গত বছরের ২০ আগস্ট, রাসায়নিক অস্ত্রের সাহায্যে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছিল রাশিয়ার শীর্ষ বিরোধীদলীয় নেতা, আলেক্সি নাভালনির ওপর। কিন্তু এই হত্যাচেষ্টা নিয়ে বিশ্বের কোনো আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ফৌজদারি তদন্তের ঘোষণা দেয়নি।
এই ঘটনায় জবাবদিহি আদায়ের কোন চেষ্টাই যখন চোখে পড়ছিল না, তখন সামনে এগিয়ে আসে অলাভজনক অনুসন্ধানী নিউজরুম, বেলিংক্যাট ও রাশিয়ার দ্য ইনসাইডার; সঙ্গে সিএনএন ও ডের স্পিগেল। মাত্র তিন মাসের অনুসন্ধানে তাদের সাংবাদিকরা বের করে ফেলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রধান বিরোধী নেতা, নাভালনিকে নোভিচক নার্ভ এজেন্ট দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে রাশিয়ার ডোমেস্টিক সিকিউরিটি সার্ভিস, এফএসবি।
এফএসবি এজেন্টরা কাউন্টার-সার্ভেইল্যান্সে (নজরদারি ফাঁকি দেওয়ার ক্ষেত্রে) বিশেষজ্ঞ। তারপরও, সাংবাদিকদের এই যৌথ অনুসন্ধানে তাদের এমন তিন সদস্যের নাম বেরিয়ে আসে যারা নাভালনিকে অনুসরণ করেছিলেন। উন্মোচিত হয়, আরো পাঁচ বিজ্ঞানী ও এক সিনিয়র গোয়েন্দা কর্মকর্তার কথা, যারা এই অপারেশনে সহযোগিতা করেছিলেন। এমনকি, সিএনএন-এর এক রিপোর্টার এক এফএসবি সদস্যের মস্কোর বাড়িতে বসে, তার মুখোমুখিও হয়েছিলেন। নাভালনির ওপর এই হামলা গোটা বিশ্বের সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছিল; তিনি বিষক্রিয়া থেকে সেরেও উঠতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু তাকে ফের রাশিয়ার কারাগারে পাঠানো হয়, যাকে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বর্ণনা করেছে “রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত” সাজা হিসেবে। খবরে বেরিয়েছে, এর পর থেকে তিনি বেশ কিছু স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছেন। নাভালনিকে বিষপ্রয়োগ ও হত্যাচেষ্টার বিষয়টি বরাবরই অস্বীকার করে আসছে রাশিয়া, কিন্তু বিরোধীদলীয় নেতাকে বিষপ্রয়োগ ও শাস্তিপ্রদানের জন্য মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র।
নাভালনিকে বিষপ্রয়োগের সঙ্গে রাশিয়ার নিরাপত্তা সংস্থা জড়িত ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখতে গিয়ে কালোবাজার থেকে ডেটা কিনেছিলেন অনুসন্ধানী জোটের সাংবাদিকরা। সাংবাদিকতায় নৈতিকতার বিচারে, যা ছিল একেবারে শেষ অবলম্বন। এসব ডেটা তারা মিলিয়েছেন অন্যান্য ওপেন সোর্স টুল, সোশ্যাল মিডিয়ায় খোঁজ ও অন্যান্য প্রথাগত রিপোর্টিং পদ্ধতির সঙ্গে।
গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর, বেলিংক্যাট (জিআইজেএন-এর এই সদস্য সংগঠন কাজ করে ওপেন সোর্স ইন্টেলিজেন্স নিয়ে) বলেছিল: “কোনো দেশের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাই আলেক্সি নাভালনির ওপর বিষপ্রয়োগ নিয়ে তদন্ত করছে না।” বেলিংক্যাটের শীর্ষ গবেষক, ক্রিস্টো গ্রোজেভ জিআইজেএনকে বলেছেন, ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্তও, কোনো আইনপ্রয়োগকারী কর্মকর্তা হামলার শিকার বা প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেনি। এবং এটিই অপরাধ হয়ে থেকে যাচ্ছে যে, ঘটনাটি পুরোপুরি অনুসন্ধান করে দেখলেন শুধু সাংবাদিকরাই।
