কয়েকটি বড় বার্তাকক্ষ এবং সংবাদ সংস্থা কিছু দিনের জন্য খেলাধুলা, আবহাওয়া, শেয়ারবাজারের গতিবিধি এবং করপোরেট পারফরম্যান্সের মতো খবরাখবর তৈরির ভার কম্পিউটারের হাতে ছেড়ে দিয়েছিল। অবাক করা বিষয় হলো, যথার্থতা ও ব্যাপকতার বিচারে মেশিন, কিছু সাংবাদিকের চেয়ে ভালো কাজ করেছে। অনেক সাংবাদিক যেসব ক্ষেত্রে প্রায়ই একটি মাত্র উৎসের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন তৈরি করেন, সেখানে সফটওয়্যার বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য খুঁজে এনে, সেই তথ্যের ধরন ও প্রবণতা বুঝে, ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং ব্যবহার করে সেই প্রবণতাকে প্রাসঙ্গিকতার সঙ্গে মিলিয়ে – বিশেষণ, উপাধি ও রূপকসহ আধুনিক বাক্য গঠন করতে পারে। রোবটও এখন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি ফুটবল ম্যাচে গ্যালারি ভরা দর্শকের আবেগ নিয়ে প্রাণবন্ত রিপোর্ট করতে সক্ষম।
এ কারণে সাংবাদিকতা পেশার অনেকেই মনে করেন, এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একদিন তাদের চাকরির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। অথচ, ভয় পাওয়ার পরিবর্তে, সাংবাদিকরা যদি এআইকে আলিঙ্গন করেন, ক্রমশ জটিল, বৈশ্বিক এবং তথ্য-ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠা এই বিশ্বকে আরো ভালোভাবে কভার করার ক্ষেত্রে, এটি বরং তাদের জন্য আশীর্বাদ হতে পারে।
সাংবাদিকদের রিপোর্টিং, সৃজনশীলতা এবং পাঠক টানার ক্ষমতায় বাড়তি শক্তি জোগাতে পারে বুদ্ধিমান মেশিন। ডেটার ধরন বোঝা এবং সময়ের সঙ্গে তার গতিপ্রকৃতি কেমন হবে, তা ‘শেখার’ ক্ষমতা রয়েছে অ্যালগরিদমের। আর এই ক্ষমতা অভাবনীয় গতিতে কনটেন্ট তৈরি, সাজানো এবং বাছাইয়ে সহায়তা করে সাংবাদিকদের। শুধু তথ্যকে সাজিয়ে এটি খুঁজে দিতে পারে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মিসিং লিংক বা অজানা যোগসূত্র। এআই যেমন সহজে তথ্যের ট্রেন্ড শনাক্ত করে, তেমনি লাখ লাখ ডেটা থেকে চিহ্নিত করতে পারে ঠিক আসল জায়গাটিকে। আর এভাবেই এটি জন্ম দিতে পারে একটি দুর্দান্ত স্কুপের। ধরা যাক, কোনো সংবাদমাধ্যম সরকারি কেনাকাটার সব তথ্য ক্রমাগত একটি অ্যালগরিদমে যুক্ত করছে। সেই অ্যালগরিদম যদি সংশ্লিষ্ট কোম্পানির দেওয়া তথ্যের সঙ্গে সরকারি হিসাব মিলিয়ে দেখতে পারে, তাহলে যে-কোনো দেশের সাংবাদিকই সরকারি ক্রয়ে কোথায় দুর্নীতি হচ্ছে সে সম্পর্কে অনেক সূত্র পেতে পারেন।
