অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা তাদের কাজে কী ধরণের টুল ব্যবহার করেন? জিআইজেএন এই প্রশ্ন রেখেছিল অভিজ্ঞ সাংবাদিকদের কাছে। দর্শকদের জন্য তাদের প্রিয় সেই টুলগুলোর খবর আমরা তুলে ধরছি এই সিরিজে।
এসপ্তাহে আমরা কথা বলেছি ম্যালাকি ব্রাউনের সঙ্গে। তিনি দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর ভিজ্যুয়াল অনুসন্ধান দলের সিনিয়র স্টোরি প্রোডিউসার।
স্টোরিফুল ও রিপোর্টেডলি-তে কাজ করার সময়, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট থেকে খবরের উপাদান সংগ্রহ ও যাচাইয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠেন আইরিশ বংশোদ্ভুত ব্রাউন। নিজের সব দক্ষতা নিয়ে ২০১৬ সালে তিনি যোগ দেন নিউ ইয়র্ক টাইমসে। আর ক্রমেই হয়ে ওঠেন ভিজ্যুয়াল অনুসন্ধান জগতের অগ্রপথিক। সাংবাদিকতার এই ধারায়, প্রথাগত রিপোর্টিংয়ের সঙ্গে মেলবন্ধন ঘটে ডিজিটাল অনুসন্ধানের। এখানে হরহামেশাই কোনো না কোনো অপরাধ দৃশ্য পুনঃনির্মান করা হয় থ্রিডি মডেলিং, স্যাটেলাইট চিত্র ও মোবাইল ফোনে ধারণ করা ছবি দিয়ে।
ব্রাউন বেশ কয়েকটি পুরস্কারজয়ী অনুসন্ধানে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এদের মধ্যে আছে ইস্তাম্বুলের সৌদি দূতাবাসে সাংবাদিক জামাল খাসোগির হত্যাকাণ্ড, সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলা এবং গাজায় এক তরুন চিকিৎসককে গুলি করে হত্যা।
সেই ব্রাউনের কিছু প্রিয় টুলসের কথা থাকছে, এখানে।
স্যাটেলাইট ইমেজ
“আমরা যেসব প্রতিবেদন নিয়ে কাজ করি, তার প্রায় প্রতিটিতেই স্যাটেলাইট ইমেজ ব্যবহার করি। এর মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠে ঘটে যাওয়া খুঁটিনাটি পরিবর্তনও খুব ভালোমতো ধরা পড়ে। আরো কিছু সুবিধা আছে। যেমন, কোনো ভবনে বিমান হামলা হলে আমরা ২৪ ঘন্টার মধ্যে তা নিশ্চিত হতে পারি, স্যাটেলাইট ইমেজ দেখে।
“একটা উদাহরণ দিই: ডাটামাইনার আমাদের জানিয়েছিল, লিবিয়ায় একটি অভিবাসী বন্দী শিবিরে বিমান হামলা হয়েছে। টুইটারে এই ঘটনার টুকরো টুকরো খবর আসছিল; লিবিয়ার গণমাধ্যমও সেখান থেকে কিছু ভাষ্য তুলে ধরছিল। কিন্তু ছবি পাওয়া যাচ্ছিল খুবই কম। তখনই আমরা ফেসবুকে একটি লাইভ ভিডিও দেখতে পাই। লাইভ করছিল, বন্দীশিবিরটি পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত একটি সংগঠন। হামলার খবর সত্যি হবার আশঙ্কা মূলত তখন থেকেই সঠিক বলে মনে হতে থাকে।”
এবার আমরা খুঁজতে শুরু করি – বন্দীশিবিরের ভেতরে ঠিক কোন জায়গাটায় হামলা হয়েছে। দেখতে শুরু করি, তাজোরা নামের সেই বন্দীশিবিরের পুরোনো কিছু ভিডিও। এই নামে খুব বেশি জায়গা নেই। তাই অল্প সময়ের মধ্যে, এই শিবিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের একটি পুরোনো ভিডিও পেয়ে যাই। নিশ্চিত হই, এটি সেই জায়গা যার বিভিন্ন অংশ (হামলার পরের) ছবিতে দেখা যাচ্ছে ছিন্নভিন্ন অবস্থায়। পুরোনো ভিডিওটিতে বন্দীশিবিরটি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখানো হয়েছিল। ফলে, আমরা হামলার শিকার হওয়া নির্দিষ্ট দালানটি চিহ্নিত করতে পারি। এরপর আমরা একটি স্যাটেলাইট ইমেজারি কোম্পানির সঙ্গে কথা বলি এবং তাদের কাছ থেকে সাম্প্রতিক স্যাটেলাইট ছবি সংগ্রহ করি।