এই অনুসন্ধানের পদ্ধতি নিয়ে গত ২৫ মার্চ একটি ওয়েবিনার আয়োজন করে জিআইজেএন। তাতে অংশ নেন গ্রোজেভ এবং রাশিয়ার অন্যতম স্বাধীন অনুসন্ধানী সাইট দ্য ইনসাইডারের প্রধান সম্পাদক, রোমান দোব্রোখোতোভ। সেখানে তাঁরা তুলে ধরেন, এমন বিরল ও ব্যতিক্রমী অনুসন্ধানে, খুব প্রয়োজনে, নৈতিকতা মেনে ও কার্যকর উপায়ে – অবৈধ ডেটার বাজার এবং ব্যক্তিগত তথ্যে অনুপ্রবেশের টুল কিভাবে ব্যবহার করতে হয়। ওয়েবিনারে তাদের সঙ্গে যোগ দেন ব্রিটেনের চ্যানেল ফোর পাবলিক সার্ভিস টেলিভিশন নেটওয়ার্কের সম্পাদক ও ইথিক্যাল জার্নালিজম নেটওয়ার্কের ট্রাস্টি, ডরোথি বার্ন। তিনি ব্যাখ্যা করেন, কিভাবে নিউজরুমগুলো তাদের সম্ভাব্য অনুসন্ধানী টুল যাচাই করে নেবে নৈতিকতার কষ্টিপাথরে।
এই ওয়েবিনারে ৬৪টি দেশের ৩১৯ জন সাংবাদিক যোগ দেন দর্শক হিসেবে। এখান থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে শিক্ষাটি তারা নিয়ে গেছেন, তা হলো: নাভালনি-অনুসন্ধান কার্যত গড়ে উঠেছে কিছু সাধারণ যৌক্তিক অনুমান, অতীতের রাসায়নিক অস্ত্রপ্রয়োগ নিয়ে তদন্ত এবং চিরায়ত কিছু অনুসন্ধানী প্রশ্নের ওপর ভিত্তি করে।
দোব্রোখোতোভ ও গ্রোজেভ যেসব প্রশ্নকে ঘিরে ডেটার সন্ধান করেছিলেন, তার মধ্যে আছে: বিষপ্রয়োগের সপ্তাহে নাভালনি যেভাবে মস্কো থেকে নোভোসিবির্স্ক শহরে যাওয়ার টিকিট কেটেছিলেন, সেভাবে কি অন্য কোনো যাত্রীও টিকিট কেটেছেন? এসব যাত্রীদের মধ্যে কারা একসঙ্গে ভ্রমন করেছেন? তাদের কারো মধ্যে কি ভুয়া পরিচয় ব্যবহারের বৈশিষ্ট্য পাওয়া গেছে, যেমন পাসপোর্টের ডেটা না থাকা? যাত্রীদের মধ্যে কারা তোমস্ক শহর (এখানেই নাভালনির ওপর হামলা হয়েছিল) পর্যন্ত গেছেন? কাদেরকে তারা ফোন করেছিলেন? এবং ওপাশ থেকে যারা ফোনের জবাব দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে কেউ কী রাশিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র প্রকল্পের সঙ্গে সংযুক্ত?
এখানে অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ ও যাচাইয়ের কাজটি করা গেছে ওপেন সোর্স টুল ও সোশ্যাল মিডিয়া সার্চের মাধ্যমে। কিন্তু কিছু ডেটাসেট (যেমন, যাত্রী তালিকা ও টেলিফোন বিল রেকর্ড) সংগ্রহ করতে হয়েছে রাশিয়ার অবৈধ ডেটা মার্কেট থেকে।
“কিছু ডেটাবেজ সবার জন্য উন্মুক্ত নয়। বরং চোরাই ডেটার বাজার থেকে এগুলো অনেক সহজে পাওয়া যায়,” বলেছেন দোব্রোখোতোভ।
এই অনুসন্ধানে পাওয়া ডেটাসেট রাশিয়ার হলেও দোব্রোখোতোভ বলেছেন, অন্যান্য দমনমূলক রাষ্ট্রেও, অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা চাইলে এভাবে ডেটা প্রাপ্তির সুযোগ নিতে পারেন। কারণ কর্তৃত্বপরায়ন সরকারগুলো প্রায় সব ক্ষেত্রেই দুর্নীতিপরায়ন আমলাতন্ত্র তৈরি করে। এবং এই পরিবেশে অনেক ডেটা ফাঁস হয়ে যায়, যা শেষপর্যন্ত ওই সরকারেরই অপরাধ উন্মোচন করে।