বুদ্ধিমান কম্পিউটার যে শুধু প্রচুর ডেটা বিশ্লেষণ করতে পারে, তা নয়। এটি অনেক মানুষের ভিড় থেকে তথ্য সংগ্রহ এবং তার সত্যতাও যাচাই করতে পরে। টাউ সেন্টার রিপোর্ট ২০১৭ অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি মিডিয়া আউটলেট ইতিমধ্যেই এআইয়ের মাধ্যমে ফ্যাক্ট চেক বা সত্যতা যাচাই করছে। যেমন, রয়টার্স। সামাজিক মাধ্যমে ব্রেকিং নিউজ ট্র্যাক করতে এবং টুইটের সত্যতা যাচাই করতে তারা নিউজ ট্রেসার ব্যবহার করছে। ব্রাজিলের সাংবাদিক ও প্রযুক্তি উৎসাহীদের দল সেরেনাতা দে আমোর, সে দেশের সংসদ সদস্যরা খরচের বিপরীতে পাওনা দাবি করে কত টাকা তুলে নিচ্ছেন, তা ট্র্যাক করছে রোজি নামের একটি রোবটের মাধ্যমে। কোন খরচ সন্দেহজনক এবং কেন, এমন বিষয়ও তুলে আনছে রোজি।
এমন আরো অনেক জায়গা আছে যেখানে অ্যালগরিদম সাংবাদিকদের কাজে আসে : যেমন – ভিডিওর রাফ-কাট, কণ্ঠ এবং ভিড় থেকে মানুষের চেহারা শনাক্ত করা। একইভাবে পাঠকদের সঙ্গে আলাপ বা তাদের প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্যও প্রোগ্রাম (চ্যাটবট) ব্যবহার করা যেতে পারে। এই প্রক্রিয়াটি ডেটাকে প্রশ্ন করতে পারে, এমন একজন ‘মানুষ’ সাংবাদিকের উপস্থিতি ছাড়া সম্ভব নয়। তাই রিপোর্টার এবং সম্পাদকদের দ্রুত জানতে হবে এই সিস্টেমগুলো কীভাবে চলে এবং এদেরকে সাংবাদিকতার মান বাড়ানোয় কীভাবে কাজে লাগানো যাবে।
বিশ্বের বেশিরভাগ সাংবাদিকের ডেটাভিত্তিক প্রকল্প তৈরির জন্য প্রোগ্রামার বা বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়ার সুযোগ নেই। এর একমাত্র সমাধান ’কোলাবরেশন’ বা পারস্পরিক সহযোগিতা। ছোট সংবাদপত্র এবং ফ্রিল্যান্সাররা এই ঘাটতি মেটাতে সফটওয়্যার ডেভেলপারদের সহযোগিতা নিতে পারেন। তাঁরা ওপেন সোর্স-ভিত্তিক অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণী টুলগুলোও খুঁজে দেখতে পারেন।
সাংবাদিক ও প্রযুক্তিবিদদের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে তোলা খুব সহজ নয়। উভয় পক্ষেরই একে অপর থেকে শেখা প্রয়োজন। চলমান প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কারণে সাংবাদিকদের হাতে এখন এমন অনেক উপকরণ এসেছে, যা দিয়ে তাঁরা ক্ষমতাধরদের জবাবদিহির আওতায় আনতে পারেন । আর বাড়তে থাকা এই ক্ষমতাকে ঠিকমতো ব্যবহার না করার মানে সুযোগের বড় ধরনের অপচয় ।
নৈতিক চ্যালেঞ্জ
সাংবাদিকতা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে লিখতে গিয়ে দ্য গার্ডিয়ান-এর রিডার্স এডিটর, পল চ্যাডউইক, পত্রিকার কোড অব এথিকসে এই বিষয়ে একটি নতুন ধারা সংযোজনের প্রস্তাব করেছেন। তার মতে ‘চিন্তা করতে সক্ষম এমন সফটওয়্যারের প্রয়োজন দিনে দিনে বাড়ছে, কিন্তু তার মানে এই নয় এটি নৈতিকতা মেনে তথ্য সংগ্রহ বা প্রক্রিয়া করতে পারে।’ তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘সাংবাদিকতার পরিধি বাড়াতে গিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করার সময় ভেবে দেখবেন, আপনার নৈতিকতার মানদণ্ডের সঙ্গে সেটি কতটা খাপ খায়।’
