এক বছর ধরে বিশ্বের নামকরা অনেক অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সঙ্গে তাঁদের প্রিয় অনুসন্ধানী টুল ও কৌশল নিয়ে কথা বলেছেন আমাদের রিপোর্টার রোয়ান ফিলিপ। সেখান থেকে, সবার প্রিয় অন্তত এক ডজন কৌশলের একটি তালিকা আমরা তুলে ধরেছিলাম গত সপ্তাহে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে। এমনিতে দুর্লভ সোর্স ও ডেটা পাওয়ার কৌশলের অভাব নেই। কিন্তু এই দুই লেখায় জিআইজেএন এমন সব টুল ও কৌশলের দিকে মনোযোগ দিয়েছে, যেগুলোর কথা সাংবাদিকেরা বারবার উল্লেখ করেছেন।
এই লেখায় আমি আনন্দের সঙ্গে আরও এক ডজন টুল ও কৌশলের কথা জানাচ্ছি, যেগুলো ব্যবহারের জন্য খুব বেশি ডিজিটাল দক্ষতার প্রয়োজন হয় না। ওপরে যেসব সাংবাদিকের কথা বলা হয়েছে, তাঁরাই এই টুলগুলোর সন্ধান দিয়েছেন, এবং এগুলো তাঁদের প্রায় সব অনুসন্ধানে কাজে আসে।
মূল লেখায় যাওয়ার আগে ফ্লোরিশ সম্পর্কে আলাদা করে বলে নেওয়া উচিত। বিনা মূল্যের, ব্যবহারকারী-বান্ধব এই গ্রাফ ও ডেটা ভিজ্যুয়ালাইজেশন টুল বিশ্বজুড়েই সাংবাদিকেরা খুব পছন্দ করেন। আরও বলা দরকার, বিবিসি আফ্রিকা আই দলের তৈরি করা ২০০ টুলের এই দুর্দান্ত ড্যাশবোর্ডের কথা। এটি সাজানো হয়েছে অনুসন্ধানের বিভিন্ন বিভাগ ধরে। গ্লোবাল সাউথের কিছু ডেটাসেটও এখানে পাওয়া যায়।
ভিডিও ক্লিপ ডাউনলোড ও সংগ্রহের ফ্রি সাইট। অলাভজনক অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম, বেলিংক্যাট সাধারণ একটি কৌশল কাজে লাগিয়ে ৬ জানুয়ারিতে হওয়া ইউএস ক্যাপিটল দাঙ্গার অসংখ্য প্রমাণ সংগ্রহ করেছিল। তারা সব সোশ্যাল মিডিয়া ভিডিও ক্লিপ, লাইভ স্ট্রিম ও ছবি আগে একটি টুইটডেক কলামে সাজিয়ে নিয়েছিল। এরপর সেগুলো ডাউনলোড ও আর্কাইভ করেছিল কিছু সাইটের সাহায্যে। যেমন, টুইটারের জন্য টুইটারভিডিওডাউনলোডার ডট কম, ফেসবুক ভিডিওর জন্য এফবিডাউন ডট নেট, এবং ইউটিউবের জন্য ওয়াই২মেট ডট কম। এই প্রক্রিয়াটির মাধ্যমে তারা এমন সব ভিডিও ফুটেজ ও ছবি এক জায়গায় করতে পেরেছিল, যা থেকে বোঝা যায়, সেদিন ওয়াশিংটনে আসলে কী ঘটেছে। এমনকি কোনো সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী কোনো কনটেন্ট মুছে দিলেও সেগুলো সাংবাদিকদের কাছে থেকে গিয়েছিল।
এসব থার্ড পার্টি সাইটের মাধ্যমে ডাউনলোডের জন্য যদি কোনো প্ল্যাটফর্মের মেধাস্বত্ব নীতিমালা লঙ্ঘনের ঝুঁকি থাকে, তাহলে কমান্ড-লাইন সফটওয়্যার ব্যবহার করুন। যেমন, ইউটিউব ভিডিও ডাউনলোডের জন্য ইউটিউব-ডিএল।
‘অতীত ভ্রমণ’ এবং তথ্য সংরক্ষণের টুল। অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য নিয়ে আপনি যখন অসৎ ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নিতে যাবেন, প্রায় ক্ষেত্রেই দেখবেন তাঁরা তাঁদের কুকর্মের অনলাইন প্রমাণ বদলে বা মুছে ফেলতে চেষ্টা করছেন। তাই তথ্য-প্রমাণ সংরক্ষণের জন্য রিপোর্টাররা এই টুলগুলো ব্যবহার করতে ভালোবাসেন: হাঞ্চ.লি—যা আপনার অনলাইন সার্চগুলো আর্কাইভ করে; দ্য ওয়েব্যাক মেশিন—যে সাইটের কার্যকারিতা নিয়ে সম্প্রতি একটি লেখা প্রকাশ করেছে জিআইজেএন; এবং আর্কাইভ.টুডে—যা ওয়েবপেজ ও অনেক শব্দের দীর্ঘ পোস্ট কপি ও সংরক্ষণ করে রাখে।