গ্রোজেভ আরো যোগ করেন এই বলে যে, “রোমান [দোব্রোখোতোভ] সব সময়ই বলেন, রাশিয়া আসলে সবচে স্বচ্ছ দেশগুলোর একটি। কারণ এখানে আপনি সহজেই এবং কম টাকায় অনেক ডেটা কিনতে পারবেন, যা এই ধরনের বাজারের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য।”
দোব্রোখোতোভ বলেছেন, নোভিচক নার্ভ এজেন্ট ব্যবহার নিয়ে করা আগের অনুসন্ধানগুলো থেকেও তথ্য ও শিক্ষা নিয়েছে দ্য ইনসাইডার। এদের মধ্যে ২০১৮ সালে যুক্তরাজ্যে, রুশ সামরিক কর্মকর্তা সের্গেই স্ক্রিপাল ও তার মেয়ে, ইউলিয়াকে বিষপ্রয়োগের ঘটনাও ছিল।
“এখান থেকেই আমরা জেনেছিলাম কিভাবে রুশ ডেটাবেজ ব্যবহার করে এসব গুপ্তচরদের সনাক্ত করতে হবে, এবং বুঝতে পেরেছিলাম কোন পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে,” বলেন দোব্রোখোতোভ। “২০২০ সালের আগস্টে… আমরা ভেবেছিলাম: যারা নাভালনিকে বিষপ্রয়োগে হত্যার চেষ্টা করেছিল, তাদের জন্য নোভিচক উৎপাদনও করেছে হয়তো একই প্রতিষ্ঠান। হয়তো এটি জিআরইউ (রাশিয়ার সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা)-এর জন্য নয়, বরং বানানো হয়েছে এফএসবি (রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থা)-র জন্য। এ সময়েই আমরা ফোন কল ডেটা ও মেটাডেটার খোঁজ করতে শুরু করি। মেটাডেটাগুলো রাশিয়ার অপারেটররা সংগ্রহ করে। এর মাধ্যমে আপনি শুধু মানুষটি কার সঙ্গে কথা বলছে, সেটিই দেখতে পাবেন না; একই সঙ্গে দেখতে পাবেন তারা কোথায় আছে।”
দোব্রোখোতোভ জানান, তাদের শেষ সূত্রটি মিলে যায় যখন নাভালনি নিজেই এক এফএসবি কর্মকর্তাকে ফোন করে, তার কাছ থেকে কৌশলে ৪০ মিনিটের একটি স্বীকারোক্তি আদায় করে নেন। এই কল থেকে নতুন একটি তথ্যও পাওয়া যায়: তারা বিষটি প্রয়োগ করেছিলেন নাভালনির অন্তর্বাসে, এই ভেবে যে পরিধেয় এই কাপড়টিই নাভালনির স্পর্শ করার সম্ভাবনা বেশি।
বেলিংক্যাটের গ্রোজেভ এর আগে অনুসন্ধান করেছিলেন স্ক্রিপালকে বিষপ্রয়োগ ও ২০১৪ সালে মালয়েশিয়ান বিমান ভূপাতিত করার ঘটনা নিয়ে। তিনি খুবই দরকারী একটি কথা স্মরণ করিয়ে দেন: রিপোর্টাররা পেশাদার গুপ্তচরদেরও সনাক্ত করে ফেলতে পারেন; কারণ, সাধারণ মানুষ যেসব ভুল করে, তারাও একই ধরনের ভুল করেন।
যেমন, তারা অলস হতে পারেন। গ্রোজেভ জানান, বেশ কিছু ছদ্মবেশী গুপ্তচর নিয়মিতভাবে তাদের গাড়ি পার্কিং করতেন মস্কোর এফএসবি সদরদপ্তরের কাছে। কেউ কেউ তাদের ব্যক্তিগত গাড়ি নিবন্ধনও করিয়েছেন সংস্থাটির ঠিকানা দিয়ে।
আবার, তারা অসতর্কও হতে পারেন। কখনো কখনো গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের ছদ্মবেশ হিসেবে যে পরিচয়পত্র দেওয়া হয়, সেখানে জন্মতারিখটি অস্বাভাবিক হতে পারে, অথবা এমন ধারাবাহিক নম্বরে পাসপোর্স দেওয়া হয় যে, শেষ অংকটি থেকে একই ইউনিটের অন্য গুপ্তচরদেরও সনাক্ত করে ফেলা যায়।
