সম্পাদকের নোট: এপ্রিলের শুরুতে আইস্টোরিজের সম্পাদক রোমান আনিনের মস্কোর বাসায় তল্লাশি চালিয়েছিল রুশ কর্তৃপক্ষ। আইস্টোরিজ রাশিয়ার অল্প কিছু টিকে থাকা ওয়াচডগ মিডিয়ার অন্যতম এবং আনিনকে বিবেচনা করা হয় বিশ্বের অন্যতম সেরা অনুসন্ধানী সাংবাদিক হিসেবে। জিআইজেএনসহ বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো তাঁর ওপর এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে। আনিনের বাসায় এই পুলিশি তল্লাশির প্রতিক্রিয়ায় আইস্টোরিজের আইনজীবী ভাসিলি গ্রিসচাক বিশদভাবে তুলে ধরেছেন, সাংবাদিকদের কীভাবে এই ধরনের আগ্রাসী কৌশল মোকাবিলা করতে হবে। আইস্টোরিজের জুলিয়া ক্রাসনিকোভা তাঁর পরামর্শগুলো থেকে রুশ ভাষায় একটি গাইড তৈরি করেছেন। সেখান থেকে এটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেছে জিআইজেএন। এখানকার কয়েকটি পরামর্শ বিশেষভাবে রাশিয়ান আইনসংশ্লিষ্ট; তবে বেশির ভাগই গোটা বিশ্বের সাংবাদিকদের জন্য প্রাসঙ্গিক।
এপ্রিলের ৯ তারিখে, রাশিয়ান ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির প্রধান তদন্ত দলের কর্মকর্তারা তল্লাশি চালাতে আসেন আমাদের প্রধান সম্পাদক রোমান আনিনের বাসায়। তদন্তকারীদের সহযোগিতা করছিল ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি)। এই তল্লাশি চলে প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে। একই সময়ে তল্লাশি চালানো হয় আইস্টোরিজের নিউজরুমেও।
এর কারণ ছিল একটি অনুসন্ধান: ‘প্রিন্সেস ওলগার’ রহস্য: রোজনেফটের ইগর সেচিন ও বিশ্বের অন্যতম বিলাসবহুল ইয়টের মধ্যে সংযোগ কোথায়? এটি প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৬ সালে, নোভায়া গেজেটায়। [লিখেছিলেন আনিন।]
রোমানকে এর আগেও দুবার পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছিল। এবং এখন পর্যন্ত তিনি এই মামলায় সাক্ষী হিসেবে আছেন। কিন্তু যেকোনো সময় তিনি সন্দেহভাজনও বনে যেতে পারেন।
১৪ এপ্রিল, এই একই তদন্ত কমিটির সদস্যরা তল্লাশি চালান শিক্ষার্থীদের ম্যাগাজিন ডোক্সার অফিসে। সেখানে ‘আদালতের জারি করা বিশেষ সমনের’ পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা জিজ্ঞাসাবাদ করেন, তল্লাশি চালান এবং একজনকে গৃহবন্দিও করেন ।
এই ঘটনাগুলো স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর চাপ আরও বাড়িয়ে দেয়। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের কী করার আছে? অন্ততপক্ষে, আমরা এ ব্যাপারে একে অপরের পাশে দাঁড়াতে পারি, এবং কী ঘটে চলেছে, সে ব্যাপারে অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারি। কিন্তু সাংবাদিকদেরও জানতে হবে, কর্তৃপক্ষ দরজায় কড়া নাড়লে তাঁরা কী করবেন।
আমাদের আজকের এই পরামর্শের মূল বিষয়টি হলো: এ রকম তল্লাশির সময় আপনার আচরণ কেমন হবে। অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়, কর্মকর্তারা কিছুটা পিছু হটেন, যদি তাঁরা দেখেন যে, ব্যক্তিটি তাঁর অধিকার সম্পর্কে সচেতন।