“কাজটা করতে গিয়ে, হামলার রাতে পোস্ট করা আরো কিছু ভিডিও আমরা বিশ্লেষণ করি। তাতে কিছু অভিবাসীরও বক্তব্য ছিল। আমরা সেগুলো অনুবাদ করি। কিছু প্রত্যক্ষদর্শী বলছিলেন: অস্ত্রাগারে বসে, অন্যান্য দিনের মতো অস্ত্র পরিস্কার করছিলেন তারা। ঠিক সেই সময় বিমান হামলা চালানো হয় অস্ত্রাগারটিতে। তারা সেখান থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেন অভিবাসীদের থাকার জায়গায়। নিশ্চিত হতে, আমরা আরো কিছু প্রত্যক্ষদর্শী, এবং অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা ফ্রিল্যান্স সাংবাদিকদের খুঁজে বের করি। এরপর হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা আমাদেরকে অস্ত্রাগারে কাজ করার কিছু ছবি পাঠান, যেখানে ঘটনার দিন তারা আটকা পড়েছিলেন। অস্ত্রাগারটি যে মিলিশিয়া বাহিনী চালাতো, তারা জোর করে তাদেরকে দিয়ে কাজ করাচ্ছিল। গৃহযুদ্ধের মধ্যে এমন একটি জায়গা হামলার বৈধ লক্ষ্যবস্তু। আর স্যাটেলাইট চিত্র থেকে আমরা দেখতে পাই, ঠিক সেখানেই হামলা চালানো হয়েছে। এভাবেই আমরা গল্পের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হই।”
“টেরাসার্ভার বা প্ল্যানেট ল্যাবস-এর মতো বেশ কিছু স্যাটেলাইট ইমেজারি টুল নিয়ে আমরা কাজ করি। তারা প্রায় প্রতিদিন, পৃথিবীর প্রায় সব জায়গার স্যাটেলাইট ছবি দিয়ে থাকে। সব সময় যে ছবির মান খুব ভালো হয়, তা নয়। কিন্তু কখনো কখনো খুব ভালো মানের ছবি পাওয়া যায়। আপনি এখানে ছবি খুঁজতে পারবেন। ম্যাক্সার ডিজিটালগ্লোব থেকে পাওয়া যায় সবচেয়ে ভালো রেজুল্যুশনের ছবি। এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে খরচও খুব বেশি না। যেসব নিউজরুম স্যাটেলাইট ইমেজ ব্যবহারের চিন্তা করছে, তাদের জন্য এটা ভালো খবর।
ড্রোন + থ্রিডি মডেল
“গত বছর আমরা একটা পরীক্ষামূলক কাজ করি। সেটি ছিল: গাজায় বিক্ষোভ-প্রতিবাদের ঘটনাস্থল থ্রিডিতে পুনঃনির্মান। আমরা অনুসন্ধান করছিলাম, একজন চিকিৎসককে গুলি করে হত্যার ঘটনা নিয়ে। তিনি সেদিন ঘটনাস্থলে কাজ করছিলেন। বিক্ষোভের ভিডিও দেখলে বুঝতে পারবেন, পরিস্থিতি কতটা বিশৃঙ্খল ছিল। এরই মধ্যে তিনি গুলিবিদ্ধ হন, মারা যান। আমাদের সামনে প্রশ্ন: সেই মুহূর্তটাকে থামিয়ে দিয়ে পরীক্ষা করা সম্ভব, সত্যিই কী ঘটেছিল? সেখানে কারা ছিল? বিক্ষোভকারীরা কোথায় ছিল? সেই চিকিৎসক কোথায় ছিলেন? সৈন্যরা কোথায় ছিল? সেই গুলিটা কেন করা হয়েছিল, আর কিভাবে সেটা তার গায়ে এসে লাগল? তাকেই কি সরাসরি লক্ষ্য বানানো হয়েছিল?