এবং তাদেরকে ধোঁকাও দেওয়া যেতে পারে। যেমনটি দেওয়া হয়েছিল সেই কর্মকর্তাকে, যিনি ফোনে নিজের ভূমিকার কথা স্বীকার করেছিলেন।
ওপেন সোর্স এবং ওপেন সোর্স নয়, এমন অনেক অনুসন্ধানী কৌশলের জন্য সোনার খনি হয়ে থাকবে এই সাংবাদিকদের ব্যবহার করা টুলকিট। প্রথমে, জেনে নেওয়া যাক সেসব ওপেন সোর্স টুলের কথা যেগুলো বেলিংক্যাটের গ্রোজেভ ব্যবহার করেছেন নাভালনি-অনুসন্ধানে।
যেসব ওপেন সোর্স টুল ব্যবহার হয়েছে
- টেলিগ্রাম বা অন্যান্য স্মার্টফোন অ্যাপে রিভার্স ফোন-সার্চ বট। গেটকন্ট্যাক্ট, ট্রুকলার, ও স্মার্টসার্চ; এই বটগুলো ব্যবহারকারীর নির্দেশনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট কিছু কাজ করতে পারে। গ্রোজেভ বলেছেন, “এসবের মাধ্যমে আপনি একটি ফোন নম্বরের সাহায্যে সেই ব্যক্তি সম্পর্কে আরো তথ্য জানতে পারেন। অ্যাপগুলো সাধারণত নম্বর শেয়ারের নীতিতে কাজ শুরু করে দেয়। যদি আপনি এক্স অ্যাপটি আপনার ফোনে ডাউনলোড করেন, তাহলে এটি আপনার কন্টাক্টস-এ থাকা সব নম্বর যেভাবে বর্ণনা করা আছে, সেভাবেই সেই অ্যাপ ডেটাবেজে চলে যাবে। ফলে কখনো কখনো কোনো নম্বরের সঙ্গে নাম দেখা যায় ‘মা’, যা খুব বেশি উপকারী কিছু হয় না। আবার কখনো কখনো “এফএসবি-র নাইট ডিপার্টমেন্টের ইয়েভেনি’- এ ধরনের নির্দিষ্ট মানুষের খোঁজও পাওয়া যায়।”
- ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটার জন্য রিভার্স ফোন-সার্চ। এই কাজের জন্য আছে আইজঅবগড ও কুইকওসিন্টবট। গ্রোজেভ বলেছেন, “এই টেলিগ্রাম বটগুলো আরো বাড়তি কিছু তথ্য দিতে পারে। হয়তো ঠিকানা বা আরো বেশি কিছু।”
- পরিচয় জানার “চেষ্টা করা যায়” এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে। ভাইবার, টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ ও স্কাইপ; এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে আপনি নিজের ভাগ্য যাচাই করে দেখতে পারেন। যেমন, উদাহরণ হিসেবে, আপনি যদি স্কাইপের সার্চ বারে একটি নম্বর লেখেন, এবং সেই নম্বরটি যদি স্কাইপের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে, তাহলে হয়তো আপনি সেই ব্যক্তির নাম পেয়ে যাবেন। এভাবে হোয়াটসঅ্যাপে সার্চ দিয়ে নামের পাশাপাশি একটি ছবিও পেয়ে যেতে পারেন। ছবিটি দিয়ে তখন আপনি চালাতে পারবেন ফেস সার্চ।” এভাবে ফোন নম্বর নিয়ে গবেষণা চালিয়ে সত্যিই এক ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল, যিনি “এফএসবি-র সদস্য ছিলেন।”
- রিভার্স ভেহিকেল-সার্চ বট। এর মধ্যে আছে এভিইনফোবট, স্মার্টসার্চ, আইজঅবগড, ও কুইকওসিন্টবট। এগুলোর মাধ্যমে আপনি ওনারশিপ ডেটা, কার পার্কিং ডেটা ও ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের ইতিহাস সংক্রান্ত ডেটা পেতে পারেন। গ্রোজেভ বলেছেন, “কোনো ব্যক্তির চলাফেরা সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার জন্য এগুলো খুব উপকারী। এখান থেকে দেখা