রাইমে আমার লেখা স্টোরি, এটিসহ তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অন্যান্য সম্পর্কগুলো নিয়ে অনুসন্ধান করেছে। মাদক পাচারকারীদের সঙ্গে কাজ করার সময়টাতে, তিনি গুয়াতেমালায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ঘনিষ্ট সহযোগী হিসেবেও সুবিধা নিচ্ছেলেন। চাকনের আইনজীবীর মাধ্যমে তার সাক্ষ্য এবং কয়েকজন ডিইএ এজেন্ট, গুয়াতেমালার তদন্তকারী, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, এবং স্বয়ং লোপেজ বনিলার সাক্ষাৎকারকে ঘিরে এই স্টোরি দাঁড় করানো হয়। প্রকাশের দু’মাস পর লোপেজ বনিলা যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচারের অপরাধে অভিযুক্ত হন।
২০০৯ সালে পশ্চিম আফ্রিকায় একটি স্টিং অপারেশন চালিয়েছিল ডিইএ। টেবিলের এক প্রান্তে ছিলেন মালির তিন নাগরিক, যারা আল-কায়েদার সঙ্গে জড়িত এবং সাহারা মরুভূমি দিয়ে ইউরোপে মাদক পাচারে সহায়তা করতে পারবেন বলে দাবি করছিলেন। অন্য প্রান্তে ছিলেন দুই ব্যক্তি, যাদের একজন ডিআইএ-এর ছদ্মবেশী এজেন্ট আর অন্যজন বেতনভুক্ত তথ্যদাতা – দুজনেই রেভ্যুলিউশনারি আর্মড ফোর্সেস অব কলম্বিয়া (ফার্ক) এর দূত সেজে কোকেন পাচারের উপায় খুঁজছিলেন। এই আলোচনার পরপরই মালির সেই তিন নাগরিক গ্রেফতার হন, পরবর্তীতে তাদের যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া হয়, এবং সেখানে তারা “মাদক সন্ত্রাসের” দায়ে অভিযুক্ত ও বিচারের মুখোমুখি হন। প্রোপাবলিকার জন্য জিঞ্জার থম্পসনের লেখা স্টোরিতে দেখানো হয়েছে, মাদক সন্ত্রাস আইনের সুযোগ নিয়ে মার্কিন আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো কতটা বাড়াবাড়ি করছে। সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ও মাদক পাচারের মধ্যে যোগসূত্রের কিছু নথিবদ্ধ প্রমাণ আছে, তবে তার পরিধি সীমিত। এই স্টোরিতে দুটি বিচারিক দৃষ্টান্ত ও সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তার বিবরণ উঠে এসেছে। প্রতিবেদনটিতে আরও কিছু ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত, অভিযুক্ত ও তাদের জীবনের চলমান প্রতিচ্ছবি এবং ন্যায়বিচারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার জোরালো অবজ্ঞা উঠে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আফিম সংকটে স্যাকলার পরিবারের যোগসাজশ
অনেক সময় আমরা তাদেরকে মাদক পাচারকারী মনে করি না, তবে অবৈধ মাদকের ব্যাপক ব্যবহারের ক্ষেত্র তৈরিতে ঔষধ কোম্পানিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কখনো জেনে, কখনো না-জেনে। ঠিক এমনটিই ঘটেছিল পারডিউ ফার্মার ক্ষেত্রে। স্যাকলার পরিবারের মালিকানাধীন এই বড় ওষুধ কোম্পানি, বছরের পর বছর ধরে, যুক্তরাষ্ট্রে আফিম-জাত ওষুধ (ওপিঅয়েড) প্রসারের ব্যাপক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে উচ্চমাত্রার নেশাজাতীয় অক্সিকন্টিন বিক্রি করে আসছিল। আসক্তি সংক্রান্ত দুর্বল গবেষণা