টেলিগ্রামে উগ্র-ডানপন্থী গ্রুপ ও ভুয়া তথ্য শনাক্ত করার নতুন কিছু টুল। অনলাইনে যাঁরা অনুসন্ধান করেন, তাঁদের জন্য গত কয়েক বছরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টুল হয়ে উঠেছে ফেসবুক সার্চ প্ল্যাটফর্ম ক্রাউডট্যাঙ্গল। ফেসবুক, টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে ভুয়া তথ্য শনাক্ত করা এবং যারা ছড়াচ্ছে, তাদের খুঁজে বের করার কাজে টুলটির জুড়ি মেলা ভার। বলে রাখা ভালো, অনলাইনে ভুয়া তথ্য শনাক্ত করার জগতে অন্যতম সেরা হিসেবে পরিচিত প্রোপাবলিকার ক্রেইগ সিলভারম্যান গত বছর দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্রাউডট্যাঙ্গলকে তাঁর সবচেয়ে পছন্দের টুল হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। তবে অনেক নতুন নতুন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ক্রাউডট্যাঙ্গল কাজ করে না। যেমন টেলিগ্রাম। চরম-ডানপন্থী, কর্তৃত্বপরায়ণ ও জঙ্গি গ্রুপগুলোকে প্রায়ই এসব নতুন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে দেখা যায়। তবে সম্প্রতি, বাজফিডের জেন লিটিয়েঙ্কোর মতো রিপোর্টাররা টেলিগ্রামের বিভিন্ন চ্যানেল নজরে রাখার পদ্ধতি বের করেছেন। এ জন্য তিনি নির্দিষ্ট কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করেন টেলেগাগো অ্যাপ, টিজিস্ট্যাট-এ। এ ছাড়াও Site:t.me/*- জাতীয় তুরুপের তাস ব্যবহার করে খোঁজ চালান গুগলে। এই বিটে কাজ করা রিপোর্টাররা আরও জানিয়েছেন, তাঁরা সার্চিংয়ের নতুন নতুন কৌশল সম্পর্কে জানতে প্রতি সপ্তাহে ঢুঁ মারেন ওসিন্টকিউরিয়াস-এর সাইটে। ভুয়া তথ্যের প্রচারণা ম্যাপ করার জন্য সাংবাদিকদের আরেকটি প্রিয় টুল হলো: হোক্সি।
‘ভার্চ্যুয়াল বার্নার ফোন।’ হ্যাকিং ও হয়রানির ক্রমবর্ধমান হুমকির মুখে, অনেক সাংবাদিক—বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সাররা—গুগল ভয়েস সার্ভিসকে বিবেচনা করছেন গুরুত্বপূর্ণ টুল হিসেবে। এর মাধ্যমে আপনি আপনার সব ফোন নাম্বারকে একটি আলাদা নাম্বারের সঙ্গে যুক্ত করতে পারবেন। সুবিধা হলো, এই নাম্বার ট্রেস করে কেউ আপনাকে ধরতে পারবে না। আর বাস্তব জীবনে তো একটা নাম্বার হলেই চলে। এখানে আপনি ভয়েস মেইল টেক্সট সার্চ করতে পারবেন। এটি ভার্চ্যুুয়াল বার্নার ফোন হিসেবে কাজ করে এবং রিপোর্টারদের হয়রানি ও নজরদারি থেকে সুরক্ষা দিতে পারে।