যায়, তারা কোনো গুপ্ত সংস্থার সঙ্গে সংযুক্ত কিনা এবং হলে কোন সংস্থা। এভাবেই বেলিংক্যাট দেখেছিল নোভিচক নার্ভ এজেন্ট প্রস্তুতকারী ল্যাবের প্রধান বিজ্ঞানীর সঙ্গে নিয়মিত কথা বলা এক ব্যক্তির গাড়ি নিবন্ধন করা আছে এফএসবি সদর দপ্তরের ঠিকানায়। এসব টুল ব্যবহার করে বেলিংক্যাট আরো আবিস্কার করেছিল: সন্দেহের তালিকায় থাকা এক ব্যক্তির ৪২টি গাড়ি পার্কিং রেকর্ড। এবং সেগুলো জিওলোকেট করে দেখা গিয়েছিল বেশ কয়েকবার গাড়ি পার্কিং করা হয়েছে এফএসবি দপ্তর থেকে মাত্র কয়েক ব্লক দূরত্বে।
- চেহারা সনাক্ত ও তুলনা করার টুল। “মাইক্রোসফটের আজুর টুলটি খুব নির্ভরযোগ্য” বলে প্রশংসা করেছেন গ্রোজেভ। তিনি জানিয়েছেন, এফএসবি-র এক কর্মকর্তার সত্যিকারের পরিচয় খুঁজে বের করার জন্য এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা হয়েছিল। এফএসবি-র সেই কর্মকর্তা একটি ভুয়া পাসপোর্ট ও পরিচয় নিয়ে কাজ করছিলেন। কিন্তু অ্যাপের মাধ্যমে দেখা যায়: তার চেহারার অনেক মিল পাওয়া যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায় এক নারীর অ্যাকাউন্টে পাওয়া এক ব্যক্তির ছবির সঙ্গে। সেই নারী আবার তার স্ত্রী-ও বটে। সোশ্যাল মিডিয়ার ছবিতে সেই ব্যক্তিকে দেখা যায় একটি সমুদ্রসৈকতে। তার মাথার চারপাশে একটি বড়, হলুদ, ভাসমান খেলনা বসানো আছে। এই ঘটনার খুব স্পষ্ট মিল পাওয়া যায় গল্প-সিনেমার জেমস বন্ড চরিত্রের সঙ্গে, যে গুপ্তচরের হত্যার লাইসেন্স আছে।
- মাস্ক পরা মুখ সনাক্তের বিকল্প কৌশল। গ্রোজেভ বলেন, নাভালনিকে যেখানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল সেখানকার এক ছবিতে মাস্ক পরা এক ব্যক্তিকে দেখে সন্দেহ হয় বেলিংক্যাট দলের। তাদের মনে হয়েছিল: সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পাওয়া এক ব্যক্তির সঙ্গে এই মাস্ক পরা ব্যক্তির মিল আছে। হয়তো দুজনেই একই ব্যক্তি। তারা ধন্দে পড়ে যান, বিষয়টি নিশ্চিত হবেন কী করে যে, মাস্কের নিচে থাকা মানুষটিই সেই ব্যক্তি। গ্রোজেভ বলেন, “আমাদের সেই ব্যক্তির মুখের নিচের অংশের সঙ্গে অন্য মানুষদের মুখ জুড়ে দিয়ে দেখতে হতো। মজা করার জন্য আমরা সেই ব্যক্তির মুখের নিচের অংশের সঙ্গে অনেকের মুখ বসিয়ে দেখেছি। যেমন, আমরা সেখানে ব্রিটিশ সাংবাদিক, গ্রাহাম ফিলিপসের মুখও বসিয়েছিলাম। আমরা জানতাম যে, এভাবে কখনোই আমরা শতভাগ মিল পাব না। কিন্তু আমরা শেষপর্যন্ত এখানে ৫৭ শতাংশ মিল পেয়েছিলাম। যেটি মাইক্রোসফটের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, মিল বোঝার জন্য পর্যাপ্ত।” তবে, এও মাথায় রাখুন যে, মাইক্রোসফটের এই হিসেব কোনো কিছু নিশ্চিত করে বলার জন্য পর্যাপ্ত নয়। এখান থেকে রিপোর্টার তার অনুমান সম্পর্কে আত্মবিশ্বাস পেতে পারেন, যা তাকে অনুসন্ধান চালিয়ে যাওয়ার প্রেরণা জোগাবে।