আমরা সাধারণত যেভাবে প্রমাণ সংগ্রহ করি, সেভাবেই, সেদিনের যতগুলো সম্ভব ভিডিও ও ছবি সংগ্রহ করতে থাকি। এভাবে ঘটনাস্থলে ধারণ করা ১৩০০ ছবি ও ভিডিও আমরা জড়ো করি। তারপর মেটাডেটা ধরে আমরা ছবিগুলো সাজিয়ে ফেলি।
এরপর, আমরা সেই জায়গায় গিয়ে হাই-ডেফিনিশন ড্রোন দিয়ে পুরো এলাকা ভিডিও করি। ফটোগ্রামেট্রি (ছবি দিয়ে মানচিত্র তৈরি) প্রযুক্তি ব্যবহার করে, এই ফুটেজ দিয়ে থ্রিডি মডেল বানাই। ফটোগ্রামেট্রির জন্য আমরা ব্যবহার করেছি রিয়ালিটিক্যাপচার। ওপেন সোর্স সফটওয়্যার ব্লেন্ডারে থ্রিডি মডেল বানানোর জন্য আমরা কাজ করেছি লন্ডন ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফরেনসিক আর্কিটেকচারের সঙ্গে।
ঘটনার দিনের ফুটেজ দেখে, ড্রোনে ধরা পড়েনি এমন এলাকার একটি বিস্তারিত স্কেচ তৈরি করে নিয়েছিলাম আমরা। এরপর জায়গামতো বসিয়েছি স্নাইপার, সেনাবাহিনীর গাড়ি, বেষ্টনী, তার সামনে বসানো কাঁটাতার…। সেই মডেল এতটাই নিখুঁত হয়েছিল যে, আমরা বেষ্টনী অথবা টাওয়ার অথবা ঘেষো ভূমির মত একেকটি বস্তুর অবস্থান হিসাব করে, তার সাপেক্ষে কোথায় কোন ক্যামেরা ছিল তা-ও বের করতে পেরেছিলাম। এরপর সেই মডেলে আমরা ক্যামেরাগুলোকেও সারি বেঁধে বসিয়ে নিয়েছিলাম।
কল্পনা করুন – আমরা ক্যামেরাগুলোর গতিবিধি নতুন করে দেখতে পারছি, ছয়টা ভিন্ন ভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে যখন গুলির শব্দ আসছে, ঠিক এমন গুরুত্বপূর্ণ কোনো মুহূর্তে দৃশ্যটাকে স্থির করে রাখছি। এরকম একটা অবস্থা আমাদের সব কিছু বিশ্লেষণ করার সুযোগ দিয়েছে। আমরা বুঝতে পারছিলাম কে কোথায় ছিল। এর জোরেই আমরা সেই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলো রাখতে পেরেছি: এই গুলি চালানোটা কি বৈধ ছিল? সেখানকার সহিংস বিক্ষোভ কি সীমানাপ্রাচীরের ওপারে থাকা ইজরায়েলী মানুষদের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছিল? আমাদের উপসংহার ছিল: না, তেমনটা ছিল না। আইন বিশেষজ্ঞদের সাথেও আমরা কথা বলেছি, জানতে চেয়েছি এটি যুদ্ধাপরাধ ছিল কিনা। ঘটনাটি কী, কখন ও কীভাবে ঘটেছিল – তা গভীরভাবে দেখার সুযোগ করে দেয় এই থ্রিডি মডেল। ফলে, আমরা যখন ইজরায়েলি কর্তৃপক্ষের সাক্ষাৎকার নিতে যাই, তখন আমাদের কাছে খুব সুনির্দিষ্ট তথ্য ছিল। তারা সেই সময়ের ঘটনা নিয়ে যা বলেছেন, তার সাথে আমরা বাস্তবতা মিলিয়ে দেখতে পেরেছি, আর শেষপর্যন্ত উপস্থাপন করেছি, সত্যিই কী ঘটেছিল।
স্যাম ডেস্ক