কাজ গুছিয়ে রাখতে ব্যক্তিগত টাস্ক ম্যানেজার। সাংবাদিকেরা বলছেন, জটিল অনুসন্ধান পরিচালনার ক্ষেত্রে, তথ্য গুছিয়ে রাখার নতুন কিছু ডিজিটাল টুল ভীষণ কার্যকর বলে প্রমাণিত হচ্ছে। এ জন্য তাঁরা থিংস অ্যাপ ও ওয়েবভিত্তিক ওয়ার্কফ্লোয়ি প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট টুল (ফোল্ডারের পরিবর্তে এখানে আছে ইন্টারঅ্যাকটিভ নোট) ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। যেসব দেশে রিপোর্টাররা নজরদারির উচ্চ ঝুঁকিতে থাকেন, বা যেখানে কর্তৃপক্ষের লোকজন এসে জিনিসপত্র জব্দ করে নেওয়ার চল আছে, সেসব জায়গায় তথ্যের ফোল্ডার সুরক্ষিত রাখতে ভেরাক্রিপ্ট এনক্রিপশন টুল ব্যবহার করতে পারেন। ছদ্মবেশী ফোল্ডার তৈরিতেও টুলটি কাজে আসে, যেন ডিভাইস ভুল হাতে পড়লেও কনটেন্টগুলো দৃষ্টির আড়ালে থাকে।
অনুসন্ধানের জন্য ফ্রি স্যাটেলাইট ছবি। কোনো কোনো অনুসন্ধানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে স্যাটেলাইট ছবি। যেমন, একবার বতসোয়ানার অলাভজনক অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম, ইঙ্ক-এর কর্মীরা মাত্র একটি স্যাটেলাইট ছবি কেনার জন্য নিজেদের বেতন কাটছাঁট করেছিলেন। সেই ছবি দিয়ে প্রমাণ করা হয়েছিল যে, দেশটির প্রেসিডেন্ট সেনাবাহিনীর সম্পদ ব্যবহার করে নিজের জন্য প্রাসাদ বানিয়েছেন। শুনে অবাক হতে পারেন, কিন্তু এখন অনেক স্যাটেলাইট কোম্পানি অনুসন্ধানের জন্য সাংবাদিকদের ফ্রি ছবি সরবরাহ করে। এমনই একটি ছবি দিয়ে কোভিড-১৯ মৃত্যু নিয়ে ইরান সরকারের দাবি মিথ্যা প্রমাণ করা সম্ভব হয়েছিল। এখানে পাবেন বিষয়টি নিয়ে জিআইজেএন-এর বিস্তারিত গাইড।
ক্রেইগ সিলভারম্যানের যুগান্তকারী ডিজিটাল টুলবক্স। অনেক রিপোর্টারই বলে থাকেন, ক্রেইগ সিলভারম্যানের ভেরিফিকেশন হ্যান্ডবুক বইটি ওপেন সোর্স টুল জগতের সুইস আর্মি নাইফ। তাঁরা অনলাইনে তথ্য যাচাই ও খলনায়কদের শনাক্ত করার কাজে নিয়মিত বইটি ব্যবহার করেন।
নজরদারি প্রযুক্তির নতুন নতুন ডেটাবেস। বিভিন্ন দেশের সরকার কীভাবে গোয়েন্দা প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, তার কিছুটা ধারণা মেলে জিআইজেএন সদস্য ফরবিডেন স্টোরিজের নেতৃত্বে হওয়া পেগাসাস প্রজেক্ট, এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ফরেনসিক আর্কিটেকচারের দ্য ডিজিটাল ভায়োলেন্স প্ল্যাটফর্ম থেকে। আরও জানা যায়, এগুলো সাংবাদিক ও ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর কী ধরনের হুমকি তৈরি করছে। একই সময়ে, সিটিজেন ল্যাবের সাম্প্রতিক রানিং ইন সার্কেল প্রতিবেদনে ২৫টি দেশের সরকারের একটি তালিকা তুলে ধরা হয়েছে। এই সরকারগুলো নজরদারির এমন সব আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, যা দিয়ে ফোন হ্যাক থেকে শুরু করে আড়ি পাতা পর্যন্ত অনেক কিছুই করা যাবে, এবং ফোনে কোনো ডিজিটাল ফুটপ্রিন্টও থাকবে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গোয়েন্দা নজরদারি ব্যবস্থা নিয়ে অনুসন্ধানের একটি রোড ম্যাপ পাবেন ইলেকট্রনিক ফ্রন্টিয়ার ফাউন্ডেশনে। যুক্তরাষ্ট্রে ফেশিয়াল রিগকনিশন ও অন্যান্য পুলিশি নজরদারির ৮,০০০ ব্যবস্থার একটি ডেটাবেস আছে তাদের।