এখানকার এই পরামর্শগুলো তুলে ধরা হয়েছে অ্যাটর্নি ভাসিলি গ্রিসচাকের প্রেজেন্টেশন থেকে। যেটি তিনি উপস্থাপন করেছিলেন আইস্টোরিজের কর্মীদের সামনে।
গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ
১. জরুরি পরিস্থিতিতে যোগাযোগ করার জন্য আইনজীবী ঠিক করে রাখুন। এবং সব সময় তাঁদের কথা মাথায় রাখুন। আইনজীবীর ফোন নম্বরটি সব সময় মনে রাখুন, যাতে আপনার ফোন কেড়ে নেওয়া হলে অন্য কোনো ফোন থেকে কল করতে পারেন।
২. আপনি কোথায় আছেন এবং কী ঘটে চলেছে, সে ব্যাপারে আপনার সম্পাদক, বা কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ মানুষকে জানানোর প্রয়োজন হতে পারে। তাই এমন কয়েকজন মানুষের ফোন নম্বরও মনে রাখুন।
৩. আপনার অ্যাকাউন্টগুলোর নিরাপত্তার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। কিন্তু আপনার পাসওয়ার্ড ব্যবস্থাকে খুব বেশি জটিলও করে তুলবেন না। মনে রাখবেন, আপনার সব ডিভাইস জব্দ করে নেওয়া হলেও কিছু অনলাইন সার্ভিসে আপনার অ্যাকসেস থাকতে হবে। আপনি যদি ম্যাকবুক ব্যবহার করেন, তাহলে ফাইলভল্ট ব্যবহার করে ডিস্ক এনক্রিপ্ট করতে পারেন। উইন্ডোজের জন্য ব্যবহার করুন বিটলকার।
তল্লাশির সময় কী করবেন
১. তাৎক্ষণিকভাবে আপনার আইনজীবীকে ফোন করুন।
২. শান্ত থাকার চেষ্টা করুন। শান্ত হতে কিছুটা সময়েরও দরকার হয়। তাই যদি আপনার বহুতল ভবনের প্রবেশমুখে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা হয়, তাহলে লিফটের বদলে সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠার উদ্যোগ নিন। আপনি যদি বাসার ভেতরে থাকেন এবং বাইরে থেকে দরজায় নক করা হয়, তাহলে তড়িঘড়ি করে দরজা খুলবেন না। স্পাইহোলের মাধ্যমে পুলিশের পরিচয়পত্র ও তল্লাশি পরোয়ানা দেখাতে বলুন। তাঁরা যতক্ষণে সেটি করবেন, ততক্ষণে আপনি শান্ত থাকার এবং উকিল বা সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগ করার সময় পাবেন।
৩. ফোন আপনার পকেটে রাখুন। তাহলে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে আপনার ব্যক্তিগত জিনিসে পরিণত হবে। সেটি জব্দ করতে গেলে কর্মকর্তাদের আরেকটি পরোয়ানা লাগবে ব্যক্তিগত তল্লাশির জন্য।
৪. পুলিশ কর্মকর্তা যদি আপনাকে অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে নিষেধ করেন, তাহলে ‘হ্যাঁ’, ‘না’-এর মাধ্যমে শুনে নিন যে, আপনি সেটি করতে পারবেন কি না। এবং বলুন, ‘আপনারা যদি আমার ফোন জব্দ করতে চান, তাহলে ব্যক্তিগত তল্লাশি পরিচালনা করতে হবে।’ এই ব্যক্তিগত তল্লাশি অবশ্যই একই লিঙ্গের কোনো কর্মকর্তার মাধ্যমে হতে হবে। যদি কর্মকর্তারা এই সব আইন ভেঙে ফেলেন, তাহলে সেটি টুকে রাখুন (নিচে আমরা ব্যাখ্যা করেছি, কোথায় এই ‘মন্তব্যগুলো’ লিখে রাখবেন এবং কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ)।
৫. তাঁরা যদি আপনাকে তল্লাশি পরোয়ানার ছবি তুলতে দেন কিংবা একটি লিখিত অনুলিপি তৈরির সুযোগ দেন, তাহলে খুবই ভালো। সেটি করে ফেলুন।
৬. এই তল্লাশির কারণ কী, তা খুঁজে বের করুন। তাঁরা নিশ্চয়ই বলবেন যে, তাঁরা কিসের খোঁজ করছেন। বেশ কয়েকবার এটি জানার চেষ্টা করার পরও যদি তাঁরা কোনো জবাব না দেন, তাহলে এটি একটি টুকে রাখার মতো বিষয়।