সাংবাদিকদের সতর্ক থাকতে হবে, কারণ অ্যালগরিদম মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকরও হতে পারে। কারণ তারা মানুষের তৈরি প্রোগ্রাম, আর মানুষের মধ্যে পক্ষপাত আছে। অনেক সময় লজিক্যাল প্যাটার্নও ভুল উপসংহারে পৌঁছাতে পারে। এর মানে, সাংবাদিকদেরকে সব সময় এআই থেকে আসা ফলাফল পরীক্ষা করে দেখতে হবে – সন্দেহ করা, ক্রস চেক এবং এক নথির সঙ্গে আরেকটি মেলানোর মতো শতাব্দী-পুরোনো যাচাই-কৌশলের মাধ্যমে।
যান্ত্রিক বুদ্ধিমত্তার এই নতুন যুগে সাংবাদিকতার জন্য আরেকটি আবশ্যক জায়গা হলো – স্বচ্ছতা। কলম্বিয়া জার্নালিজম রিভিউর ডিজিটাল সম্পাদক, নুসিকা রেনার বলেছেন, ‘বার্তাকক্ষে এআই ব্যবহারের পথে সবচেয়ে বড় বাধা, স্বচ্ছতা। এটি সাংবাদিকতার সেই মৌলিক মূল্যবোধ, যার সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিরোধ আছে, কারণ এআই সাধারণত কাজ করে পর্দার আড়াল থেকে।’
এরপরেই আছে বিশ্বাসযোগ্যতা। যদিও শক্তিশালী প্রযুক্তির কল্যাণে এখন পাঠকের চাহিদা নিখুঁতভাবে জানা যাচ্ছে, তারপরও বিশ্বাসযোগ্যতার স্বার্থে গণমাধ্যমকে জানাতে হবে, তারা গ্রাহকের কোন ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করছে আর কোনটি করছে না। কারণ এখনো সংবাদমাধ্যমের ব্যবসা এবং এর বেঁচে থাকার চাবিকাঠি হলো জনস্বার্থ ।
একইভাবে, অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের ব্যাখ্যা করতে হবে, কীভাবে তারা অ্যালগরিদম ব্যবহার করে প্রতিবেদনের জন্য প্যাটার্ন বা প্রমাণ সংগ্রহ করেছে। বাণিজ্যিক বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য যারা গোপনে তথ্য সংগ্রহ করে, তাদের চেয়ে আলাদা হবার একমাত্র উপায় এটাই। তদুপরি, ভালো সাংবাদিকতার কাজই হলো চাপা পড়ে যাওয়া সেইসব কণ্ঠস্বর এবং অজানা বিষয়কে সামনে নিয়ে আসা, যেসব তথ্য নিয়ে এখনো কোনো ডেটাসেট তৈরি হয়নি।
শেষ পর্যন্ত, এআই সাংবাদিকতার সক্ষমতা বাড়াচ্ছে এটা যেমন সত্য, তেমনি মানুষকে জানা এবং তাদের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রশ্নে এটি নতুন চ্যালেঞ্জ জন্ম দিয়েছে। সাংবাদিকসুলভ স্পষ্টতা না থাকলে এই প্রযুক্তি দিয়ে তথ্যনির্ভর সমাজ গড়া অধরাই থেকে যাবে। এই বুদ্ধিমান প্রযুক্তি সাংবাদিকতার মৃত্যু ডেকে আনবে, যদি তার ব্যবহারে নৈতিকতা না থাকে। আপনি যতই চার্ট বা বট ব্যবহার করে সাজান না কেন, সাংবাদিকতা মানুষের আস্থা হারাবে, যদি না উদ্দেশ্য হয় পরিষ্কার, প্রক্রিয়া হয় স্বচ্ছ আর তার দিকনির্দেশে থাকে জনস্বার্থ।