- রিভার্স ফেস সার্চ। এই কাজের জন্য আছে ফাইন্ডক্লোন, সার্চ৪ফেস, পিমআইজ, ইয়ানডেক্স, ও স্মার্টসার্চবট। গ্রিজোভ জানিয়েছেন: এ ধরনের একটি রিভার্স ফেস সার্চ ইঞ্জিন দিয়েই তারা চিকিৎসা পেশার সঙ্গে জড়িত এক ব্যক্তির সন্ধান পেয়েছিলেন। ফেসবুকে সেই মানুষটির ছবি পাওয়া গিয়েছিল স্টেথোস্কোপ ঝুলানো অবস্থায়। এই সূত্র থেকে চিকিৎসা পেশার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের মাঝেও খোঁজ শুরু করে বেলিংক্যাট। এবং তারা এমন আরো তিনজনের খোঁজ পেয়েছিলেন।
- ইয়ানডেক্স ও গুগল সার্চ কৌশল। “সাধারণ এসব সার্চ ইঞ্জিন থেকেও মাঝেমধ্যে অনেক বেশি তথ্য পাওয়া যায়,” বলেন গ্রোজেভ। অন্যান্য ব্যবহারকারীরা কী লিখে সার্চ করে, তা অনুমান করে ইয়ানডেক্সের অটো ফিল ফাংশন। ফলে সেখানে এমন অনেক সার্চ সাজেশন দেখায়, যে সম্পর্কে কোনো তথ্য হয়তো আসলে নেই। বেলিংক্যাট এ ধরনের সার্চ প্রবণতা দেখে বুঝতে পেরেছে, এফএসবি-র কর্মকর্তা বলে এক ব্যক্তিকে সন্দেহ করে আরো অনেকে।
- ফাঁস হওয়া ভ্রমণ-ডেটাবেজ। “আমরা এটিকে ওপেন সোর্স হিসেবেই বিবেচনা করি। কারণ আমরা এসব তথ্য ডাউনলোড করেছি আগেই ফাঁস হয়ে যাওয়া ফাইল থেকে। এবং এগুলো আমাদের সেভাবে কিনতেও হয়নি,” বলেছেন গ্রোজেভ।
- ফাঁস হওয়া ব্যক্তি-ডেটাবেজ। এর মধ্যে আছে ক্রোনোস ও ল্যারিক্স। গ্রোজেভ জানান, “রাশিয়া, ইউক্রেন ও পূর্ব ইউরোপের অনেক দেশে, অনেক ধরনের টুল আছে যা দিয়ে মানুষের অতীত সম্পর্কিত ডেটা দেখা যায়। যেমন বাড়ির ঠিকানা, পুরোনো পাসপোর্ট ও আরো নানা কিছু।”
রাশিয়ার ডেটা বাজার থেকে কেনা তথ্য
রাশিয়ার ডেটা মার্কেট থেকে অল্প টাকায় কেনা কিছু ব্যক্তিগত তথ্যের রেকর্ডও এই অনুসন্ধানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে জানিয়েছেন গ্রোজেভ। সেগুলোর মধ্যে ছিল:
- টেলিফোন লগ ও বিলের রেকর্ড।
- বিমান ও ট্রেনের যাত্রী তালিকা। গ্রোজেভ বলেন, “রাশিয়ায়, আপনি চাইলে এসব যাত্রী তালিকা সংগ্রহ করতে পারেন ডেটা ব্রোকারদের কাছ থেকে। আপনাকে প্রথমে একজন নির্দিষ্ট যাত্রী চিহ্নিত করতে হবে। তারপর দেখতে হবে কোনো সাধারণ ছক বোঝা যায় কিনা।” নাভালনির বিমানযাত্রাগুলোর সঙ্গে মিলে যায়, এমন আরো কিছু বিমানযাত্রাকে সন্দেহ হয়েছিল বেলিংক্যাটের। সেসব যাত্রীরা কোন সময় টিকিটি কেটেছিলেন, সেটিও লক্ষ্য করেছেন বেলিংক্যাটের অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা। গ্রোজেভ ব্যাখ্যা করে বলেন, “আমরা দেখতে পাই, প্রথম সন্দেহভাজন ব্যক্তিটি যে সময়ে টিকিট কাটেন, ঠিক সেই সময়ে আরো দুজন টিকিট কেটেছেন। যাত্রার আগের দিন, দুপুর ২টা ৩৪ মিনিটে। আমরা সেই দুই ব্যক্তির দিকে ভালোমতো নজর দেই, এবং দেখি, তাদের পরিচয়পত্র নকল। কোনো পাসপোর্ট ডেটাবেজেই এই দুই নাম পাওয়া যায়নি। তাদের জন্মতারিখও ছিল সন্দেহজনক।”