৭. যদি তাঁরা আপনার দরজা ভাঙা শুরু করেন বা বাড়িতে ঢুকে পড়েন, তাহলে বুঝতে হবে, কর্মকর্তাদের খুব রুক্ষ ব্যবহার করার পূর্বপরিকল্পনা আছে।
৮. তল্লাশি কর্মকাণ্ড অবশ্যই পরিচালিত হতে হবে দুজন সংযুক্ত সাক্ষীর সামনে। এঁদের সঙ্গে কথা বলুন। তাঁদেরকে ব্যাখ্যা করে বলুন যে, আপনি একজন সাংবাদিক এবং ধারণা করছেন, এই তল্লাশি আপনার কোনো পেশাগত কাজের কারণেই হচ্ছে। তাঁদেরকে বলুন পুলিশের প্রতিটি কর্মকাণ্ড ভালোভাবে খেয়াল করতে এবং তাঁদের প্রতিটি পদক্ষেপ অনুসরণ করতে।
৯. কোনো সাক্ষীকে আপনার সন্দেহ হলে; যেমন, যদি মনে হয়, তাঁরা তল্লাশিকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের আগে থেকেই চেনেন, তাহলে আপনি তাঁদের জায়গায় অন্য কাউকে আনার দাবি তুলতে পারেন। খুবই সম্ভাবনা আছে যে, তাঁরা আপনার এই অনুরোধ রাখবেন না। তখন আপনি আরও একটি মন্তব্য টুকে রাখবেন আপনার অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে।
১০. তল্লাশিটি যেন ধারাবাহিকভাবে (এক ঘরের পর আরেক ঘর। পুরো বাড়িজুড়ে যখন যেখানে খুশি তল্লাশি চালানো নয়) চালানো হয়, সে ব্যাপারে জোরাজুরি করুন। এবং প্রতিটি পর্যায়ে সংযুক্ত সাক্ষীদের উপস্থিতি দাবি করুন। এগুলো যদি না মানা হয়, তাহলে এটিও টুকে রাখুন মন্তব্যের ঘরে।
১১. মনে রাখুন, বাড়িতে আপনার সঙ্গে যদি অন্য কোনো ব্যক্তি থাকেন, তাহলে আপনার সেই ফ্ল্যাটমেট বা আত্মীয়ের ডিভাইস, কাগজপত্র, অন্যান্য জিনিসও পুলিশ জব্দ করতে পারবে। দুর্ভাগ্য যে, বিষয়টি (রাশিয়ায়) আইনসিদ্ধ।
গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র
১. পুলিশ কর্মকর্তাকে অবশ্যই আপনার কাছে একটি তল্লাশির বিবরণী জমা দিতে হবে। যেখানে বলা থাকবে যে কী কী ঘটেছিল। এটি খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। এখানে বলা থাকবে:
- তারিখ
- কখন তল্লাশিটি শুরু হয়েছিল এবং কখন শেষ হয়েছে।
- সবার ঠিকানা (এখানে সাক্ষীদের ঠিকানাও উল্লেখ করা থাকবে)
- তল্লাশিতে অংশগ্রহণকারী সবার পুরো নাম ও স্বাক্ষর (অনুসন্ধানী দল, সাক্ষী ইত্যাদি)। যদি কোনো কিছু এমনভাবে লেখা হয়, যা পড়া যাচ্ছে না (যেমন, দুর্বোধ্য হাতের লেখা), তাহলে বলুন, এটি যেন টাইপ করে দেওয়া হয় বা আবার লিখে দেওয়া হয়।
২. বিবরণীতে ফাঁকা থাকা জায়গাগুলো কোনো প্রতীক (যেমন Z) দিয়ে পূরণ করে দিন। যেন পরবর্তীকালে এখানে অন্য কিছু বসানো না যায়।
৩. বিবরণীর এই ফর্মে ‘মন্তব্য’ বলে একটি জায়গা থাকে। যদি এখানে বলা থাকে, ‘কোনো মন্তব্য নেই’, তাহলে সেটি কেটে দিন এবং আপনার মন্তব্যটি সেখানে লিখে দিন। যদি মন্তব্য লেখার মতো পর্যাপ্ত জায়গা না থাকে, তাহলে লিখুন: ‘মন্তব্য অন্য একটি পেজে সংযুক্ত করা হয়েছে,’ এবং অতিরিক্ত কিছু পেজে আপনার মন্তব্য লিখুন।
৪. আপনাকে অবশ্যই এই বিবরণীর একটি অনুলিপি পেতে হবে। এটি হবে আসল নথির একদম হুবহু একটি জিনিস। যদি আপনার কপিতে কিছু জিনিস ফাঁকা (সই বা মন্তব্য) থাকে, তাহলে ফর্ম গ্রহণের জায়গায় লিখুন: ‘বিবরণীর অনুলিপি গৃহীত হয়নি’।
মন্তব্য কী এবং সেগুলো কীভাবে লিখবেন?