সাংবাদিকতায় এআই ব্যবহারের উদাহরণ
অটোমেটেড সাংবাদিকতা : ডেটা থেকে স্টোরি তৈরি । এটি মূলত খেলাধুলা এবং আর্থিক খাতের রিপোর্ট করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটা সাংবাদিকদের রুটিন বা গৎবাঁধা কাজ থেকে মুক্ত রাখে, দক্ষতা বাড়ায় এবং খরচ কমায়। বার্তাসংস্থা এপি আর্থিক ডেটাকে প্রতিবেদনে রূপান্তরিত করতে ওয়ার্ডস্মিথ নামের একটি সফটওয়্যার ব্যবহার করে । ওয়াশিংটন পোস্ট খেলাধুলা এবং নির্বাচনী রিপোর্টিং-এর জন্য নিজেদের তৈরি প্রযুক্তি হেলিওগ্রাফ ব্যবহার করছে।
ওয়ার্কফ্লো সাজানো : ব্রেকিং নিউজ ট্র্যাকিং, ট্যাগ এবং লিংক ব্যবহার করে খবর সংগ্রহ ও সাজানো, মন্তব্যগুলো মডারেট করা এবং কণ্ঠ থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনুলিপি তৈরি। নিউ ইয়র্ক টাইমস পাঠকের মতামত মডারেশনের জন্য জিগ্স-এর (অ্যালফাবেট, গুগলের প্যারেন্ট কোম্পানি) তৈরি পারসপেকটিভ এপিআই টুল ব্যবহার করে। সাংবাদিকদের জন্য রয়টার্স কানেক্ট নামের প্ল্যাটফরমটি রয়টার্সের সকল কনটেন্ট, আর্কাইভ, এমনকি তাদের বিশ্বজোড়া পার্টনারদের পাঠানো কনটেন্টও রিয়েল টাইমে প্রদর্শন করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর অনুসরণ : হালনাগাদ এবং ঐতিহাসিক ডেটা বিশ্লেষণের মাধ্যমে ইনফ্লুয়েন্সারদের (প্রভাবিত করতে পারে এমন) শনাক্ত করা এবং দর্শকদের যুক্ত করা। এপি সোশ্যাল মিডিয়া ট্রেন্ড পর্যবেক্ষণ এবং এনগেজমেন্ট বাড়াতে নিউজহুইপ ব্যবহার করে।
দর্শকদের সঙ্গে যুক্ত হওয়া : কোয়ার্টজ বট স্টুডিওর চ্যাটবট অ্যাপ্লিকেশনটি তার ব্যবহারকারীদেরকে ঘটনা, ব্যক্তি, বা স্থান সম্পর্কে প্রশ্ন পাঠানোর সুযোগ দেয় এবং সেটি প্রাসঙ্গিক কনটেন্টসহ জবাবও পাঠায় প্রশ্নকর্তাকে। গার্ডিয়ান-এর মতো অনেকেই ফেসবুক মেসেঞ্জারের জন্য বট ব্যবহার করে। বিবিসি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের গণভোট কভারের জন্য বট ব্যবহার করেছিল। ইউরোপিয়ান জার্নালিজম সেন্টার এবং দ্য সোর্স (নামিবিয়া ও জিম্বাবুয়ে) এর ’ইনোভেট আফ্রিকা’ অনুদান বিজয়ী আফ্রিবট প্রকল্পটি ‘আফ্রিকান সংবাদ সংস্থাগুলোকে নিজস্ব চাহিদা অনুযায়ী (পার্সোনালাইজড) সংবাদ প্রদান এবং মেসেজিং প্ল্যাটফরম ব্যবহার করে পাঠকদের সঙ্গে আরো কার্যকরভাবে যুক্ত হওয়ার’ সুযোগ করে দিতে একটি ওপেন সোর্স নিউজবট তৈরি করছে।