- ভ্রমন ও টিকিট সংক্রান্ত অতীত তথ্য। এই কাজের জন্য আছে একটি রাশিয়ান ডেটাবেজ, ম্যাজিস্ট্রাল। “এখান থেকে আপনি পেতে পারেন টিকিটের ওপর ভিত্তি করে কোনো ব্যক্তির যাবতীয় ভ্রমণ ডেটা। এসব তথ্য আসে পুলিশের ভেতরে কাজ করা কোনো হুইসেলব্লোয়ারের মাধ্যমে, অথবা রাশিয়ার ডেটা ব্রোকারদের মাধ্যমে,” বলেছেন গ্রোজেভ। এই ডেটা থেকে তারা দেখেছেন: গোয়েন্দা সংস্থার এক ছদ্মবেশী ব্যক্তি “ফ্রোলোভ” নাম ধারণ করে এমনভাবে নোভোসিবির্স্কে যাওয়ার টিকিট কেটেছেন, যেন নাভালনির বিমান সেখানে পৌঁছানোর ঘন্টাখানেক আগেই তিনি উপস্থিত হতে পারেন। পরবর্তীতে তিনি তোমস্ক সেখান থেকে মস্কোতে ফেরার টিকিট কাটেন। বিষপ্রয়োগের পরদিন এই শহরেই যাওয়ার কথা ছিল নাভালনির।
- পাসপোর্ট ডেটা। “রাশিয়ার প্রত্যেক নাগরিকের একটি পাসপোর্ট ফাইল থাকে। সেখানে শুধু তাদের বর্তমান ছবি, ঠিকানা ও রেজিস্ট্রেশনই নয়, বরং পুরনো পাসপোর্টেরও সব ডেটা সংরক্ষিত থাকে,” বলেন গ্রোজেভ।
“কোন বিমান টিকিট কাটা হয়েছে, শুধু সেগুলো নয়; বরং কোন টিকিট কাটা হয়নি, তা বিশ্লেষণ করেও আপনি একটি ভালো হাইপোথিসিস তৈরি করতে পারবেন যে, এই ধরনের গোপন কর্মকাণ্ড পরিকল্পনার সময় কী ঘটে,” বলেন গ্রোজেভ।
নৈতিক বিবেচনা
নাভালনিকে নিয়ে এই প্রতিবেদনের বিস্তার ও প্রভাব নিঃসন্দেহে অনেক বেশি। কিন্তু রাশিয়ার কালোবাজার থেকে ব্যক্তিগত ডেটা কেনার নৈতিকতা নিয়ে উঠেছে অনেক প্রশ্ন। গণমাধ্যমে নৈতিকতা নিয়ে বেশ কিছু বই লিখেছেন ইথিক্যাল জার্নালিজম নেটওয়ার্কের ডরোথি বার্ন। তিনি বলেছেন, বিতর্কিত পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহের ব্যাপারে নৈতিক দিক-নির্দেশনা প্রস্তুত করা উচিৎ সংবাদমাধ্যমগুলোর, ঠিক যে ধরনের লিখিত প্রোটোকল তারা তৈরি করেছে শত্রুভাবাপন্ন পরিবেশে রিপোর্টিংয়ের জন্য।
বার্ন বলেছেন, “আমার মতে, এখন যে ধরনের দুর্দান্ত ও উদ্ভাবনী সব পদ্ধতি বেরিয়েছে, তাতে সাংবাদিক হিসেবে আমাদের খুব গুরুত্ব দিয়ে চিন্তা করা উচিৎ এসবের নৈতিক দ্বন্দ্ব নিয়ে।”
প্রতিবেদনের স্বার্থে যদি এমন কোনো কাজ করতে হয়, যা কোনো দেশের আইনকানুন ভঙ্গ করবে বা ব্যক্তিগত প্রাইভেসি লঙ্ঘন করবে; তাহলে সাংবাদিকদের এই নিচের প্রশ্নগুলো বিবেচনা করা উচিৎ বলে সতর্ক করেছেন বার্ন:
- প্রতিবেদনটিতে কী জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় আছে?
- প্রতিবেদনটির কি সত্যিকারের গুরুত্ব আছে?
- তথ্যটি পাওয়ার কি অন্য আর কোনো উপায় আছে?
- আমি কি সবাইকে ঝুঁকির মুখে ফেলছি? (যদি তাই হয়, তাহলে কী আমি তাদের সম্ভাব্য আইনি খরচ বহন করার জন্য, বা তাদেরকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত?)
- কোনো অপরাধীকে অর্থ প্রদান করে, আমি কি অপরাধকে উৎসাহিত করছি? এবং এই অর্থ দিয়ে অপরাধীরা কী করবে?
- আমার সঙ্গে কাজ করছে এমন কেউ – বিশেষভাবে কোনো তরুণ সাংবাদিক – কি চাপের মুখে পড়ে কোনো সাধারণ নিয়ম বা আইন ভাঙছে? “আমাদের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে যে অনেক তরুন সাংবাদিকই চায় নিজের নাম প্রচার করতে। এবং এজন্য তারা এমন কিছু করে বসে যা আসলে তাদের করা উচিৎ ছিল না,” বলেছেন বার্ন।
- আমরা কিভাবে তথ্য পেয়েছি, সে ব্যাপারে আমরা কতটা স্বচ্ছ থাকব?