সংবাদ বা কনটেন্ট সংগ্রহের জন্য যে টুলটি আমরা বেশি ব্যবহার করি, তার নাম: স্যাম ডেস্ক। এর সাহায্যে নির্দিষ্ট কীওয়ার্ড দিয়ে একই সঙ্গে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে খোঁজাখুঁজি করতে পারবেন। ফিল্টার ব্যবহার করতে পারবেন ভিডিও, ছবি বা টেক্সটের জন্য। কোন ধরনের জিনিস খুঁজছেন তার ওপর নির্ভর করে এই ফিল্টার চালু বা বন্ধও করতে পারবেন। আমরা প্রায়ই খুঁজতাম ভিডিও কনটেন্ট। এই কাজে জায়গার নাম, হ্যাশট্যাগ বা নির্দিষ্ট সার্চ টার্ম ব্যবহার করতাম। এটি অনেকটা টুইটডেকের মতো — সার্চের ফলাফল আসে একেকটা কলামে, ফলে সহজেই সবকিছু নজরে রাখা যায়।
কোনো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখার জন্যও এই টুল খুব কাজের। যেমন, সুদান বা ভেনেজুয়েলার বিক্ষোভের সময় কিছু নির্দিষ্ট হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা হয়েছে। এরকম ঘটনার ক্ষেত্রে আপনি হ্যাশট্যাগ দিয়ে সারা দিন তার খোঁজখবর রাখতে পারবেন। এই সার্চ রেজাল্ট থেকে টুইট, ভিডিও বা যে কোনো কনটেন্ট এক জায়গায় সংগ্রহ করে রাখতে পারবেন, আর সেগুলো নিয়ে পরে কাজ করতে পারবেন। জিনিসগুলো যাচাই করা হয়েছে কী হয়নি – ‘প্রচারযোগ্য’ জাতীয় ট্যাগ বসিয়ে তা-ও বাছাই করে রাখতে পারবেন। দলের অন্য সদস্যরা এখানে নোট লিখে রাখতে পারবেন। এটি প্ল্যাটফর্ম অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিও ফুটেজও সংরক্ষণ করে রাখতে পারে। ফলে কখনো সেটা অনলাইন থেকে সরিয়ে নেওয়া হলেও, আপনি ঠিকই দেখতে পাবেন।
“এখানে আপনি কনটেন্ট খুঁজতে পারবেন জায়গা ধরে ধরে। যেমন, হামবুর্গের ওপর একটা পিন বসিয়ে, তার চারপাশে একটা বৃত্ত এঁকে বলবেন, ‘এই অঞ্চল ট্যাগ করা আছে এমন সবকিছু পেতে চাই।’ এটি দিয়ে স্ন্যাপচ্যাটেও সার্চ করা যায়, আর স্ন্যাপচ্যাটের প্রায় সব স্ন্যাপেই জিওলোকেশন দেওয়া থাকে, যা এই টুলকে আরো কার্যকর করে তোলে।”
এক্সিফ ডেটা ভিউয়ারস
“অনেক ধরনের এক্সিফ ডেটা ভিউয়ার পাওয়া যায়। এক্সিফ ডেটা হচ্ছে ছবির নেপথ্যের তথ্য। যেমন, একটি ভিডিও বা ছবি যে সময়ে তোলা হয়েছে, তার ঘন্টা-মিনিট-সেকেন্ড। ডিভাইসের ওপর নির্ভর করে মাঝেমধ্যে এখানে জিপিএস ডেটাও থাকে। এক্সিফ ডেটা ভিউয়ার ব্যবহার করে আমরা এই তথ্যগুলো সংগ্রহ করি, যা পরে আমাদের তথ্য যাচাই প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে।
এক্সিফ ডেটা অবশ্য উল্টাপাল্টাও করা যায়, ফলে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে। যেমন, আমি ইচ্ছাকৃতভাবে সেটিংস বদলে রাখতে পারি। একারণে আপনি কখনোই একটামাত্র প্রমাণের ওপর ভরসা করতে পারবেন না। এটা প্রথাগত রিপোর্টিংয়ের মতোই ব্যাপার: আপনার দ্বিতীয় সোর্স কী, তৃতীয় সোর্স কী, চতুর্থ সোর্স কী? আমরা সব সময় বিভিন্ন তথ্য মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করি।