তথ্যের ভিত্তিতে এই কোম্পানি একটি আগ্রাসী, অনৈতিক বিপণন প্রচারণা গড়ে তোলে। ডাক্তারেরা যখন ব্যবস্থাপত্রে এই ওষুধ লেখা কমিয়ে দেন, তখন মানুষ বিকল্প সমাধান খুঁজতে থাকে, এবং কখনো কখনো অবৈধ ওপিঅয়েডে: প্রথমে হেরোইন এবং পরে সিনথেটিক ওপিঅয়েড, ফেনটানিলে। এর ফল ছিল, এক দশকে ওষুধের ওভারডোজে মৃত্যুর হার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। প্যাট্রিক র্যাডেন কিফের দ্য নিউ ইয়র্কারে লেখা স্টোরি, এই পরিবারের উত্থান এবং আইনী ব্যবস্থার কারণে তাদের আংশিক পতনের বিস্তারিত তুলে ধরেছে। এই লেখায় উঠে আসে, এই পরিবার নিউইয়র্কে মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অব আর্ট এর একটি শাখা স্থাপন এবং বিশ্বব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয় ও আর্ট মিউজিয়ামে বিপুল অনুদানের মতো জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে খ্যাতি অর্জনেরও চেষ্টা করেছে।
মাদক পাচার অনুসন্ধানের পাঁচটি কৌশল ও পরামর্শ
১. কমই ভালো: একটি ঘটনা, একটি চরিত্র, একটি স্টোরি লাইনে মনোযোগ দিন। এটি আপনার অনুসন্ধানের ক্ষেত্র সীমিত রাখতে এবং আরও গুছিয়ে কাজ করতে সহায়ক হবে।
২. প্রাথমিক সোর্স খুঁজুন: আপনার অনুসন্ধান সাজাতে সোর্সের সাক্ষাৎকার ও প্রাথমিক সোর্সের উপাদান নিশ্চিত করুন। এটি আপনাকে আরও বিস্তারিত ও জোরালোভাবে স্টোরি উপস্থাপনের সুযোগ করে দিবে।
৩. সুচিন্তিতভাবে ও ধৈর্যসহকারে সোর্স তৈরি করুন: যুগান্তকারী কোন স্টোরি কখনো একবারের চেষ্টায় হয় না। স্টোরির বাইরে সোর্সের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে কন্টাক্ট তৈরি করুন এবং নিয়মিত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করুন।
৪. গভীরে যান: মাদক পাচারের স্টোরি কেবল ভালো স্টোরিই নয়, সেই সঙ্গে কাঠামোগত ইস্যু, নিয়মতান্ত্রিক সমস্যা ও আমাদের জীবন পরিচালনাকারী বিষয়বস্তু অনুসন্ধানের সুযোগ সামনে আনে। দর্শক-শ্রোতার দৃষ্টি আকর্ষণে মাদক পাচারের স্টোরি ব্যবহার করুন এবং আরও বড় ইস্যুতে কথা বলার সুযোগের সদ্ব্যবহার করুন।
৫. সবার আগে নিরাপত্তা: ভালো স্টোরি খুঁজে পাওয়ার অর্থ এই না যে, আকর্ষণীয় কিছু বা সাড়াজাগানো কোনো স্টোরি করতে নিজের জীবন বিসর্জন দিতে হবে। এমন স্টোরি বাছাই করুন, যা আপনার উপযোগী, যে স্টোরিতে আপনি সম্পাদক ও প্রকাশকের সমর্থন পাবেন, এবং যা আপনাকে বা আপনার কাছের মানুষকে বিপদে ফেলবে না।
পরিশেষে, মাদক পাচার একটি ব্যবসা, যা সীমান্ত জুড়ে বিস্তৃত, শহর ও গ্রামকে সমানভাবে আক্রান্ত করে, জগতের সব জাতি-বর্ণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, এবং ব্যক্তিগত ও জনজীবনের আনাচে কানাচে প্রভাব বিস্তার করে। একটি গল্পের মতো করে তুলে ধরুন: কীভাবে ব্যবসা গড়ে ওঠে, পর্দার অন্তরালে রাজনীতি ও অর্থনীতি কীভাবে কাজ করে, যেসব মানুষ এই ব্যবসা চালায় এবং যারা প্রভাবিত হয় তাদের গল্প বলুন এবং এমন খণ্ডে খণ্ডে স্টোরিকে সাজান।