স্বয়ংক্রিয় তথ্য যাচাই : এর মাধ্যমে কোনো বিবৃতি বা দাবিকে দ্রুততার সঙ্গে যাচাই করা যায়। আর্জেন্টিনার তথ্য যাচাই প্রতিষ্ঠান চেকেডো এজন্য ব্যবহার করে চেকেবোট। ফুল ফ্যাক্ট ইউকে এবং তার পার্টনাররা একটি স্বয়ংক্রিয় ফ্যাক্ট-চেক ইঞ্জিন তৈরি করছে, যা ‘এরই মধ্যে যাচাই হয়ে যাওয়া দাবি চিহ্নিত করবে এবং ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং ও সুবিন্যস্ত ডেটা ব্যবহার করে যেসব দাবি এখনো যাচাই হয়নি সেগুলো শনাক্ত ও যাচাই করবে ’। আমেরিকার ডিউক রিপোর্টার্স ল্যাব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ দাবিগুলোকে যাচাইয়ের জন্য গণমাধ্যমে পাঠাতে ক্লেইমবাস্টার নামের একটি টুল তৈরি করেছে। ২০১৭ সালে স্বয়ংক্রিয় ফ্যাক্টচেক প্রকল্পগুলোর জন্য একটি হাবও চালু করে তারা। যুক্তরাষ্ট্রে ফ্যাক্টম্যাটা তৈরি করেছে একটি অটোমেটেড ফ্যাক্টচেক টুল। এখানে আরো জানতে পারেন স্বয়ংক্রিয় তথ্য যাচাই সম্পর্কে।
বড় ডেটাবেস বিশ্লেষণ : তথ্য সংগ্রহ থেকে শুরু করে কোনো পরিবর্তন, প্যাটার্ন বা অস্বাভাবিকতা অনুসন্ধান করে সফটওয়্যার। রয়টার্সের লিংকস ইনসাইট বড় আকারের ডেটাসেটে গিয়ে সেখান থেকে ফলাফল এবং ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা সরবরাহ করে সাংবাদিকদের। ওসিসিআরপির ক্রাইম প্যাটার্ন রিকগনিশন দলিলপত্রের বড় ডেটাবেস থেকে কোনো নির্দিষ্ট ধরনের দুর্নীতির তথ্য এবং এর সঙ্গে যারা জড়িত তাদের মধ্যকার সংযোগও বিশ্লেষণ করতে পারে।
ইমেজ রিকগনিশন : যে প্রযুক্তি ছবি থেকে বস্তু, এলাকা, মানুষের মুখ, এমনকি অনুভূতিকেও শনাক্ত করতে পারে। নিউ ইয়র্ক টাইমস ছবি থেকে কংগ্রেস সদস্যদের শনাক্ত করতে আমাজন-এর রিকগনিশন API ব্যবহার করে। যে-কোনো ব্যবহারকারী বিনামূল্যে Google-এর ভিশন API ইমেজ রিকগনিশন প্রযুক্তি পরীক্ষা করতে পারেন।
ভিডিও তৈরি : স্বয়ংক্রিয়ভাবে খবর থেকে স্ক্রিপ্ট এবং ফুটেজ থেকে ছোট ছোট টুকরো কেটে ধারাবর্ণনাসহ ভিডিওর রাফ-কাট তৈরি করা। এই কাজে ইউএসএ টুডে, ব্লুমবার্গ এবং এনবিসি ব্যবহার করে উইববিটজ নামের একটি সফটওয়্যার। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরাও একটি স্বয়ংক্রিয় ভিডিও সম্পাদনা টুল তৈরি করছেন।
লেখাটি প্রথম প্রকাশিত হয় ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনের স্বাধীন সাংবাদিকতা প্রোগ্রামের অক্টোবর ২০১৮ নিউজলেটারে। অনুমতি নিয়ে এখানে পুনঃপ্রকাশ করা হয়েছে। দ্রষ্টব্য: ওএসএফ জিআইজেএন-এর অন্যতম অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান।
মারিয়া তেরেসা রন্দেরোস, ওএসএফ স্বাধীন সাংবাদিকতা প্রোগ্রামের পরিচালক। প্রকল্পটি মূলত, উদীয়মান গণতন্ত্রের দেশে কার্যকর ও মানসম্পন্ন গণমাধ্যম এগিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা তত্ত্বাবধান করে। রন্ডেরস, কলম্বিয়ার শীর্ষস্থানীয় সংবাদ সাময়িকী সেমানা থেকে ওএসএফে যোগ দেন।