আপনার অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে বা হতে পারে বলে আপনার মনে হয়েছে- এমন সব ঘটনা আপনার মন্তব্যে উল্লেখ করা উচিত। পরবর্তী সময়ে আপনার এই মন্তব্যের ভিত্তিতে, আপনি কোনো কর্মকর্তার কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। এটি তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বিচারকদের কাছে নথি হিসেবে যুক্ত হবে।
আপনার সব মন্তব্য একটি ‘পেপার ট্রেইল’ তৈরিতে সাহায্য করবে। এগুলোকে চিন্তা করুন আপনার নিজের ও আপনার আইনজীবীর সুরক্ষা জালের সুতো হিসেবে।
মন্তব্যে যেকোনো কিছু উল্লেখ করা যেতে পারে
- তল্লাশি চলেছে…টা থেকে…টা পর্যন্ত, এবং আমাদের কোনো খাবার ও পানি দেওয়া হয়নি।
- কোনো পরিচয়পত্র দেখানো হয়নি।
- সাক্ষীদের ব্যাপারে আমাদের সংশয় ছিল, কিন্তু তাঁদের বদলে অন্য কাউকে আনার অনুরোধ রাখা হয়নি।
- কর্মকর্তারা কারও তদারকি ছাড়াই এদিকে-ওদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন।
- …এর আবেদন গৃহীত হয়নি।
- …এই অধিকারগুলো লঙ্ঘন করে ব্যক্তিগত তল্লাশি পরিচালনা করা হয়েছে।
তল্লাশির পরে
কর্মকর্তারা যদি আপনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় যেতে বলেন, তাহলে অস্বীকৃতি জানান। তাঁদের বলুন যে, এ জন্য আনুষ্ঠানিক সমন লাগবে।
যদি আপনাকে জোর করে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন, তাহলে তাঁদের কথা মেনে নেওয়া এবং পুলিশ স্টেশনে যাওয়াই ভালো। তা না হলে, তাঁরা আপনাকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে দিতে পারেন এবং তখন আনুষ্ঠানিকভাবে আটক দেখানো হবে। যেটি আপনি নিশ্চিতভাবেই চাইবেন না।
তবে, এটিও একটি লঙ্ঘন! আপনার উচিত হবে তল্লাশি বিবরণীর মন্তব্যে এটিও উল্লেখ করা।
আপনার ওপর যদি জোর খাটানো হয়, তাহলে মেনে নিন। তা না হলে আপনি (রাশিয়ার) ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৪১৮ নম্বর ধারা অমান্যের ঝুঁকিতে পড়বেন। যা হলো: সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগ।
আপনাকে যদি একজন আটক ব্যক্তি হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তাহলে প্রধান নিয়ম হলো: আপনার আইনজীবী ছাড়া কথা না বলা। সব প্রশ্নের উত্তর দিন ‘রাশিয়ান সংবিধানের ৫১ ধারা’ বা ‘ফৌজদারি কার্যবিধির ৫১ ধারা’ দিয়ে। যা হলো: মৌন থাকার অধিকার। বিনা টাকায় কোনো আইনি সহায়তা নেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হবেন না!
আপনাকে অবশ্যই তাঁদের একটি ফোন করতে দিতে হবে। যদি না দেন, তাহলে এটি মন্তব্যে উল্লেখ করুন (এতক্ষণে আপনি হয়তো এই মন্তব্যের মূল বিষয়টি বুঝে গেছেন)।
আপনার যদি কোনো অসুস্থতা থাকে এবং বিশেষ ওষুধের প্রয়োজনীয়তা থাকে, তাহলে সেটি পুলিশ কর্মকর্তাদের জানাতে হবে এবং বিবরণীতে উল্লেখ করতে হবে। যদি তাঁরা তা না দেন, তাহলে সেটিও মন্তব্যে বলতে হবে।
জিজ্ঞাসাবাদের পরই আপনাকে এটির একটি বিবরণী দেওয়ার কথা। এ ক্ষেত্রে প্রধান বিষয় হলো: এটি খুব সতর্কতার সঙ্গে পড়ুন, ফাঁকা জায়গাগুলো (Z) চিহ্ন দিয়ে ঢেকে দিন, প্রাসঙ্গিক সব জায়গায় আপনার মন্তব্য যুক্ত করুন। জিজ্ঞাসাবাদের পরপরই আপনাকে এই বিবরণীর একটি অনুলিপি দেওয়ার কথা। যদি তা না দেন, এবং পরবর্তী দেওয়ার কথা বলেন, তাহলে আপনিও সেটি তাৎক্ষণিকভাবে দেওয়ার দাবি করুন।
বাড়ি তল্লাশি না হয়ে রাস্তায় ব্যক্তিগত তল্লাশির মুখে পড়লে কী করা উচিত?