বার্ন বলেছেন, “নাভালনিকে বিষপ্রয়োগ ও হত্যাচেষ্টার এই কেসটি অবশ্যই প্রথম দুটি পয়েন্টের (জনস্বার্থ ও গুরুত্ব) নিশ্চিত জবাব দেয়। চোরাই তথ্যের বাজার থেকে তথ্য সংগ্রহের মতো উদ্যোগ গ্রহণের আগে আমাদের অবশ্যই বিবেচনা করা উচিৎ যে, এধরনের অবৈধ পদ্ধতির কথা তখনই চিন্তা করা যুক্তিযুক্ত হবে, যখন প্রতিবেদনটি সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। এমন কিছুর জন্য এটির ব্যবহার করা যাবে না যা শুধু আমাদের বিখ্যাত বানাবে। যেমন, ব্রিটিশ রাজ পরিবার সম্পর্কে নিছক কিছু তথ্য জানার জন্য এটির ব্যবহার যুক্তিযুক্ত হবে না।”
চোরাই ডেটার বাজারে কী পরিমাণ অর্থ খরচ করতে হয়েছে, সেটিও নৈতিক বিচারে ফারাক গড়ে দিতে পারে। যেমন, অপরাধীকে “বেশ বড় অঙ্কের অর্থ” দেওয়া হলে তা দিয়ে আরো অপরাধ করার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
নাভালনির কেসে যে ডেটাগুলো কেনা হয়েছে, তার খরচ খুবই কম ছিল বলে জানিয়েছেন গ্রোজেভ। অনলাইনে কিছু ডেটাসেটের খরচ ছিল মাত্র ১২ ডলার। গ্রোজেভ খুব জোর দিয়ে বলেছেন যে, বেলিংক্যাট এ ধরনের চোরাই ডেটা কেনার কথা তখনই বিবেচনা করে, যখন রাষ্ট্রীয় কর্তাব্যক্তিরা বড় বড় অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকেন। নিরাপত্তা সংস্থা নিয়ে অনুসন্ধানের ক্ষেত্রেও এটি খুব দরকারী, কারণ তারা নিজেদের পদচিহ্ন মুছে ফেলায় বিশেষজ্ঞ।
গ্রোজেভ বলেন, আরেকটি ভালো দিক ছিল দ্য ইনসাইডার ও ডের স্পিগেলের মতো সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে জোট বেঁধে কাজ করা। এতে “এমন সব ধরনের কঠিন সিদ্ধান্ত সবার সম্মতির ভিত্তিতে নেওয়া গেছে,” বলেন তিনি।
গ্রোজেভ ব্যাখ্যা করে বলেন, “এর মানে, এমন পরিস্থিতিতে উচ্চ নৈতিকতা সম্পন্ন একটি সংবাদমাধ্যম যে কোনো সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ভেটো দিতে পারে।”
তবে নিছক অনুমানের ওপর নির্ভর করে চোরাই বাজারের ডেটা ব্যবহার করা উচিৎ নয় বলে সতর্ক করেছেন গ্রোজেভ। ওপেন সোর্স বা প্রথাগত রিপোর্টিং থেকে যদি শক্ত প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলেই কেবল এটি ব্যবহার করা উচিৎ।
অন্যদিকে, ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহারের ফলে গুপ্তচরদের ব্যবহার করা ভুয়া পরিচয়গুলোর প্রাইভেসি লঙ্ঘন হচ্ছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাব নৈতিক ও আইনিভাবে সাদামাটা বলে মনে করেন গ্রোজেভ। কারণ: “তারা আসলে ভুয়া ব্যক্তি!”
আরো পড়ুন
ভিজ্যুয়াল ফরেনসিক: ছবি ব্যবচ্ছেদ করে যেভাবে নিরাপত্তা বাহিনীর হামলা উদঘাটন করছেন রিপোর্টাররা
রাশিয়ার রোমান আনিন তার অনুসন্ধানে যেসব টুল ব্যবহার করেন
নাভালনির অনুসন্ধানী দল থেকে সাংবাদিকদের যা শেখার আছে
রোয়ান ফিলিপ জিআইজেএন-এর রিপোর্টার। দক্ষিণ আফ্রিকার সানডে টাইমসে কাজ করেছেন প্রধান প্রতিবেদক হিসেবে। বিদেশ প্রতিনিধি হিসেবে রাজনীতি, দুর্নীতি ও সংঘাত নিয়ে রিপোর্ট করেছেন বিশ্বের দুই ডজনেরও বেশি দেশ থেকে।