আমি নিজে অবশ্য কখনো এধরনের ইচ্ছাকৃতভাবে সেটিংস বদলে দেওয়ার মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি। আমি পেয়েছি, ক্যামেরা সেটিংসে অসাবধানতাবশত ভুল। তাই আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে। কিন্তু এক্সিফ ডেটা বেশ কাজের। বিশেষভাবে যখন কোনো ইভেন্টে আপনি নিজে ছিলেন না, কিন্তু সেখানকার অনেক ফুটেজ পেয়েছেন, আর তার একটি টাইমলাইন বানাতে চান, সেখানে কী হয়েছিল বোঝার জন্য। যেমন, আপনার জানা দরকার, কোনো ঘটনায় ঠিক কখন এবং কেন সহিংসতা শুরু হল। তখন একে একে সব তথ্যপ্রমাণ সাজাতে হয়। এক্সিফ ভিউয়ার এমন কাজের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ টুল।
মন্তাজ
মন্তাজ একটা বিশেষায়িত ইউটিউব সার্চ টুল। এখানে আপনি তারিখ ও স্থান ধরে ধরে সার্চ করতে পারবেন। যদিও ইউটিউবে জিওট্যাগ করা ভিডিও খুব বেশি নেই। এটি অনেকটা স্যাম ডেস্কের মতোই। যে ভিডিও নিয়ে কাজ করছেন তাকে প্রজেক্টে এনে, সেখানে নির্দিষ্ট মুহূর্ত ধরে কমেন্ট এবং ট্যাগ বসাতে পারবেন। এভাবে ইউটিউবের কনটেন্ট গুছিয়ে নিয়ে, সবাই মিলে তা দেখতেও পারবেন। আরব বসন্তের মতো ঐতিহাসিক বিষয় নিয়ে অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে এই টুল বেশ কাজে দেয়। আরব বসন্ত নিয়ে ইউটিউবে প্রচুর ভিডিও আছে।
“আর্কাইভাল রেফারেন্স ম্যাটেরিয়াল খুঁজে পাওয়ার জন্যও এটি বেশ উপকারী। যেমন, আমাদের হয়তো কোনো বিমান হামলার স্থান যাচাই করতে হবে – গুগল স্ট্রিট ভিউ বা গুগল আর্থের স্যাটেলাইট ইমেজ দিয়ে। কিন্তু, কোথাও কোথাও স্ট্রিট ভিউ পাওয়া যায় না, স্যাটেলাইট ইমেজও তেমন ভালো থাকে না। কিন্তু সেই জায়গা চেনা-জানা হলে, তার ইউটিউব ভিডিও থাকার সম্ভাবনা বেশি। এমন ক্ষেত্রেও আমরা এই টুল ব্যবহার করতে পারি।”
ইনভিড
“শেষ পরামর্শ: আরেকটি টুল আমি প্রায়ই ব্যবহার করি। ইনভিড ক্রোম এক্সটেনশন। এটি দিয়ে ইউটিউব ভিডিও-র আপলোড টাইম দেখা যায়, টুইটারে বিশেষায়িত সার্চ করা যায়, রিভার্স ইমেজ সার্চ করা যায়, ভিডিও কিফ্রেম বা থাম্বনেইল সার্চ করা যায় এবং মেটাডেটা খোঁজা যায়।”
গেইল ফোর জিআইজেএন-এর সহযোগী সম্পাদক। তিনি এর আগে ফ্রান্স ২৪ চ্যানেলে সামাজিক মাধ্যম থেকে খবর সংগ্রহ এবং তা যাচাইয়ের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি নিউজ ডিপলির সম্পাদক ছিলেন এবং টাইম ম্যাগাজিনে লিখেছেন।