এ ক্ষেত্রে প্রধান নিয়ম হলো: আপনাকে যদি আটক করা না হয়, তাহলে আপনি তাঁদের সঙ্গে যাবেন না।
১. কোনো কারণ ছাড়াই তাঁরা আপনাকে ব্যক্তিগত তল্লাশির জন্য থামাতে পারেন না। পুলিশ কর্মকর্তাদের অবশ্যই নিজেদের পরিচয় দিতে হবে। তাঁরা যদি এগিয়ে আসেন আর বলেন: ‘আমাদের সঙ্গে আসুন, আমাদের কিছু প্রশ্ন আছে,’ তাহলে আপনাকে তাৎক্ষণিকভাবে বলতে হবে, “আমাকে কি আটক করা হয়েছে?” তাঁরা যদি বলেন যে, শুধুই আপনার পরিচয় জানতে চান, তাহলে তাঁদের পরিচয়পত্র দেখাতে পারেন। অন্য আর কোথাও যাবেন না।
২. যদি আপনাকে আটক করা হয়, তাহলে সেটি তাঁদের আটকের বিবরণীতে লিখতে হবে। আটক করার পরমুহূর্ত থেকেই আপনি আপনার ফোন করার অধিকার চাইতে পারেন। নিশ্চিত করুন, যেন সবকিছু বিবরণীতে অন্তর্ভুক্ত হয়। এ জন্য আপনি মন্তব্য যোগ করতে পারেন। তাঁরা যদি কোনো ব্যক্তিগত তল্লাশি চালান, তাহলে সেটির জন্যও বিবরণী দাখিল করতে হবে।
৩. আপনাকে আটকের কারণ কী, তা ব্যাখ্যা করতে পুলিশ কর্মকর্তারা বাধ্য।
৪. তাঁরা যদি একেকবার একেক কারণ বলেন, এবং তারপর আবার সেটি বদলান, তাহলে বুঝবেন, আপনার সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। এই বিষয়টি বিবরণীতে উল্লেখ করুন এবং পরবর্তী সময়ে অবৈধভাবে আটকের অভিযোগ দায়ের করুন।
৫. এই বিষয়টি মাথায় রাখুন যে, সে সময় সেখানে আশপাশে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল কি না, কিংবা কেউ সেদিক দিয়ে গিয়েছিল কি না। কারণ, এগুলো পরবর্তী সময়ে এই আটক নিয়ে সাক্ষীর বক্তব্য তৈরিতে কাজে লাগতে পারে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়: রুক্ষ ব্যবহার এবং রাগান্বিত আচরণ করবেন না। যতটা সম্ভব বিনয়ী হওয়ার চেষ্টা করুন। এবং আমরা আন্তরিকভাবে কামনা করি: আপনাকে যেন এসব পরামর্শ অনুসরণ করতে না হয়।
আরো পড়ুন
রাশিয়ার রোমান আনিন তার অনুসন্ধানে যেসব টুল ব্যবহার করেন
জিআইজেএন রিসোর্স: সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি
হাও টু সাকসেসফুলি ডিফেন্ড ইওরসেল্ফ ইন হার ম্যাজেস্টিস লাইবেল কোর্টস
জুলিয়া ক্রাসনিকোভা আইস্টোরিজের সোশ্যাল মিডিয়া এডিটর। এর আগে তিনি মস্কোতে, নোভায়া গেজেটের হয়ে একটি ক্রাউডফান্ডিং প্রকল্প তৈরি করেছিলেন। তারও আগে, তিনি কাজ করেছেন ইন্টারনেট সংবাদপত্র, রিয়ালনো ভ্রেময়া (কাজান)-এর হয়ে। সেখানে তিনি সংবাদ বিভাগ দেখাশোনা এবং নিউজরুমের সোশ্যাল নেটওয়ার্ক তৈরির কাজ করেছেন।