বিনা পয়সার, ব্যবহারবান্ধব এনক্রিপশন টুল। রিপোর্টাররা এনক্রিপ্টেড ইমেইলের জন্য ফোটনমেইল এবং সুরক্ষিত মেসেজ যোগাযোগের জন্য সিগন্যাল ব্যবহার করতে পারেন। অনুসন্ধানী সাংবাদিকেরা লাস্টপাস-এর মতো ফ্রি পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহারেরও পরামর্শ দিয়েছেন। এটি আপনার জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করবে। আপনাকে শুধু একটি মাস্টার পাসওয়ার্ড নির্ধারণ করে দিতে হবে। ফায়ারফক্সের মতো সুরক্ষিত ব্রাউজার ব্যবহার করুন। ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের মতো ব্রাউজার ডিলিট করে দিন।
সাক্ষাৎকারের জন্য ওটার ও পিয়ার নোট-এর মতো স্বয়ংক্রিয় ট্রান্সক্রিপশন টুল। অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের মতে, এই টুলগুলো শুধু সময়ই বাঁচায় না, কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চের ব্যবস্থা থাকায় অনেক কিছুর মধ্যে সংযোগ খুঁজে পেতেও সহায়তা করে।
জাহাজ ও সরবরাহ চেইন ট্র্যাকিংয়ের নতুন ও শক্তিশালী টুল। সমুদ্রে থাকা প্রায় ৯০ হাজার জাহাজ শনাক্ত ও অনুসরণ করার উদ্ভাবনী সব পদ্ধতি বের করেছেন সাংবাদিকেরা। তাঁরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যেসব টুল ব্যবহার করেন, সেগুলোর একটি বিস্তারিত তালিকা প্রকাশ করেছে জিআইজেএন। এগুলোর মধ্যে মেরিন ট্রাফিক অ্যাপ অনেকের পছন্দ। অর্থবাণিজ্য নিয়ে ওপেন সোর্স ডেটার ক্ষেত্রে, ব্যবহার করতে পারেন ইউএন কমট্রেড ডেটাবেস। বাণিজ্যিক পোর্টালগুলোর মধ্যে, দেখতে পারেন পানজিভা, ডাটামাইন, ও ইমপোর্ট জিনিয়াস।
আকাশ থেকে প্রমাণ খোঁজা—এবং ভিজ্যুয়ালি অতীত ভ্রমণ। ফরেনসিক অনুসন্ধান থেকে শুরু করে জটিল পরিবেশগত রিপোর্টিং প্রকল্প পর্যন্ত অনেক ক্ষেত্রেই সাংবাদিকেরা বড় বড় ঘটনা সামনে এনেছেন গুগল আর্থ প্রো ব্যবহার করে। এটি শুধু রিপোর্টারকে একটি ঘটনা ঠিক কোথায় ঘটেছে, সেটিই জানায় না, একই সঙ্গে সেই জায়গায় বিভিন্ন সময়ে কী ধরনের চিত্র দেখা গেছে, তা-ও দেখার সুযোগ করে দেয়। এর ল্যান্ডস্কেপ ফিচারটির মাধ্যমে আপনি সেই জায়গা থেকে দৃশ্যটি দেখার সুযোগ পাবেন, যেভাবে হয়তো আপনার প্রতিবেদনের মূল চরিত্রটি দেখেছিল। এবং ওয়াচ আইকনের মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন তারিখের মধ্যে আগে-পরে তুলনা করে দেখতে পারবেন।
আরও পড়ুন
ভিজ্যুয়াল ফরেনসিক: ছবি ব্যবচ্ছেদ করে যেভাবে নিরাপত্তা বাহিনীর হামলা উদঘাটন করছেন রিপোর্টাররা
প্রিয় টুল ২০২০: সেরা সাংবাদিকরা যেসব টুল নিয়মিত ব্যবহার করেন
জিআইজেএন রিসোর্স সেন্টার: রিপোর্টিং টিপস অ্যান্ড টুলস
রোয়ান ফিলিপ জিআইজেএন-এর রিপোর্টার। দক্ষিণ আফ্রিকার সানডে টাইমসে কাজ করেছেন প্রধান প্রতিবেদন হিসেবে। বিদেশী প্রতিনিধি হিসেবে রাজনীতি, দুর্নীতি ও সংঘাত নিয়ে রিপোর্ট করেছেন বিশ্বের দুই ডজনেরও বেশি দেশ থেকে।